Thursday, April 30, 2015

সহবাস বা মিলনকালে পুরুষরা আত্মবিশ্বাস বাড়াবেন যে ভাবে

সহবাস বা মিলনকালে পুরুষরা আত্মবিশ্বাস বাড়াবেন যে ভাবে
অনেক সময়ই দেখা যায় স্ত্রীকে সামনে পেয়ে মিলনকালে কনফিডেন্স হারিয়ে ফেলেন কিছু কিছু পুরুষ। এমনকী, যে নারীর কথা উত্তেজিত হন পুরুষেরা, অনেক সময় দেখা যায় তাঁকে একান্তে পেয়েও হতাশা-দ্বিধায় ভোগেন পুরুষেরা। কারণ, প্রথমত তিনি একটা বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেন না, যে তাঁর সঙ্গিনীকে সুখী করতে পারবেন কী না। ঘাবড়াবেন না। আপনার কনফিডেন্স বাড়ানোর জন্য রইল কিছু টিপস।

  • আপনার সঙ্গিনী কিন্তু আপনার চেয়েও বেশি কল্পনাপ্রবণ। তিনি আপনার সঙ্গে মিলনের আগে বহুবার সে কথা তিনি মনে মনে ভেবে ফেলেছেন। আপনার সঙ্গে শয্যায় সে সবের পুনরাবৃত্তি করছেন মাত্র।
  • শুধু ফোরপ্লে করে থেমে যাবেন না। কারণ, এতে আপনার স্ত্রী বা সঙ্গিনী হতাশ হতে পারেন। কাজের চাপ থাকবেই, কিন্তু নিজের সঙ্গিনীকে আপনি কতটা ভালবাসেন তা চেপে রাখবেন কেন?
  • অযথা হতাশ হবেন না। দ্বিধায় ভুগবেন না। বিদেশি পর্ন ফিল্মের ক্যারেক্টার নন আপনি। একজন বাংলাদেশী পুরুষ। আপনার যৌন ক্ষমতাও আর পাঁচটা পুরুষের মতই। সঙ্গিনীকে একান্তে পেলে এটা মাথায় রাখবেন।
  • নিজের বাহ্যিক যৌন্দর্যে মন দিন। সিনেমায় যতই দেখাক, একগাল খোঁচাখোঁচা দাড়ি দেখে নায়িকারা ছুটে আসছেন, বাস্তবে অনেকসময়ই তা হয় না। বিশেষত শয্যায় আপনার স্ত্রী মোটেও পছন্দ করবেন না কোনও গভীর মুহূর্তে আপনার গালের ধারালো দাড়িতে আঘাত পেতে। রাতে আগে ব্রাশ করতে ভুলবেন না যেন।
  • রতিক্রিয়ার সময় অন্য কথা মনে আনবেন না। কারণ, মুখ হল মনের আয়না। আপনার মন অন্য কিছু ভাবছে, এরকমটা হলে আপনি মুখে তা প্রকাশ পাবেই।
  • মিলনের প্রাক মুহূর্তে এমন কিছু করবেন না যা আপনাকে ও আপনার স্ত্রী-সঙ্গিনীকে অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। আপনি সবরকম শৃঙ্গারে অভ্যস্ত না হতেই পারেন। সেটা আপনার স্ত্রী-সঙ্গীকে বোঝান। তিনি নিশ্চয় বুঝবেন।
  • গভীর মুহুর্তে আপনার স্ত্রী হঠাৎ থেমে যেতে পারেন এই আশঙ্কা করবেন না। তাহলে কিন্তু আপনি মোটেও স্বাচ্ছন্দ্য হতে পারবেন না।
আপনার স্ত্রী বা সঙ্গিনী অন্য গ্রহের প্রানী নন। প্রথমবার মিলনের আগে ভয় পাবেন না। তিনিও আপনার মতই মানসিক অবস্থায় রয়েছেন। আবার দু-পক্ষই যেন একে অপরকে বোকা ভাববেন না। পুরুষ বা মহিলা-কোনওপক্ষই যেন এটা ভেবে না নেন, যে অপর প্রান্তের মানুষটাকে আমি সহজেই বোকা বানাতে পারি।

Labels: ,

তরুণদের যৌন সচেতনতা

কলেজ, ইউনিভার্সিটি লেবেলের পাঠ্যসূচিতে যৌনরোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যাতে প্রতিটি যুবক-যুবতী এ রোগগুলোর ভয়াবহতা সম্পর্কে নূ্যনতম জ্ঞান লাভে সক্ষম হয়।

বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর যে সংখ্যক লোক এ যৌনরোগে আক্রান্ত হয় তার সংখ্যা আনুমানিকভাবে ২৫ কোটি। তার মধ্যে একমাত্র গনোরিয়ায়ই আক্রান্ত হয় সাড়ে ৬ কোটিরও বেশি। বলা হয় ২ কোটিরও বেশি যুবক যুবতী বর্তমান বিশ্বে এইডস ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর অপেক্ষায় দিন গুনছেন। কিছুদিন আগের এক পরিসংখ্যানে দেখা যেছে যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতিবছর সিফিলিসে আক্রান্ত হয় প্রায় ১০ লাখ নর-নারী। তাই এই যৌনরোগ প্রতিরোধকল্পে সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করতেই হবে। লিখেছেন ডা. দিদারুল আহসান। 
বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর যে পরিমাণ লোক এ যৌনরোগে আক্রান্ত হয় তার পরিমাণ আনুমানিকভাবে ২৫ কোটি। তার মধ্যে একমাত্র গনোরিয়ায়ই আক্রান্ত হয় সাড়ে ৬ কোটিরও বেশি। বলা হয় ২ কোটিরও বেশি যুবক যুবতী বর্তমান বিশ্বে এইডস ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর অপেক্ষায় দিন গুনছেন। কিছুদিন আগের এক পরিসংখ্যানে দেখা যেছে যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতিবছর সিফিলিসে আক্রান্ত হয় প্রায় ১০ লাখ নর-নারী। তাই এই যৌনরোগ প্রতিরোধকল্পে সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করতেই হবে। আর যৌনরোগ মানে সিফিলিস, গনোরিয়া কিংবা এইডস তা কিন্তু নয়।
প্রায় ২৫টির মতো রোগ আছে যা যৌনপথে বিস্তার লাভ করে। তার মধ্যে এইডস ছাড়াও হেপাটাইটিস বি-এর মতো মারাত্মক রোগও অন্তর্ভুক্ত। যা কিছুদিন আগেও মানুষ মনে করত এটা কোনো সঙ্গমজনিত রোগই নয়। যৌনরোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসা নয় প্রতিরোধই হচ্ছে অন্যতম ব্যবস্থা। তাই সব যুবক যুবতীর মধ্যে এ শিক্ষা আমাদের পোঁছে দিতে হবে যে কী করে তারা নিজেদের রক্ষা করতে পারবে। আমাদের একটি কথা মনে রাখতেই হবে আমরা ঘৃণা করব রোগকে রোগীকে নয়। কিন্তু বস্তুত আমাদের দেশে হচ্ছে তার উল্টো। আমরা যৌনরোগ এবং যৌন রোগী উভয়কেই যেন ঘৃণার চোখে দেখি। তাই আসুন আমরা লক্ষ্য করি কী করে এ রোগের বিস্তার প্রতিরোধ করা যায়।
১. যুব সমাজের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে, তাদের জানতে দিতে হবে যে এগুলো প্রতিরোধযোগ্য রোগ এবং তাদের এও জানাতে হবে যে এ রোগে আক্রান্ত হলে তার মৃত্যুও হতে পারে।
২. কলেজ, ইউনিভার্সিটি লেবেলের পাঠ্যসূচিতে যৌনরোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যাতে প্রতিটি যুবক-যুবতী এ রোগগুলোর ভয়াবহতা সম্পর্কে নূ্যনতম জ্ঞান লাভে সক্ষম হয়।
৩. আক্রান্ত হলে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে থানা, উপজেলা, জেলা পর্যায়ে পেঁৗছে দিতে হবে যেন আক্রান্ত মানুষ ত্বরিত চিকিৎসার সুযোগ পায়।
৪. কেউ আক্রান্ত হলে তার সঙ্গী বা সঙ্গিনী উভয়েরই চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে এবং স্বামী-স্ত্রী হলেও উভয়ের ক্ষেত্রেই রোগ নির্ণয় এবং একই সঙ্গে চিকিৎসার ব্যবস্থা উভয়ের জন্যই করতে হবে। তা না হলে সাময়িকভাবে সুস্থ হলেও আবার স্বামীর থেকে স্ত্রী বা স্ত্রীর থেকে স্বামী আক্রান্ত হবেই। সঙ্গী সঙ্গিনীর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
৫. কনডম ব্যবহার করতে হবে। এবং কনডম ব্যবহারের সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিও বহুগামী লোকদের শেখাতে হবে এবং তাদের বহুগামীর পথ পরিত্যাগ করার জন্য উৎসাহিত করতে হবে।
৬. কনডম সব যৌনরোগ প্রতিরোধে সক্ষম নয় এ কথা জনগণকে জানাতে হবে। অনেকে মনে করেন কনডম ব্যবহার করলেই আর যৌনরোগ হতে পারবে না এ ধারণা নিয়ে যারা বহুগামিতায় বিশ্বাস করেন তাদের প্রতিহত করতে হবে এবং যৌনরোগের ভয়াবহতা সম্পর্কে তাদের জ্ঞান দিতে হবে।
৭. শিক্ষিত জনগণ যেন মাঝে মধ্যে তাদের জননেন্দ্রিয় পরীক্ষা করেন তা তাদের জানাতে ও শেখাতে হবে।
৮. বহু যৌনরোগ উপসর্গবিহীন অবস্থায় থাকতে পারে। যেমন গনোরিয়া মহিলাদের বেলায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উপসর্গবিহীন অবস্থায় থাকতে পারে। কাজেই উপসর্গ নাই তাই যৌনরোগ নাই এ কথা ভাবা ঠিক নয়। আবার সিফিলিসের ক্ষত চিকিৎসা না করালেও এমনিতেই কিছুদিন পর শুকিয়ে যায় তার মানে এই নয় যে সে রোগমুক্ত হয়ে গেছে। বস্তুত এ জীবাণু তার দেহে দীর্ঘস্থায়ী রূপ নিল এবং চিকিৎসা না হলে বিভিন্ন ধরনের জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে এমনকি তার জীবনও বিপন্ন হতে পারে।
৯. অপরের দাঁত মাজার ব্রাশ ও দাড়ি কাটার বেস্নড ব্যবহার করা উচিত নয়। সেভ কারার সময় কেটে যেতে পারে কিংবা দাঁত মাজার সময় দাঁত থেকে রক্ত বের হতে পারে এবং সেই রক্তে জীবাণু থাকতে পারে তা সহজেই অন্য ব্যবহারকারীর দেহে চলে যেতে পারে।
১০. এইডস বা যৌনরোগে আক্রান্ত ব্যক্তি সামাজিকতার ভয়ে চেপে যান, অনেকে মনে করেন এইডস হয়েছে জানলে চিকিৎসক পুলিশে খবর দিয়ে ধরিয়ে দিতে পারে সেই ভয়ে তারা এইডসের পরীক্ষা করাতেই চায় না। ধারণাটি আদৌ সত্য নয়।
১১. জাতীয় ও জেলা পর্যায়ে যৌনরোগ প্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে হবে এবং তার বিস্তার রোধে বলিষ্ঠ ভূমিকা নিতে হবে।
১২. রক্ত গ্রহণ বা প্রদানের আগে এইডস হেপাটাইটিস-বি, ও সিফিলিসের পরীক্ষা অবশ্যই করাতে হবে। এগুলো পাওয়া গেলে সে রক্ত অবশ্যই গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
১৩. শিরাপথে মাদকদ্রব্য গ্রহণকারীদের নিবৃত্ত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। আর তাদের যদি নিবৃত্ত করা না যায় তাহলে অন্তত তাদের এটুকু শেখাতে হবে যেন একই সুই তারা একাধিকবার ব্যবহার না করেন। করলে এইডস থেকে শুরু করে যে কোনো যৌনরোগ তার দেহে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সর্বোপরি ধর্মীয় চেতনা জাগ্রত করতে হবে এবং নৈতিকতার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। এ ক্ষেত্রে নিজ নিজ পিতামাতা তাদের সন্তানদের নৈতিকতার উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করতে পারেন।
 

সূত্রঃ যায় যায় দিন লিখকঃ ডা. দিদারুল আহসান।  চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগবিশেষজ্ঞ

Labels: , , , ,

মেয়েদের যৌন রোগ এবং এর প্রতিকার

মেয়েদের যৌন রোগ
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ১২ থেকে ২০ বছরের মেয়েদেরকে যুবতী বলা হয়। এই সময়ের মধ্যে মেয়েরা শারীরিক এবং মানসিক পূর্ণতা লাভ করে থাকে। যুবতী মেয়েদের সাধারণ যৌন রোগ সমস্যাগুলো হলো-
  • ঋতু স্রাব সমস্যা
  • সাদা স্রাব
  • তলপেট ও কোমরে ব্যথা
ঋতু স্রাব সমস্যাকে নিম্নের কয়েক ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা যেতে পারে।
  • একবারে মাসিক না হওয়া
  • অনিয়মিত মাসিক হওয়া
  • অতিরিক্ত রক্তস্রাব হওয়া

যেসব যুবতীর মাসিক নিয়মিত হয় বুঝতে হবে তাদের ডিমগুলো সময়মতো ফুটে থাকে। আমাদের দেশে শতকরা ৩০ থেকে ৪০ জন মহিলার নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে মাসিক আরম্ভ হয় না। আবার অনেক যুবতীর মাঝে মাঝে অথবা কখনো কখনো একটু আধটু রক্তস্রাবের মতো হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে প্রচুর স্রাব হয়ে থাকে।
এসব যুবতী ও তাদের মা, খালা এবং অন্যান্য মহিলা আত্মীয় অত্যন্ত দুশ্চিন্তায় থাকেন। চিকিৎসকেরা মনে করেন এর প্রধান কারণ হলো
  • অসচেতনতা
  • অজ্ঞতা
মাসিকের স্থায়িত্বকাল এবং পরিমাণ প্রকৃতপক্ষে কত তা জানা নেই বলেই এই চিন্তা আরো বেশি হয়। Physiology কারণ ছাড়া অন্যান্য কারণেও প্রচুর পরিমাণ রক্তস্রাব এবং দীর্ঘস্থায়ী স্রাব হতে পারে।
দীর্ঘস্থায়ী স্রাবের আরো কারণ হলো এর জরায়ুর মুখে মাংস বেড়ে যাওয়া, যোনিপথে প্রদাহ, ডিম্বের থলিতে টিউমার। এ ছাড়া যদি রক্তের মধ্যে কোনো রোগ থাকে যেমন হেমোফাইলিয়া, পারপুরা তাতেও বেশি স্রাব হতে পারে।
শতকরা ৪০ থেকে ৫০ জনের কোনো প্রকার চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না, কেবল উপদেশের মাধ্যমেই আরোগ্য লাভ করে থাকে। অন্যান্য ক্ষেত্রে উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে এর উপশম করা সম্ভব। কারণ যাই হোক না কেন যুবতী মেয়েদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
মাসিকের সময় তলপেট ব্যথা :
শতকরা প্রায় ৭০ থেকে ৮০ জন যুবতী মাসিক আরম্ভ হওয়ার আগে অথবা মাসিক চলাকালে তলপেট, কোমরে অথবা উরুতে ব্যথা অনুভব করে থাকে। এটা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে যাদের মাসিক আরম্ভ হওয়ার দু-তিন দিন আগে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করে তারা সাধারণত অ্যান্ডোমেট্রিওসিস, পেলভিক অ্যাডিহিসন, জরায়ুতে যক্ষ্মার জন্য হতে পারে। এই ধরনের যুবতীদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ এবং চিকিৎসা নেয়া প্রয়োজন।
হরমোনের তারতম্যের কারণে তলপেট ভারী অনুভব করা, শরীর ম্যাজ ম্যাজ করা, খাদ্যে অরুচি হওয়া, মাথাব্যথা করা, খিটখিটে মেজাজ, শরীর ব্যথা, এমনকি হাত পা ফুলে যাওয়া ইত্যাদি হতে পারে। এ জন্য কোনো প্রকার চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। কেবল চিকিৎসকের পরামর্শ এবং উপদেশ গ্রহণের মাধ্যমেই যুবতীরা উপশম থাকতে পারে।
সাদা স্রাব :
সাদা স্রাব যুবতীদের একটি স্বাভাবিক ঘটনা। এ জন্য মেয়েদের কোনো প্রকার দুশ্চিন্তার কারণ নেই, কোনো প্রকার কারণ ছাড়াই সাদা স্রাব হতে পারে এবং তবে মাসিক আরম্ভ হওয়ার দুচার দিন আগে এর পরিমাণ একটু বেশি হতে পারে। পুষ্টিহীনতা, যৌনাঙ্গে প্রদাহ, বেশি যৌন উত্তেজনা, হস্তমৈথুন, যৌন কার্যে অভ্যস্ত ইত্যাদির কারণে বেশি সাদা স্রাব হতে পারে।
এমনকি জরায়ুর মুখে মাংসপিণ্ড অথবা ঘা হলে সাদা স্রাবের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। কেবল নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণের মাধ্যমে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সুফল লাভ করা যায়।
মেয়েদের (যুবতী) তলপেট ব্যথা :
বেশি সংখ্যক যুবতী মেয়ে তলপেট ও কোমর ব্যথার কথা বলে থাকে। প্রকৃতপক্ষে এটা মানসিক অনুভূতি। তবে প্রচণ্ড ও অস্বাভাবিক ব্যথা হলে অবশ্যই এর কারণ নির্ণয় করে উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে। যেসব কারণে মারাত্মক ব্যথা হতে পারে তা হলো
  • Appendicitis (অ্যাপেন্ডিসাইসাটিস)
  • Ovarian Cyst (ডিমের ভেতর পানি জমে যাওয়া)
  • হঠাৎ প্রস্রাব বন্ধ হয়ে রক্ত জমে যাওয়া
  • মাসিকের রাস্তা বন্ধ হয়ে রক্ত জমে যাওয়া
  • ডিম্বনালী অথবা ডিম্বথলির ভেতরে গর্ভ লাভ করা
  • Cyst যদি হঠাৎ ফেটে যায় অথবা পেঁচিয়ে যায়
  • জরায়ুর ভেতর টিউমার হওয়া
  • যোনিপথে হারপিচ নামক এক প্রকার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়া।
এ ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে দ্রুত পরামর্শ নিতে হবে। না হলে জীবনের জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
আমাদের দেশে যুবতী মেয়েদের স্বাস্থ্য সমস্যা :
আমাদের দেশে যুবতী মেয়েদের সংখ্যা প্রায় এক-চতুর্থাংশ। যেহেতু মানসিক এবং শারীরিক পরিবর্তন ১২ থেকে ২০ বছরের মধ্যেই বেশি হয়ে থাকে তাই তাদের ক্ষেত্রে প্রজনন স্বাস্থ্য শিক্ষার প্রতি যথেষ্ট সচেতন হওয়া একান্ত প্রয়োজন। আমার মতে যুবতী মেয়েদের জন্য প্রজনন স্বাস্থ্য এবং শিক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে একটা পৃথক মন্ত্রণালয় অথবা দফতর তৈরির মাধ্যমে যুবতী মেয়েদেরকে সেবা প্রদান করা উচিত।

Labels: ,

PGAD- চিরস্থায়ী যৌন উত্তেজনার এক ভয়াবহ রোগ!

PGAD
যৌনতায় অরগ্যাজম বা রাগমোচন সব নারীরই একটি অতি কাম্য বিষয়। এটি ছাড়া যে কখনই যৌন পরিতৃপ্তি পাওয়া সম্ভব না তা কমবেশি সবারই জানা। অনেক নারীরই আবার এই অতৃপ্তির জন্য আক্ষেপের সীমা নেই। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নারীদের এই অতৃপ্তির কারণ হয় তাদের স্বামী বা পুরুষ সঙ্গীটি।

আমাদের উন্নয়নশীল দেশের রক্ষণশীল সমাজব্যাবস্থায় নারীর যৌনতার বিষয়টিকে এখনও একটি অস্বস্তিকর বা অধিকাংশ ক্ষেত্রে অশ্লীল বিষয় হিসেবে এড়িয়ে যাওয়া হয়।
অনেক সচেতন নারী এ ব্যাপারে সোচ্চার হতে চাইলেও পারিপার্শিক পরিস্থিতি তার কন্ঠ অবরুদ্ধ করে দেয় প্রায় সব সময়েই। বলাই বাহুল্য এতে করে কোন লাভ তো হচ্ছেই না বরং নানা সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের মত ঘটনা ঘটছে প্রতি নিয়ত। পশ্চিমা বিশ্বে নারীরা আমাদের দেশের নারীদের মত দুর্দশাগ্রস্ত নয়। সে দেশের নারীরা নিজেদের সকল অধিকার ও যৌনতা সম্পর্কেও সতর্ক ও সোচ্চার।
তবে ফ্লোরিডার স্প্রিং হিল নিবাসী গ্রেটচেন মোলানেন ততটা প্রচার উন্মুখ ছিলেন না তার এক বিশেষ যৌন অস্বাভাবিকতার বিষয়ে! গ্রেটচেন এক বিশেষ শারীরবৃত্তিয় অবস্থার স্বীকার ছিলেন যার ফলশ্রুতিতে তার যৌন উত্তেজনা ছিল চিরস্থায়ী, এর নাম দেয়া হয় Persistent Genital Arousal Disorder (PGAD).
দিনে ৫০ বার অরগ্যাসম অনেকের কাছে হয়ত যৌন ফ্যান্টাসি, কিন্তু বাস্তব জীবনে তা কতটা ভয়ংকর হতে পারে তা জানতেন গ্রেটচেন। মাত্র ২৩ বছর বয়েসে একদিন হঠাৎ করেই সুইচ অন হবার মত মারাত্মকভাবে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন গ্রেটচেন।
গ্রেটচেন তার এক সাক্ষাতকারে বলেন,”এই উত্তেজনার কোন শেষ নেই, এটি কখনও থামে না,একটি অরগ্যাসম আপনার মাঝে আরেকটি অরগ্যাসমের জন্য প্রচন্ড কামনার তৈরি করবে যেন তা অনেক আগে থেকেই তৈরি হয়ে আছে, এবং তারপর আরেকটা, আর এভাবেই চলতেই থাকবে!
মানে আমার সবচেয়ে বাজে রাতে এভাবে ৫০ বার একটানা ঘটে! আমি পানি খাবার জন্য পর্যন্ত একটু থামতে পারিনি! আমার সারা গায়ে ব্যাথা করছিল,ঘামে ভিজে গিয়েছিল দেহের প্রতিটি অংশ!”
এই অদ্ভুত রোগের কারণে গ্রেটচেনের শরীর কখনও স্বাভাবিক অবস্থায় থাকত না, তিনি সার্বোক্ষণিক প্রবলভাবে কামার্ত অনুভব করতেন কোন কারণ ছাড়াই। এই বিচিত্র রোগের কারণে কোন পুরুষের সাথে তার পক্ষে স্বাভাবিক সম্পর্ক রাখা সম্ভব ছিল না, কোন কাজ তিনি মনোযোগ দিয়ে করতে পারতেন না ফলে তার চাকরি করাও সম্ভব হয়ে ওঠে নি।
তাকে তার এই রোগের কারণে সরকারিভাবে অক্ষমতা ভাতা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি এক আত্মমর্যাদাপূর্ণ নারী হওয়ায় এই ভাতা নিতে অস্বীকৃতি জানান। তার প্রেমিক তাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতেন এবং তার পাশে থাকতেন কিন্তু তাদের যৌনজীবন ছিল অনেক যন্ত্রনাময়।
নিজের এই দুর্দশা কাটিয়ে উঠতে তিনি একবার ঘন্টাব্যাপী হস্তমৈথুন করেন, তবে সাময়িক আনন্দ মুহুর্তেই উবে যায় যখন তিনি একটু পরেই আবারো আগের মতই উত্তেজিত হয়ে পড়েন! তবে গ্রেটচেন এই পথ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন কারণ ধর্মীয় মূল্যবোধ তার ভেতরে যথেষ্ট পরিমানে ছিল।
গ্রেটচেন তার এই অবস্থার কথা কারও সাথে আলাপ করতে চাইতেন না। এমনকি পুরো ২ সপ্তাহ তিনি কোন ডাক্তারের কাছেও যান নি। রোগাক্রান্ত হওয়ার পর ১৬ বছরে তিনি বেশ কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তার ডাক্তাররা তার এই অবস্থা থেকে নিষ্কৃতি প্রদানের কোন কার্জকর উপায় বাতলে দিতে পারেন নি।
তারা তাকে দুগ্ধস্নান ও বরফের ব্যাগ ব্যাবহার করার পরামর্শ দেন,কিন্তু তাতে কোন ভাল ফল পাওয়া যায় নি। PGAD-এর ক্ষেত্রে যৌনমিলন বা অন্যান্য যৌন কর্মকান্ডের মাধ্যমে অরগ্যাজমের পরেও যৌন উত্তেজনা ঘন্টার পর ঘন্টা এমনকি দিনব্যাপী স্থায়ী হতে পারে।
এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের অবসন্নতারোধী (antidepressants) ও খিঁচুনীরোধী (anticonvulsants) ঔষধের এমনকি বোটক্স (Botox- Botulinum Toxinএর সংক্ষিপ্ত রূপ, বটুলামিন নামক ব্যাক্টেরিয়ার দ্বারা সৃষ্ট মারাত্মক বিষ বা টক্সিন দ্বারা এটি তৈরি হয়) ইঞ্জেকশনের পর্যন্ত পরামর্শও দেয়া হয়, কিন্তু কিছুই কোন দীর্ঘস্থায়ী কার্যকর ভুমিকা রাখতে পারেনা।
PGAD-এর কোন কারণ এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। মাত্র ২০০১ সালে এ রোগ সম্পর্কে প্রথম ধারনা পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞদের ধারণা স্নায়ুর বৈকল্যতার (Nerve Dysfunction) কারণেই হয়তো এমনটা ঘটে। এখন পর্যন্ত একে কোন রোগ হিসেবেও সেভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয় নি। অনেক ডাক্তার এ রোগ সম্পর্কে কিছুই জানেন না।
ধীরে ধীরে গ্রেটচেন মারাত্মক একা হয়ে পড়েন। অবশেষে তিনি সিদ্ধান্ত নেন এই অভিশপ্ত জীবনের অবসান ঘটানোর!
মৃত্যুর আগে তিনি তার জীবনের কঠিন সত্য সবার সামনে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেন, যাতে করে তার মত কোন অভাগী নারী নিজের জীবনের এই ভয়ঙ্কর পরিণতি নীরবে নিভৃতে বয়ে না বেড়ায় আর এর কোন প্রতিকার খোঁজা সম্ভব হয়। তিনি Tampa bay Times ম্যাগাজিনে তার একটি আত্ম বিবরণী প্রদান করেন।
অবশেষে দীর্ঘ ১৬ বছর এই বিচিত্র মনদৈহিক রোগের সাথে লড়াই করার পর ২০১২ সালের ১লা ডিসেম্বর, মাত্র ৩৯ বছর বয়েসি এই নারী শেষবারের মত আত্মহননের চেষ্টা করে সফল হন আর তার নিজের এই অভিশপ্ত জীবনের অবসান ঘটান।

Labels: ,

মহিলাদের সঙ্গমের সমস্যা যে কারনে হয়!

মহিলাদের সঙ্গমের সমস্যা যে কারনে হয়!
পরিণত বয়সের নারী ও পুরুষ অনেকের কাছে যে সমস্যা অনেক সময় প্রকট হয়ে উঠে তা হলো যৌন দূর্বলতা, যার কারণে অনেক সময় দম্পতি মানসিক অশান্তিতে ভোগেন। পুরুষের ও মহিলাদের সঙ্গমের সমস্যা গুলি কিছু ভিন্ন রকমের।

পৃথিবীতে শতকরা ৪৩ভাগ পরিণত বয়সের মহিলা কোন না কোন সঙ্গমের সমস্যায় ভোগেন থাকেন। এই সমস্যার কোনটি যৌন উত্তেজনা বোধ না করার কারনে, কোনটি আবার যৌন কার্যে আগ্রহ বোধ না করা, সঙ্গমে ব্যথা অনুভব করা ইত্যাদি উপসর্গ সমন্নয়ে বিন্যস্ত।
সাধারণত কিছু কিছু রোগে আক্রান্ত হলে মহিলাদের সঙ্গম এর সমস্যা গুলি দেখা দেয়। এই রোগ গুলি হলো হৃদ-রোগ উচ্চ রক্ত চাপ কিংবা হাইপারটেনশন এন্ডোক্রাইন বা হরমোনের সমস্যা (যেমনঃ ডায়াবেটিস, হাইপোপ্রলাকটিনোমিয়া ইত্যাদি) নিউরোলজিকাল রোগ (যেমনঃ স্ট্রোক, মেরুদন্ডের রজ্জু কিংবা স্পাইনাল কর্ডে আঘাত)।
বড় কোনো সার্জারি করা বা আঘাত পাওয়া কিডনি রোগ, লিভার রোগ, মানসিক চাপ, বা বিভিন্ন মানসিক ব্যধি এছাড়া কিছু কিছু ঔসুধ সেবনের কারনে এমন সমস্যা দেখা দেয়।
এসব সমস্যা হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। Behavioral modification এবং কিছু ঔসুধ (যেমনঃ হরমোন) এবং কিছু কিছু ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে এসকল সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

Labels: ,

পুরুষদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক সেক্স পজিশন

কানাডার একদল বৈজ্ঞানিক বলছেন, ‘ওয়েমেন অন টপ’ পজিশনটি রতিক্রিয়ার সময় সবচেয়ে বিপজ্জনক। বিজ্ঞানীদের দাবি, পুরুষদের জন্য এই বিশেষ ধরনের শৃঙ্গারটি বিপজ্জনক। পরিসংখ্যান দেখিয়ে গবেষকরা বলছেন, এই পজিশনেই বেডরুমে পুরুষাঙ্গের উপর আঘাতজনিত সমস্যার ঘটনা সবচেয়ে বেশিবার ঘটেছে।

টেলিগ্রাফকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এক গবেষক বলেন, পুরুষাঙ্গে আঘাতজনিত ঘটনা সবথেকে বেশি ঘটে ‘ওয়েমেন অন টপ’ পজিশনের সময়। এক্ষেত্রে সঙ্গিনী পুরুষের উপরের দিকে থাকেন।
নিজেদের বক্তব্যের সমর্থনে ব্রাজিলের একটি শহরে প্রায় ৩০ লক্ষ বাসিন্দাদের উপর সমীক্ষা চালিয়েছেন গবেষকরা। দেখা গিয়েছে, সর্বোচ্চ ১৩ বছর পরেও একজন পুরুষ নিজের পুরুষাঙ্গে ‘ফ্র্যাকচার’ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যাদের মধ্যে অর্ধেকের বয়স ৩৪ বছরে নিচে।

Labels: , ,

যৌন মিলনে কেন আপনি ১ থেকে ৫ মিনিটের বেশি থাকতে পারেন না? এর কারণ এবং সমাধান

যৌন মিলনে কেন আপনি ১ থেকে ৫ মিনিটের বেশি থাকতে পারেন না? এর কারণ এবং সমাধান
যৌন মিলন এক প্রকার খেলা এই খেলা এক্সপার্ট হতে হলে আপনাকে ভাল ভাবে এই বিষয়ে জানতে হবে। জানতে হবে কি ভাবে নিজেকে অধিক সময় মিলনের কাজে ধরে রাখা যায়। আমাদের দেশের মানুষ যৌন শিক্ষায় একেবারেই অজ্ঞ তাই এই বিষয়ে ভাল ধারনা না থাকায় অহর অহর সুখের সংসারে বয়ে যাচ্ছে ঝড়! অথচ আপনার একটু সচেতনতাই পারে আপানকে এই থেকে পরিত্রাণ দিতে।

আমাদের দেশের বেশির ভাগ পুরুষ যৌন মিলন বলতে যা বুঝেঃ যৌন মিলন বলতে তারা বুঝে শুধু পুরুষের যৌনাঙ্গ নারীর যৌনিতে প্রবেশ করানু এবং বীর্যপাত গঠিয়ে উঠে যাওয়া। ভুল! আপনার ধারনা একেবারেই ভুল। আপনার যৌন তৃপ্তি আছে আপনার বউয়ের কি তৃপ্তি নেই ? আসলে এই ভুলটাই করে থাকে আমাদের দেশের প্রায় ৮০% পুরুষ।
যৌন মিলন শুরু করবেন আদর দিয়ে। নারীর সারা শরীরে যৌন উত্তেজনা কাজ করে। তাই প্রথম ১৫-২০ মিনিট তাকে আদর করুন। আদর করতে করতে তাকে উত্তেজিত করুন। নিজেকে নিজে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রন করুন হতাশা বা টেনশন নিয়ে যৌন মিলন করলে খুব দ্রুত বীর্যপাত গঠে যাবে। তাই মাথা ঠান্ডা রেখে যৌন মিলন করুন।
প্রথম মিলনে নারীরা অনেক ভয় পেয়ে থাকে এটা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ব্যাপার এবং প্রথম মিলনে বেশির ভাগ পুরুষের ১-২ মিনিট এর মধ্যে বীর্যপাত ঘটে এও স্বাভাবিক বেপার। তাই এই বিষয় গুলা নিয়ে একেবারে চিন্তিত হবে না। যদি দেখেন সব সময় যৌন মিলনে টাইম কম পাচ্ছেন তাহলে অবশ্যয় অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। মনে রাখবেন আপনার যৌন জীবনে অশান্তি মানেই আপনার জীবন তেজপাতা!

Labels: ,

যে কারণে পুরুষের তুলনায় নারীর বেশি ঘুমের প্রয়োজন

আপনার মতে কার বেশি ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে, নারী নাকি পুরুষের? অনেকেই হয়তো বলবেন পুরুষের। কারণ সারাদিনের বাইরে কাজকর্ম অন্যান্য বিষয় নিয়ে অনেকে এটিই ভাবেন। কিন্তু গবেষণার ফলাফল অন্য কথা বলে। ডিউক ইউনিভার্সিটির গবেষকদের মতে পুরুষের তুলনায় নারীদের বেশি ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে।
 বেষক দল তাদের গবেষণায় দেখতে পান পুরুষের তুলনায় নারীরা কম ঘুমের কারণে শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে দুর্বল হয়ে পড়েন। এছাড়াও গবেষণায় আরও দেখা যায় কম ঘুমের কারণে নারীদের হৃদপিণ্ডের রোগ, বিষণ্ণতা এবং মানসিক সমস্যায় ভোগার ঝুঁকি পুরুষের তুলনায় অনেক বেশি। ঘুম বিশেষজ্ঞ মাইকেল ব্রেউস বলেন, ‘গবেষণায় দেখা যায় ঘুম কম হলে সকালে নারীদের মধ্যে রাগ, বিষণ্ণতা এবং ক্ষতিকর আবেগগুলো কাজ করতে থাকে’।

কার কতোটা ঘুমের প্রয়োজন

অন্যান্য শারীরিক বিষয়ের পাশাপাশি মানসিক শক্তি ব্যয়ের উপরেও ঘুমের পরিমাণ নির্ভর করে থাকে এবং গবেষকগণ দেখতে পান নারীরা পুরুষের তুলনায় অনেক বেশি মাত্রায় মস্তিষ্ক ব্যবহার করে কাজ করে থাকেন।
ইংল্যান্ডের Loughborough University’র স্লিপ রিসার্চ সেন্টারের ডিরেক্টর বলেন, ‘ঘুমের মাধ্যমে আমাদের মস্তিষ্কের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ নতুন করে শক্তি পায় এবং রিকভার হয়। মস্তিষ্কের এই অংশ দিয়ে আমরা চিন্তা করা, স্মৃতি ধরে রাখা, কথা বলা ইত্যাদি ধরণের কাজ করে থাকি।
পুরোদিনে যতোটা মস্তিষ্ক ব্যবহার করে কাজ করা হবে ততোটাই আমাদের মানসিক শক্তি যোগানের চাহিদা হবে এবং পূরণ করতে হবে এবং এর উপর নির্ভর করেই আমাদের ঘুমের পরিমাণ নির্ধারিত হবে। নারীরা একসাথে অনেক কাজ করে থাকেন, তারা মাল্টিটাস্কার যা পুরুষেরা নন সুতরাং নারীদের মস্তিষ্ক অনেক বেশি ব্যবহার হচ্ছে পুরোদিন। সুতরাং এই হিসেবেও নারীদের পুরুষের চাইতে বেশি ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে’।
গবেষকগণ আরও বলেন, ‘এই রিসার্চটি গড়পড়তা মানুষের উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। এতে করে সাধারণ একজন পুরুষের তুলনায় নারীর বেশি ঘুমের প্রয়োজন আছে তা স্পষ্ট। তবে, যদি কোনো পুরুষ সারাদিন এমন কাজ করেন যা অনেক বেশি মস্তিষ্ক ব্যবহার করে করতে হয় তাহলে তাদেরও কিছুটা বাড়তি ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে, কারণ এতে করে ক্ষয় হয়ে যাওয়া মানসিক শক্তি পূরণ হয়’।

ঘুম সম্পর্কে বিজ্ঞান যা বলে

সাধারণত একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে। ঘুম কম হওয়া বা অনিদ্রা সমস্যায় যারা ভোগেন তাদের নানা শারীরিক সমস্যা পরতে দেখা যায়। হার্টের সমস্যা, ব্লাড কল্ট, স্ট্রোক, মানসিক সমস্যা, ত্বক বুড়িয়ে যাওয়া, বিষণ্ণতা ইত্যাদি সমস্যায় আক্রান্ত হন তারাই যারা কম ঘুমান।

Labels: , ,

দৌড়ানো : সম্পূর্ণ গাইড (সংক্ষিপ্তাকারে)

দৌড়
দৌড়
কেন দৌড়াবেন-

নিয়মিত দৌড়ানোর যত প্রধান কারণ আছে তার মধ্যে প্রধান হলো- ওজন কমানো, রোগ-জীবানু প্রতিরোধ করা এবং আরো শক্তি ও আত্মবিশ্বাস বাড়ানো।
সব ধরনের ব্যায়ামের মধ্যে দৌড়ানোর উপায় এবং নিয়মকানুন খুব সহজ।
পৃথিবীতে যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাদের মধ্যে দৌড়ানো মানুষের সংখ্যাই বেশী।
যে কোনো শারীরিক গঠন ও বয়সের মানুষই দৌড়াতে পারেন।
দৌড়ানো এবং জগিং করার মধ্যে সত্যিকারের কোনো তফাত নেই।
দৌড়ানোর ফলে বাত বা প্রদাহ হয় না।

আরো কিছু তথ্য-

ডায়েট কন্ট্রোলের চেয়ে দৌড়িয়ে ওজন কমানো অনেক ভালো এবং সহজ উপায়।
৩৫ মাইল দৌড়ানো মানে ১ পাউণ্ডের সমান চর্বি কমানো।
দৌড়ালে হৃদ রোগের ঝুঁকি অর্ধেক কমে যায়।
সাধারণ মানুষের চেয়ে দৌড়বিদদের হাড় এবং ফুসফুস অনেক শক্তিশালী হয়।
সাধারণ মানুষের চেয়ে দৌড়বিদদের আত্মসম্মান, আত্মবিশ্বাস এবং মানসিক সতর্কতা অনেক বেশী থাকে।
সপ্তাহে কমপক্ষে ২০ মাইল করে দৌড়ালে আয়ু প্রায় ২ বছর বেড়ে যেতে পারে।

দৌড়ানোর প্রাথমিক ধাপ-
দৌড়ানো শুরুর প্রাথমিক ধাপে হাঁটা এবং দৌড় মিশিয়ে শুরু করলে ভালো ফল পাবেন।
দোড় শুরু করার আগে শরীর গরম করে নেয়া উচিত। হালকা স্ট্রেচিং বা একটু হেঁটে নিয়ে তারপর দৌড় শুরু করা উচিত।
প্রথম কয়েক মাসে দৌড়ের গত এত কম রাখা উচিত যাতে দৌড়ের মাঝেও আলাদা দম না নিয়ে স্বাভাবিক ভাবে কথা বলতে পারেন।
প্রথমদিকে পেটে বা পায়ে ব্যথা স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে এটা প্রথমেই বেশী গতিতে দৌড়ানোর ফলে হয়।
অন্যরা কিভাবে দৌড়ায় সেটা না দেখে নিজে যেভাবে ভালো এবং আরামদায়ক মনে করেন সেভাবেই দৌড়ানো উচিত।

কোথায় দৌড়াবেন-

কোথায় দৌড়বেন সেটা বড় ব্যাপার না, তবে নিরাপত্তার দিকটা সর্বাগ্রে খেয়াল রাখা উচিত। গাড়ি, কুকুর বা সন্দেহজনক লোকজনের ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত।
মাঠ, ট্রাক, পার্ক এবং রাস্তা হলো দৌড়ানোর জন্য সাধারণত উপযুক্ত জায়গা। তবে রাস্তা খুব শক্ত বলে প্রথম দিকে পায়ের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। আবার দৌড়ানোর ট্রাক অনেক সময় একঘেয়ে লাগতে পারে।
পায়ে অযথা আঘাত এড়িয়ে দৌড়ানোর জন্য সবচেয়ে ভালো জায়গা হলো সমান এবং নরম ঘাসের মাঠ।
কখনো কখনো রাস্তার পাশে বা সাগর পাড় ভালো জায়গা হতে পারে।
যখন ভ্রমণ করবেন তখন ঐ এলাকার দৌড়ানোর ক্লাব বা দোকানে জিজ্ঞেস করলে ভালো জায়গার সন্ধান পেয়ে যাবেন।

সকাল, দুপুর নাকি বিকেল: কখন দৌড়াবেন-

কাজের বাইরেও নিয়মিত দৌড়ানোর জন্য সময় প্রায় সবারই থাকে।
আপনাকে সপ্তাহের ১৬৮ ঘন্টা থেকে মাত্র ৩ ঘন্টা সময় বের করে নিতে হবে সারা সপ্তাহের দৌড়ানোর জন্য।
সবচেয়ে ভালো সময় হলো আপনি কখন প্রতিনিয়ত দৌড়ানোর জন্য সময় বের করতে পারবেন।
এমন ভাবে প্লান করুন যাতে প্রতিবার এই একই সময়ে দোড়াতে পারেন।
যারা খুব ব্যস্ত তারা সকালে ঘুম থেকে উঠার পরের সময়টা নির্বাচন করলে সুবিধা পাবেন।
ভোরে দৌড়ানোর আরেকটা সুবিধা হলো- এই সময় পেটে খাবার থাকে না বলে দৌড়ানোর জন্য বাড়তি শক্তিটা শরীরের চর্বি থেকে আসবে এবং চর্বি কমার হার বেড়ে যাবে।
একদিন পর পর সপ্তাহে ৩/৪ দিন দৌড়ানোর চেষ্টা করবেন।

প্রেরণা বা উদ্যম বা মনোবল ধরে রাখতে হবে-

দুদিন দৌড়িয়েই বেশী আশা করবেন না। এতে মনোবল ভেঙে যাবে।
এমন ভাবে অল্প অল্প করে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করবেন যাতে ঐ সময়ের মধ্যে সেটা নিজের পক্ষে অর্জনযোগ্য হয়। এভাবে অল্প অল্প করে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে এবং আরো দৌড়ানোর প্রতি আগ্রহ জন্মাবে।
লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট করতে হবে। একটু চ্যালেঞ্জিং হলেও সাধ্যের মধ্যে থাকতে হবে।
একটা আলাদা খাতা বা ডায়েরী রাখতে হবে এবং তাতে প্রতিটা দৌড়ের হিসাব বিস্তারিত ভাবে লিখে রাখতে হবে। এতে সহজে উন্নতি তুলনা করতে পারবেন।
দৌড়ের সাথে একই ধরনের ব্যায়াম যোগ করলে উদ্যম ঠিক থাকবে।
কখনোই অতিরিক্ত দৌড়াবেন না। এতে শরীরে ক্লান্তি আসবে, তখন দৌড়ানোর ইচ্ছা কমে যেতে পারে। তাছাড়া এতে শরীরেও অহেতুক আঘাত লেগে যেতে পারে।

সঠিক উপকরণ-

দৌড়ানোর জন্য আলাদা জুতা পাওয়া যায়। এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভালো রার্নিং স্যু অনেক আঘাত থেকে বাঁচিয়ে দেবে।
পারফেক্ট রার্নিং স্যু বলে কোনো ব্যাপার নাই। যেটা নিজের কাছে আরামদায়ক মনে হয় সেটাই সবচেয়ে ভালো।
পা মাটিতে পড়ার পরে আপনি কেমন অনুভব করছেন সেটা বুঝেই আপনি ঠিক করতে পারবেন কোনটা আপনার জন্য ভালো রার্নিং স্যু।
সাধারণ জুটার চেয়ে রার্নিং স্যুর দাম তুলনামূলক ভাবে একটু বেশী হলেও মেনে নেবেন।
অন্য কাজে ব্যবহার না করলে এক জোড়া নতুন রার্নিং স্যু দিয়ে সাধারণত ৫০০-৬০০ মাইল দৌড়াতে পারবেন।
রার্নিং স্যুর জন্য আলাদা দোকান আছে। সেখান থেকে কিনলে সুবিধা পাবেন।

জুতা ছাড়াও খাটো বা ফুল প্যান্ট বা গেঞ্জির দরকার আছে।
সাধারণ আবহাওয়ায় সুতীর জামাকাপড় ঠিক আছে, কিন্তু অত্যাধিক গরম বা শীতের সময় এসব ঘামে ভিজে গেলে সমস্যায় পড়বেন।
গরম এবং শীতের সময় এমন গেঞ্জি ব্যবহার করুন যাতে আপনার শরীরের ঘাম গেঞ্জির মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারে। জুতা কেনার দোকানে বললেই এসব পেয়ে যাবেন।
শীতের সময় আরামের জন্য কয়েকটা স্তরে জামা-কাপড় পড়ে নেবেন।
মেয়েরা সুন্দর ফিটিং এবং কোয়ালিটির স্পোর্টস ব্রা ব্যবহার করতে পারেন।
মোজাও ভালো ভাবে ফিট হওয়া উচিত। কিসের তৈরী সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।

এছাড়া একটা ভালো ডিজিটাল স্পোর্টস হাতঘড়ি থাকলে ভালো হয়।
ওয়েদার খারাপ হলে ট্রেডমিল একটা বিকল্প ব্যবস্থা হতে পারে। তবে যথেষ্ট ব্যবহার করা না হলে নিজ বাড়িতে না কেনাই ভালো।

স্ট্রেচিং-

দৌড়ানোর আগে ভালোকরে স্ট্রেচিং করে নিলে দৌড়ানোর সময় আরাম পাবেন এবং আঘাত পাওয়ার ঝুকি অনেক কমে যাবে।
দৌড় শেষ হবার পরও আরেকবার স্ট্রেচিং করে নেয়া উচিত।
স্ট্রেচিং আস্তে আস্তে আলতো ভাবে করা উচিত। প্রতিটা স্ট্রেচ ১৫ থেকে ৩০ সেকেণ্ড ধরে রাখা উচিত।
স্ট্রেচিং করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হলো পায়ের পিছনের দিকটা। যেমন: পায়ের ডিম বা গুল (calves), হাঁটুর পশ্চাদ্ভাগে অবস্থিত পায়েব শিরা (hamstring), নিতম্ব এবং পশ্চাতভাগ।
মাসে কয়েকবার স্পোর্টস ম্যাসাজ নিতে পারলে শরীরের নমনীয়তা বাড়াতে সাহায্য করবে।

অন্যান্য ব্যায়াম-

যদি জিমে গিয়ে হালকা ওজন নিয়ে প্রাথমিক ধাপের কিছু ব্যায়াম (বিশেষ করে শরীরের উর্ধাংশের) করেন তাহলে আরো সহজে দৌড়াবে পারবেন।
এটা সপ্তাহে ২ বা ৩ দিন করলেই যথেষ্ট।
এগুলো নিতান্তই হালকা ব্যায়াম। বডি বিল্ডাররা যেমন করে পেশী দৃঢ় করা জন্য, সেরকম ভারী ব্যায়াম নয়।
সাধারণত পেট, পিঠ, বাহু ও কাধের ব্যায়াম করলেই চলে।
অনেকে পায়ের ব্যায়ামও করেন তবে এটা অনেকের জন্য হিতে বিপরীত হতে পারে।

আঘাত এবং ব্যথা-

বেশীর ভাগ আঘাত এবং ব্যথা সৃষ্টি হয় অতিরিক্ত দৌড়ানোর ফলে। একটু সচেষ্ট থাকলেই এগুলো এড়ানো সম্ভব।
ধীরে ধীরে দৌড়ের গতি বা সময় বাড়ানো, নরম মাঠে দৌড়ানো, সঠিক ভাবে স্ট্রেচিং করা, জিমে হালকা ব্যায়াম করা- এগুলো আঘাত বা ব্যথা এড়াতে সাহায্য করে।
বেশিরভাগ দৌড়ের ব্যথা একটু বিশ্রাম নিলে বা হালকা চিকিৎসা করলেই সময়ের সাথে চলে যায়।
দৌড়াতে গিয়ে ব্যথা পেলে কখনোই গরম ছ্যাক দেবেন না বরং বরফ বা ঠাণ্ডা কিছু লাগাবেন।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ডাক্তার দেখানোর দরকার হয় না।
একান্তই ডাক্তার দেখাতে হলে স্পোর্টস মেডিসিন ডাক্তার দেখাতে পারলে ভালো হয়।

ডায়েট-

স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে এবং দৌড়াতে সমর্থ থাকতে হলে ভালো ডায়েটের কোনো বিকল্প নাই।
দৌড়াতে যাওয়ার আগে খাওয়া ঠিক নয়। কমপক্ষে খাওয়ার দুইঘন্টা পরে দৌড়াতে বা ব্যায়াম করতে যাওয়া উচিত।
ভালো ডায়েট বলতে সাধারণত প্রাকৃতিক এবং পুষ্টিকর খাবারকেই বুঝায় যা সবারই খাওয়া উচিত।
প্রতিদিনের খাবারে ৫০% কার্ব, ৩০% প্রোটিন এবং ২০% ফ্যাট রাখতে পারলে ভালো।

ক্রশ ট্রেইনিং-

দৌড়ের সাথে এরকম অন্য কোনো এরোবিক ব্যায়াম করা যেতে পারে। এতে ওজন কমা সহ মনোযোগ ঠিক থাকবে এবং আঘাত বা ব্যথা পাবার ঝুকি কম থাকবে।
দৌড়ানোর পাশাপাশি সপ্তাহে দুইদিন সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো বা বেত লাফাতে পারেন।
ক্রশ ট্রেইনিং একটা বাড়তি ব্যায়াম যা কখনোই দৌড়ানোর বিকল্প হিসাবে নেবেন না। তারমানে ক্রশ ট্রেইনিং করুন আর না করুন, সপ্তাহের দৌড়ের দিনগুলোতে অবশ্যই দৌড়াবেন।

শুধু মেয়েদের জন্য-

দৌড়ের ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ে কোনো ভেদাভেদ নাই।
শুধু শারীরিক গঠনের জন্য গড়ে মেয়েরা গড়ে ছেলেদের চেয়ে একটু ধীরগতির হতে পারেন।
মেয়েদের মধ্যে বিভিন্ন পার্থক্য থাকলেও দৌড় বেশির ভাগ মেয়েদের মাসিকের ক্ষেত্রে যথেষ্ট উপকারী।
দৌড়ানো মেয়েদের অন্যান্য মেয়েদের চেয়ে বেশী আয়রন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত।
গর্ভাবস্থায় হালকা দৌড়ালে সেটা মা এবং ভ্রুণ গর্ভস্থ সন্তান উভয়ের জন্যই নিরাপদ।

গরম, ঘাম ও পানিশূণ্যতা-

দৌড়ানোর সময় যতটুকু ওজন হারাচ্ছেন, পানিশূন্যতার কারণে যদি তার শতকরা এক ভাগও হারান তাহলে আপনার দৌড়ানোর কার্যকারিতা শতকরা ৩ ভাগ করে ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
পিপাসা পাওয়া মানেই আপনি অনেক আগেই পানিশূণ্যতায় ভুগছেন।
পানিশূণ্যতা রোধ করার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো একবারে অনেক পানি পান না করে সারাদিন ধরে অল্প অল্প করে পানি পান করে যাওয়া।
গরমের দিনের চেয়ে শীতের দিনে দৌড়ানো অনেক ভালো।
রোদের মধ্যে দৌড়াতে হলে সানস্ক্রিন লোশন লাগিয়ে নিলে ভালো হয়। লোশনের SPF মাত্রা ১৫-এর বেশি হওয়া উচিত।
তাছাড়া মাথা ঢাকতে টুপি এবং স্পোর্ট সানগ্লাস ব্যবহার করতে পারেন।

———————————————-

প্রাথমিক পর্যায়ের রানারদের জন্য একটি দৌড়ানোর সূচি-

সপ্তাহ#১

দৌড়#১ : প্রথম ১০ মিনিট হাঁটুন। পরের ১০ মিনিটে ১ মিনিট করে দৌড়াবেন, ১ মিনিট করে হাঁটবেন। শেষ ১০ মিনিট হাঁটবেন।
দৌড়#২ : প্রথম ১০ মিনিট হাঁটুন। পরের ১৫ মিনিটে ১ মিনিট করে দৌড়াবেন, ১ মিনিট করে হাঁটবেন। শেষ ৫ মিনিট হাঁটবেন।
দৌড়#৩ : প্রথম ১০ মিনিট হাঁটুন। পরের ১৫ মিনিটে ২ মিনিট করে দৌড়াবেন, ১ মিনিট করে হাঁটবেন। শেষ ৫ মিনিট হাঁটবেন।
দৌড়#৪ : প্রথম ৫ মিনিট হাঁটুন। পরের ২১ মিনিটে ২ মিনিট করে দৌড়াবেন, ১ মিনিট করে হাঁটবেন। শেষ ৪ মিনিট হাঁটবেন।

সপ্তাহ#২

দৌড়#১ : প্রথম ৫ মিনিট হাঁটুন। পরের ২০ মিনিটে ৩ মিনিট করে দৌড়াবেন, ১ মিনিট করে হাঁটবেন। শেষ ৫ মিনিট হাঁটবেন।
দৌড়#২ : প্রথম ৫ মিনিট হাঁটুন। পরের ২১ মিনিটে ৫ মিনিট করে দৌড়াবেন, ২ মিনিট করে হাঁটবেন। শেষ ৪ মিনিট হাঁটবেন।
দৌড়#৩ : প্রথম ৪ মিনিট হাঁটুন। পরের ২৪ মিনিটে ৫ মিনিট করে দৌড়াবেন, ১ মিনিট করে হাঁটবেন। শেষ ২ মিনিট হাঁটবেন।
দৌড়#৪ : প্রথম ৫ মিনিট হাঁটুন। পরের ২২ মিনিটে ৮ মিনিট করে দৌড়াবেন, ৩ মিনিট করে হাঁটবেন। শেষ ৩ মিনিট হাঁটবেন।

সপ্তাহ#৩

দৌড়#১ : ৫ মিনিট হাঁটুন। ১০ মিনিট দৌড়ান। ৫ মিনিট হাঁটুন। ৫ মিনিট দৌড়ান। ৫ মিনিট হাঁটুন।
দৌড়#২ : ৫ মিনিট হাঁটুন। ১২ মিনিট দৌড়ান। ৩ মিনিট হাঁটুন। ৫ মিনিট দৌড়ান। ৫ মিনিট হাঁটুন।
দৌড়#৩ : ১০ মিনিট হাঁটুন। ১৫ মিনিট দৌড়ান। ৫ মিনিট হাঁটুন।
দৌড়#৪ : ৬ মিনিট হাঁটুন। ১৮ মিনিট দৌড়ান। ৬ মিনিট হাঁটুন।

সপ্তাহ#৪

দৌড়#১ : ৫ মিনিট হাঁটুন। ২০ মিনিট দৌড়ান। ৫ মিনিট হাঁটুন।
দৌড়#২ : ৫ মিনিট হাঁটুন। ২২ মিনিট দৌড়ান। ৩ মিনিট হাঁটুন।
দৌড়#৩ : ৩ মিনিট হাঁটুন। ২৫ মিনিট দৌড়ান। ২ মিনিট হাঁটুন।
দৌড়#৪ : ৩০ মিনিট দৌড়ান।

এভাবে প্রথম মাসে ৩০ মিনিট দৌড়তে পারলে পরের মাস থেকে দৌড়ানোর আগে আর পরে সবসময় ৫ মিনিট করে যোগ করবেন। ধীরে ধীরে মাঝের দৌড়ানোর সময়টা একটু একটু করে বাড়াবেন। দুই/তিন মাসের মধ্যে দৌড়ানোর সময় ৪৫ মিনিট করে দেয়ার চেষ্টা করবেন।
২/৩ মাস পর এই ৪৫ মিনিটের দৌড়ের গতি ধীরে ধীরে বাড়াবেন। একটা পর্যায়ে ৪৫ মিনিটে ৪ মাইল দৌড়াতে পারবেন।

তথ্যসূত্র: বাংলা হেলথ

Labels:

হাঁটা হলো শ্রেষ্ঠ ব্যায়াম চাপ নেই, নিখরচা

হাঁটা
হাঁটা
এটা তো সবাই জানেন, একটি সুখী, সুস্থ শরীর ও মনের জন্য কোনো না-কোনো ধরনের শরীরচর্চা প্রয়োজন। ব্যায়াম এবং সেই সঙ্গে সুমিত পানাহার হলো দীর্ঘজীবনের রহস্য, শরীর-মন তরতাজা রাখার রহস্য। আদর্শ ওজন বজায় রাখা সবচেয়ে বড় কাজ।
এ ছাড়া আলসে কালক্ষেপণের একটি ভালো উপায় হলো ব্যায়াম করা।
সহজ-সরল একটি ব্যায়াম আছে—তা হলো, হাঁটা। এটি কম পরিশ্রমে উপযুক্ত একটি ব্যায়াম সব বয়সের মানুষের জন্য। নিখরচায় শরীরচর্চা।
যেখানে-সেখানে করা যায় এই শরীরচর্চা। লেকের পাড় ধরে যে পায়ে চলা পথ, সেই পথ ধরে হাঁটার মধ্যে কত আনন্দ! ঝিরিঝিরি বাতাসে বন্ধুর সঙ্গে হাঁটতে বড় আনন্দ! এমনকি বাসার চার ধারে যে ফুটপাত, সেখানে ১০ মিনিট হাঁটলেও কম কী?
ইদানীং গবেষকেরা বলছেন, হূদযন্ত্র ও রক্তনালির সুস্বাস্থ্যের জন্য হাঁটা, জগিং ও দৌড়ানো সমান সুফল আনে। বস্তুত কারও কারও জন্য হাঁটা এর চেয়েও ভালো ব্যায়াম। কারণ, হাঁটলে শরীরের ওপর চাপ পড়ে না।
দৌড়ালে অনেক সময় হাড়ের গিঁটে ব্যথা হয়, আহত হয় পেশি। এটা বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু হাঁটাহাঁটি করে আহত হওয়ার কথা শোনা যায় না।
বড় সহজ এই হাঁটা। বিশেষ কোনো পোশাক পরার দরকার নেই। ঘেমে-নেয়ে ওঠার প্রয়োজন নেই। আরাম-আয়েশেও হাঁটা যায় যত্রতত্র। সপ্তাহে ছয় দিন ৩০ মিনিট জোরে হাঁটাই যথেষ্ট।
জগিং ও অ্যারোবিকসের মতো কঠোর ব্যায়াম হার্টকে ঘোড়ার মতো দৌড়াতে বাধ্য করে—রক্ত জোরে পাম্প করতে থাকে। একপর্যায়ে এটি হিতকরী। তবে পেশি যেহেতু এত কঠোর পরিশ্রম করে, সে জন্য এর প্রয়োজন হয় প্রচুর অক্সিজেন। ব্যায়ামে তৈরি হয় ল্যাকটিক এসিড। অম্লতা রোধের জন্য চাই প্রচেষ্টা। ল্যাকটিক এসিড জমা হওয়ায় পেশি হয় শক্ত ও বেদনার্ত।
হাঁটলে তেমন হয় না। হূৎপিণ্ড জোরে পাম্প করে, বাড়ায় রক্তপ্রবাহ। তবে পেশির ওপর এত কঠোর প্রভাব ফেলে না। শরীরে তৈরি হয় না ল্যাকটিক এসিড।
তাই শরীরের ওপর কম চাপ প্রয়োগ করেও রক্ত সংবহনতন্ত্রের উজ্জীবনে সাহায্য করে। দেহের সঞ্চিত মেদ অবমুক্ত হয়ে বিপাক হয়।
শরীরের ওপর যেহেতু এর চাপ কম, সে জন্য যে কেউ পুরো সপ্তাহ হাঁটলেও খারাপ লাগে না। অনেক অসুস্থ মানুষও এই হাঁটাকে ব্যায়াম হিসেবে নিতে পারেন। শুরু হোক ধীরে ধীরে। প্রথম দিন ১০-১৫ মিনিট। এরপর গতি বাড়ান, সময় বাড়ান। ২০-৩০ মিনিট। এরপর শীতল হন ১০ মিনিট। পাঁচ-১০ মিনিট ধীরে হেঁটে শীতল হন। ভিড়-ভাট্টা ও ব্যয়বহুল জিম থেকে নিখরচায় হাঁটা অনেক ভালো।

তথ্যসূত্র: বাংলা হেলথ

Labels: ,

নিয়ম করে হাঁটা

হাঁটা
হাঁটা
শারীরিকভাবে ফিট রাখার জন্য হাঁটার কোন বিকল্প নেই। নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করলে শরীরের বাড়তি মেদ ঝরে যায় নিশ্চিতভাবে। তবে প্রতিটি বিষয়েরই যেমন নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম রয়েছে। হাঁটাহাঁটির ক্ষেত্রেও এসব নিয়ম প্রযোজ্য। তাই হাঁটার সময় আপনাকে অবশ্যই মেনে চলতে হবে সুনির্দিষ্ট নিয়মাবলী। এই নিয়মাবলী মেনে চললে একদিয়ে যেমন হাঁটাতে ক্লান্তি আসবে না তেমনি অন্যদিকে হাঁটার ছন্দও থাকবে অটুট। নিয়ম করে কিভাবে হাটবে তা নিয়ে এই আয়োজন

০ ঘুম থেকে উঠেই হাঁটা দেবেন না। ফ্রেশ হয়ে অল্প তরল পানীয় বা পানি পান করে রিল্যাক্স মুডে হাঁটুন।

০ ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি ওঠার অভ্যাস করুন। মর্নিং ওয়াক এ একা যাবেন না। স্বামীকে সংগে নিন। দেখবেন দুজনে এক সাথে হাঁটলে এক ঘেয়ে লাগবেনা।

০ প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ধরে হাঁটুন কম করে ৮ সপ্তাহ হাঁটার পর ফল পাবেন।

০ খুব বেশি কর্ম ব্যস্ত যারা নিয়ম করে আধ ঘন্টা হাঁটা যাদের জন্য কষ্ট কর, তারা জিমে ৩-৪ বার ১০ মিনিট হাঁটুন।

০ অফিসে কফি ব্রেকে বা লাঞ্চ ব্রেকে সিটে বসে না থেকে করিডোরে হেঁটে নিতে পারেন। বাইরে খেতে গেলে গাড়ি দূরে পার্ক করুন।

০ প্রতিদিন খাতায় লিখে রাখুন কখন, কার সঙ্গে, কতক্ষণ, কতদূর হাঁটলেন।

০ প্রতিদিন হাঁটার পর ভাবুন হেঁটে আপনি কতটা ভাল আছেন। আপনার চেহারার কতটা উন্নতি হয়েছে।

০ ওয়াকিং ক্লাবের সদস্য হতে পারেন। অনেকে সঙ্গী সাথী পান হাঁটার জন্য।

০ প্রথম ৬ মাস নিয়মিত হাঁটার জন্য নিজেকে পুরস্কৃত করুন। এর জন্য নির্দিষ্ট একটা কিছু প্ল্যান করুন। একদিন হাঁটা সম্ভব না হলে পরের দিন পুষিয়ে নেবার চেষ্টা করুন। অন্তত ১০ মিনিট বেশি হাঁটুন।

০ সকাল বেলা হাঁটার সময় না পেলে দিনের যে কোন সময় হাঁটতে পারেন।

০ বাড়িতে যতটা সম্ভব হাঁটতে চেষ্টা করুন। হেঁটে টিভি, এসি অন করুন।

০ হাঁটার সময় রিল্যাক্স থাকুন। পজিটিভ বিষয়ে ভাবুন। অথবা গান গাওয়া, গান শোনা, কবিতা আবৃত্তি করতে পারেন।

০ প্রতিদিন একই জায়গায় না হেঁটে রাস্তা বদল করুন। ছুটির দিনে স্বাস্থ্যকর স্থানে হাঁটার টিকিট কাটুন।

০ হাঁটার সময় আইপড বা রেডিও প্লেয়ার নিয়ে হাঁটুন। মন খুশি থাকবে।

০ আবহাওয়া খারাপ হলে বারান্দায় অথবা ঘেরা ছাদে হাঁটতে পারেন। ফ্ল্যাটের প্রতিটি ঘরে একবার করে হাঁটা দিন।

০ হাঁটতে হাঁটতে হাঁপিয়ে উঠলে সাথে সাথে পানি পান করবেন না। ২-৫ মিনিট রিল্যাক্স করুন। এরপর পানি খান।

০ ধীরে ধীরে হাঁটার স্পিড বাড়ান।

০ হাঁটতে গিয়ে শ্বাস নিতে কষ্ট হলে অল্প অল্প বিশ্রাম নিন।

০ শ্বশুর-শাশুড়ির পক্ষে পার্কে যাওয়া সম্ভব না হলে ছাদে হাঁটতে বলুন। হাঁটার জন্য উৎসাহী করুন।

০ সকালে সময় না পেলে স্বামীকে নিয়ে ইভনিং ওয়াকে যান।

০ হাঁটতে গিয়ে শিরায় টান লাগলে, অসুস্থ হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

০ যারা হার্টের রোগ, মৃগী রোগের জন্য ওষুধ খান, তাদের রোদে বের হলে দ্রুত ফটো পিগমেন্টেশন সম্ভাবনা থাকে। তাই সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করুন।

০ হাঁটার আগে এবং পরে ওয়ার্ম আপ এবং কুল ডাউন এক্সারসাইজ করুন। ওয়ার্ম আপে কয়েক বার এক জায়গায় লাফিয়ে নিন। কুল ডাউনে হাঁটা শেষে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে ২ বার নিশ্বাস নিন।

০ হাঁটার সময় পায়ের সাথে হাত ও সচল রাখুন। হাত পায়ের সমান্তরালে রাখুন।

০ পেট যতটা সম্ভব ভেতরে ঢুকিয়ে সোজা হয়ে হাটুন। চর্বি কমাতে পা একটা উঁচু করে হাঁটুন। প্রতিদিন ১৫-২০ মিনিট।

তথ্যসূত্র: বাংলা হেলথ

Labels: ,

হাঁটুন, সুস্থ থাকুন

হাঁটুন, সুস্থ থাকুন
হাঁটুন, সুস্থ থাকুন
এতো সবাই জানেন একটি সুখী, সুস্থ শরীর মনের জন্য কোন ও না কোন ধরনের শরীরর্চ্চা প্রয়োজন। ব্যায়াম সে সঙ্গে সুমিত পানাহার হলো দীর্ঘ জীবনের রহস্য, শরীর মন তর-তাজা রাখার রহস্য। আদর্শ ওজন বজায় রাখা সবচেয়ে বড় কাজ। এছাড়া আনন্দে কালক্ষেপনের একটি ভালো উপায় হলো ব্যায়াম করা। সহজ সরল একটি ব্যায়াম আছে। হাঁটা। কম পরিশ্রমে উপযুক্ত একটি ব্যায়াম সব বয়সের মানুষের জন্য। নিখরচায়, শরীরচর্চা। যেখানে সেখানে করা যায় এই শরীরচর্চা। লেকের পার ধরে যে পায়েচলা পথ সেই পথ ধরে হাঁটার মধ্যে কত আনন্দ। ঝিরি ঝিরি বাতাস, বন্ধুর সঙ্গে হাঁটতে বড় আনন্দ। এমনকি বাসার চারধারে যে ফুটপাত সেখানে দশমিনিট হাঁটলেও কম কি? ইদানীং গবেষকরা বলছেন হৃদযন্ত্র ও রক্তনালীর সুস্থাস্থ্যের জন্য হাঁটা, জগিং ও দৌড়ানোর সমান সুফল আনে। বস্তুত: কারো কারো জন্য হাঁটা এর চেয়েও ভালো ব্যায়াম। কারণ হাঁটলে শরীরের উপর চাপ পড়েনা। দৌড়ালে অনেক সময় হাড়ের গিটে ব্যথা হয়, আহত হয় পেশী। বয়স্কদের জন্য বেশ ঝুকিপূর্ণ কিন্তু হাঁটা-হাঁটি করে আহত হওয়ার কথা শোনা যায়না। বড় সহজ এই হাঁটা। বিশেষ কোন পোষাক পরার দরকার নেই, ঘেমে নেয়ে উঠার প্রয়োজন নেই। আরামে আয়েশেও হাঁটা যায় যত্রতত্র। সপ্তাহে ছয়দিন ৩০ মিনিট করে হাঁটাই যথেষ্ট। জগিং ও এরোবিকস এর মত কঠোর ব্যায়াম হার্টকে ঘোড়ার মত দৌড়াতে বাধ্য করে। রক্ত জোরে পাম্ল করতে থাকে। একপর্যায় পর্যন- এটি হিতকরী। তবে পেশি এত কঠোর শ্রম যেহেতু করে সেজন্য এর প্রয়োজন হয় প্রচুর অক্সিজেন। ব্যায়ামে তৈরী হয় ল্যাকটিক এসিড, অম্লতা রোধের জন্য চাই প্রচেষ্টা। ল্যাকটিক এসিড জমা হওয়াতে পেশী হয় শক্ত ও বেদনার্ত। হাঁটলে তেমন হয় না। হৃদপিণ্ড জোরে পাম্ব করে, বাড়ায় রক্তপ্রবাহ, তবে পেশীর উপর এত কঠোর প্রভাব ফেলেনা। শরীরে তৈরি হয় না এত ল্যাকটিক এসিড। তাই শরীরের উপর কম চাপ প্রয়োগ করেও রক্ত সংবহনতন্ত্রের উজ্জীবনে সাহায্য করে। দেহের সঞ্চিত মেদ অবমুক্ত হয়ে বিপাক হয়। শরীরের উপর যেহেতু এর চাপ কম সেজন্য যে কোনও কেউ পুরা সপ্তাহ ধরে হাঁটলেও খারাপ লাগেনা। অনেক অসুস্থ মানুষও হাঁটাকে ব্যায়াম হিসাবে গ্রহণ করতে পারেন। শুরু হোক ধীরে ধীরে। প্রথম দিন ১০ মিনিট থেকে ১৫ মিনিট। এরপর গতি বাড়ান, সময় বাড়ান। ২০ থেকে ৩০ মিনিট । এরপর শীতল হন ১০ মিনিট। ৫ থেকে ১০ মিনিটে ধীরে হেঁটে শীতল হন। ভীড-ভাট্টা, ব্যবহুল জিম থেকে নিখরচায় হাঁটা অনেক ভালো।

তথ্যসূত্র: বাংলা হেলথ
সূত্র:

Labels: ,

প্রতি মিনিটে ১০০ কদম




আজকাল চিকিৎসকেরা প্রায়ই বলে থাকেন, হাঁটবেন। এটা সুসহনীয় ব্যায়াম। সবার জন্য উপযোগী, উপকারী ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন। এতে ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে চিনি কম থাকে, রক্তচাপের রোগীর মনস্তাপ-রক্তচাপ দুটোই সহনীয় থাকে আর হৃদরোগীদের হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে। কিন্তু কতক্ষণ হাঁটব, কী গতিতে হাঁটব? এর উত্তরে সান ডিয়েগো স্টেট ইউনিভার্সিটির সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা বলেছেন, প্রতি মিনিটে ১০০ কদম হাঁটার লক্ষ্য স্থির করতে হবে। ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে পাঁচ দিন হাঁটা একটি পরিমিত ব্যায়াম। মিনিটে ১০০ কদম এটা একদম ন্যূনতম—মন্তব্য স্কুল অব এক্সারসাইজ অ্যান্ড নিউট্রিশন সায়েন্সের অধ্যাপক সাইমন মার্শালের।

এই গতি হৃদযন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখার ও বেশ কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি প্রতিরোধে সহায়ক বলে তিনি মনে করেন। কিন্তু শারীরিক সুস্থতা অব্যাহত রেখে বয়সকে চোখ রাঙিয়ে পেছনে ফেলে রাখতে প্রতি মিনিটে ১০৫ থেকে ১১০ কদম করে হাঁটুন। সঙ্গী নিয়ে হাঁটুন। খুব ভালো হয় ছন্দময় গানকে সঙ্গী করলে। হাঁটার কষ্ট উধাও।


তথ্যসূত্র: বাংলা হেলথ

বাংলা হেলথ
আজকাল চিকিৎসকেরা প্রায়ই বলে থাকেন, হাঁটবেন। এটা সুসহনীয় ব্যায়াম। সবার জন্য উপযোগী, উপকারী ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন। এতে ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে চিনি কম থাকে, রক্তচাপের রোগীর মনস্তাপ-রক্তচাপ দুটোই সহনীয় থাকে আর হৃদরোগীদের হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে। কিন্তু কতক্ষণ হাঁটব, কী গতিতে হাঁটব? এর উত্তরে সান ডিয়েগো স্টেট ইউনিভার্সিটির সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা বলেছেন, প্রতি মিনিটে ১০০ কদম হাঁটার লক্ষ্য স্থির করতে হবে। ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে পাঁচ দিন হাঁটা একটি পরিমিত ব্যায়াম। মিনিটে ১০০ কদম এটা একদম ন্যূনতম—মন্তব্য স্কুল অব এক্সারসাইজ অ্যান্ড নিউট্রিশন সায়েন্সের অধ্যাপক সাইমন মার্শালের।
এই গতি হৃদযন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখার ও বেশ কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি প্রতিরোধে সহায়ক বলে তিনি মনে করেন। কিন্তু শারীরিক সুস্থতা অব্যাহত রেখে বয়সকে চোখ রাঙিয়ে পেছনে ফেলে রাখতে প্রতি মিনিটে ১০৫ থেকে ১১০ কদম করে হাঁটুন। সঙ্গী নিয়ে হাঁটুন। খুব ভালো হয় ছন্দময় গানকে সঙ্গী করলে। হাঁটার কষ্ট উধাও।
মোহাম্মদ নাজমুল
তথ্যসূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট
- See more at: http://www.ebanglahealth.com/2444#sthash.A37p6PL9.dpuf

Labels: ,

হাঁটা ও ওজন নিয়ন্ত্রণ

হাঁটার পরও ওজন নিয়ন্ত্রণে না আসার কারণ ক্যালরী খরচের তুলনায় ক্যালরী গ্রহণ বেশি হওয়া।

হিসেব র্চাট
১ ঘন্টায় হাঁটায় ক্যালরী খরচ ৩১৫
১০০ গ্রাম বাদাম = ক্যালরী গ্রহণ ৭০০
১৮০ গ্রাম চকলেট = ক্যালরী গ্রহণ ৬০০
১১০ গ্রাম ফ্রেঞ্চফ্রাই = ক্যালরী গ্রহণ ৪০০
২৩০ গ্রাম ভাত = ক্যালরী গ্রহণ ৩২০
১টি হটডগ = ক্যালরী গ্রহণ ৩৬০
১টি বারগার = ক্যালরী গ্রহণ ৫২০
২০০ গ্রাম পিজা = ক্যালরী গ্রহণ ৬৫০
১৫০ গ্রাম পেস্ট্রি = ক্যালরী গ্রহণ ৫০০
১ কাপ মিষ্টি দই = ক্যালরী গ্রহণ ৪০০
১ কাপ ডিমের হালুয়া = ক্যালরী গ্রহণ ৭০০
১ কাপ হালিম = ক্যালরী গ্রহণ ৫৩০
১টি সমুচা/সিঙ্গারা = ক্যালরী গ্রহণ ২২০

ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য আমাদের খাদ্যের ক্যালরী খরচ ও গ্রহণের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ওজন কমানোর চিকিৎসাঃ
১. সঠিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা (ডায়েট র্চাট),
২. হাঁটা ও ব্যায়াম
৩. ক্যালরী খরচ ও ক্যালরী গ্রহণ সর্ম্পকে ধারণা

এস. এন. সম্পা
পুষ্টিবিদ, শমরিতা হাসপাতাল, পান্থপথ, ঢাকা
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, জানুয়ারী ১৬, ২০১০
হাঁটার পরও ওজন নিয়ন্ত্রণে না আসার কারণ ক্যালরী খরচের তুলনায় ক্যালরী গ্রহণ বেশি হওয়া।
হিসেব র্চাট
১ ঘন্টায় হাঁটায় ক্যালরী খরচ ৩১৫
১০০ গ্রাম বাদাম = ক্যালরী গ্রহণ ৭০০
১৮০ গ্রাম চকলেট = ক্যালরী গ্রহণ ৬০০
১১০ গ্রাম ফ্রেঞ্চফ্রাই = ক্যালরী গ্রহণ ৪০০
২৩০ গ্রাম ভাত = ক্যালরী গ্রহণ ৩২০
১টি হটডগ = ক্যালরী গ্রহণ ৩৬০
১টি বারগার = ক্যালরী গ্রহণ ৫২০
২০০ গ্রাম পিজা = ক্যালরী গ্রহণ ৬৫০
১৫০ গ্রাম পেস্ট্রি = ক্যালরী গ্রহণ ৫০০
১ কাপ মিষ্টি দই = ক্যালরী গ্রহণ ৪০০
১ কাপ ডিমের হালুয়া = ক্যালরী গ্রহণ ৭০০
১ কাপ হালিম = ক্যালরী গ্রহণ ৫৩০
১টি সমুচা/সিঙ্গারা = ক্যালরী গ্রহণ ২২০
ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য আমাদের খাদ্যের ক্যালরী খরচ ও গ্রহণের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ওজন কমানোর চিকিৎসাঃ
১. সঠিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা (ডায়েট র্চাট),
২. হাঁটা ও ব্যায়াম
৩. ক্যালরী খরচ ও ক্যালরী গ্রহণ সর্ম্পকে ধারণা
এস. এন. সম্পা
পুষ্টিবিদ, শমরিতা হাসপাতাল, পান্থপথ, ঢাকা
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, জানুয়ারী ১৬, ২০১০
- See more at: http://www.ebanglahealth.com/2264#sthash.gt3upGp4.dpuf

Labels: ,

Wednesday, April 29, 2015

সুস্থ থাকতে যোগাসন

যোগাভ্যাস করলে শরীরের গঠন, একাগ্রতা ও মনে সতেজতা ঠিক থাকে। নিয়মিত যোগাসন করতে পারেন। কয়েকটি আসন কিভাবে করবেন আর উপকারিতা কী জানালেন যোগ প্রশিক্ষক মামুনুর রশিদ

উৎকটাসন

উপকারিতা
পায়ের পেশি শক্ত করে, হিপ জয়েন্ট নমনীয় করে পায়ের বাত, আর্থ্রাইটিসসহ বিভিন্ন রোগের ভালো উপকার পাওয়া যায়।

করার নিয়ম
দুই পায়ের পাতা ৬ ইঞ্চি ফাঁক করে দাঁড়ান। দুই হাত সোজা করে কাঁধ বরাবর রেখে সামনে আনুন। হাতের পাতা নিচের দিকে থাকবে। পায়ের পাতা মাটিতে থাকবে। এবার সোজা হয়ে পায়ের আঙুলের ওপর জোর দিয়ে বসতে থাকুন। গোড়ালি মাটি থেকে উঠে থাকবে। মনে হবে যেন একটি চেয়ারে বসে আছেন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। এভাবে দিনে ৫ থেকে ১০ বার করুন।
 গুরুড়াসন

সিটআপ

উপকারিতা
মেরুদণ্ডের নমনীয়তা ধরে রাখে। তলপেটের মেদ কমায় ও মানসিক অবসাদ দূর করে।

কিভাবে করবেন
মাটিতে চিত হয়ে শুয়ে শ্বাস নিতে নিতে উঠে বসুন। একই সঙ্গে দুটি হাত মাথার ওপরে তুলুন। পায়ের গোড়ালি মাটির সঙ্গে লেগে থাকবে। তারপর নিঃশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে হাতের তালু দিয়ে পায়ের আঙুল ধরার চেষ্টা করুন। আপনার কপাল হাঁটু স্পর্শ করবে। না হলে দুই কনুই দিয়ে মাটি স্পর্শ করার চেষ্টা করুন। আবার দুই হাত কানের পেছনে মাথার ওপর রেখে শুয়ে পড়ুন। এভাবে দিনে ৩ বার করুন।

 পবন মুক্তাসন

উপকারিতা
এই আসন করলে পেটের মধ্যে বায়ু জমতে পারে না কিংবা কোনো রকম বায়ু হলেও তা নিরাময় হয়ে যায়। হিপ জয়েন্টের নমনীয়তা বাড়ায়। তলপেট, থাই ও নিতম্বের স্থিতিস্থাপকতাও বাড়ে। হাঁপানির জন্য উপকারী।


কিভাবে করবেন
মাটিতে চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। এবার ডান হাঁটু ভেঙে ধীরে ধীরে বুকের কাছে নিয়ে আসুন। দুই হাতে তালু ও আঙুল দিয়ে হাঁটু থেকে দুই ইঞ্চি নিচে পা ধরুন। দুটো কনুই শরীরের কাছাকাছি থাকবে। কাঁধ ও মাথা মাটিতে থাকবে। থুতনি নিচের দিকে রাখুন। পায়ের পাতা শক্ত করবেন না। বাঁ পা ও মেরুদণ্ড মাটির সঙ্গে লেগে থাকবে। তলপেটে চাপ পড়বে। মনে মনে ১০ গুনুন। এবার একইভাবে বাঁ পায়ে অভ্যাস করুন। এরপর দুই পা একসঙ্গে ভাঁজ করে বুকের কাছে আনুন। এভাবে দিনে ১০ থেকে ১৫ বার করুন।

Labels:

এই সময়ে যোগব্যায়াম

ভুজঙ্গাসন শরীর ও মনের সৌন্দর্যের জন্য নিয়মিত যোগব্যায়ামের বিকল্প নেই। এমনকি এই রমজান মাসেও করতে পারেন যোগব্যায়াম। যোগব্যায়ামের ভুজঙ্গাসন ও শলভাসন করতে পারেন এ সময়। বাংলাদেশ ইয়োগা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ হারুন এ দুটি আসন অভ্যাস করার পদ্ধতিটি বলেন—
 ভুজঙ্গাসন

 এই আসনটি আপনি নিজেই ঘরে বসে করতে পারেন।

পদ্ধতি
১. প্রথমে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এ সময় দুই পায়ের পাতা জোড়া থাকবে। হাত দুটো শরীরের দুই পাশে লাগান। তখন হাতের তালু ওপরের দিকে ফেরানো থাকবে। পা, হাঁটু ও নিতম্ব আঁটসাঁট রাখুন এ সময়।
২. হাত দুটো দুই কাঁধের বরাবর নিয়ে তালুর ওপর ভর দিয়ে মাটিতে রাখুন। আঙুলগুলো সামনের দিকে ফেরান এবং গায়ে গায়ে লাগিয়ে রাখুন। এ সময় কনুই দুটোও গায়ের সঙ্গে লেগে থাকবে।
৩. হাতের তালুর ওপর অল্প ভর দিয়ে চিবুক ওপরে তুলুন।
৪. পা থেকে নাভি পর্যন্ত শরীরের নিচের অংশ মাটিতে রেখে দেহের ওপরের অংশ হাতের ওপর বেশি জোর না দিয়ে শুধু বুক ও কোমরের ওপর জোর দিয়ে ধীরে ধীরে দম নিতে নিতে ওপরে তুলুন।
৫. শুধু মেরুদণ্ডের জোরেই পিঠটাকে যতটুকু সম্ভব ধনুকের মতো বাঁকান এবং নাভি দিয়ে মাটির ওপর চাপ দিন।
৬. শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ৩০ সেকেন্ড থাকুন।
৭. শরীরটাকে ধীরে ধীরে দম ছাড়তে ছাড়তে মাটিতে নামান।
৮. হাত দুটো দুই পাশে গায়ের সঙ্গে আগের মতো লাগিয়ে রাখুন এ সময়।
৯. এবার মুখটাকে যেকোনো এক দিকে ঘুরিয়ে নিন।
১০. ৩০ সেকেন্ড শবাসনে বিশ্রাম নিন। এই হলো একবার। এভাবে তিনবার করুন।

উপকারিতা
এই আসনটি উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য উপকারী। পিঠ ও মেরুদণ্ডের ব্যথা উপশমেও সহায়ক। তা ছাড়া মেয়েদের কোমর ও পেটের ব্যথার ক্ষেত্রেও উপকারী।
 শলভাসন

এই আসনটি উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য উপকারী। পিঠ ও মেরুদণ্ডের ব্যথা উপশমেও সহায়ক। তা ছাড়া মেয়েদের কোমর ও পেটের ব্যথার ক্ষেত্রেও উপকারী।
শলভাসন
- See more at: http://www.ebanglahealth.com/3569#sthash.gGEwEABg.dpuf

ভুজঙ্গাসন করার পর শলভাসনটিও করতে পারেন।

পদ্ধতি
১. প্রথমে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন।
২. দুই হাত সোজা করে পেট আর দুই ঊরুর নিচে রাখুন।
৩. হাতের তালু দুটো মাটিতে সমান করে পাতা থাকবে এ সময়। আঙুলগুলোও গায়ে গায়ে লেগে থাকবে।
৪. এবার দুই পা সোজা করুন।
৫. ঊরু ও নিতম্বের পেশি শক্ত করে দুই হাতের তালুর ওপর অল্প ভর দিয়ে পা একটু ফাঁকা করে যতটুকু সম্ভব ধীরে ধীরে দম নিতে নিতে ওপরে তুলুন।
৬. এ অবস্থায় লক্ষ রাখুন, যাতে পায়ের আঙুল লাগানো থাকে, হাঁটু যেন বেঁকে না যায় এবং কাঁধ যেন ওপরে না উঠে যায়।
৭. পেটের ওপর ভর রাখুন।
৮. শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে এ অবস্থায় ৩০ সেকেন্ড অবস্থান করুন।
৯. এবার সমস্ত শরীর শিথিল করে দম ছাড়তে ছাড়তে পা দুটো মাটিতে নামান।
১০. হাত পাশে সরিয়ে উপুড় হয়ে শবাসনে ৩০ সেকেন্ড অবস্থান করুন। এভাবে তিনবার করুন।
১১. এই আসনটি করার সময় যাঁরা দুই পা একসঙ্গে তুলতে পারবেন না, তাঁরা এক পা তুলবেন। প্রথমে ডান পা তুলুন আগের মতো এবং ডান পা নামিয়ে বাঁ পায়ে একইভাবে করুন। এভাবে এক পা তুলে শলভাসন করতে পারেন।

উপকারিতা
শলভাসন অভ্যাসের মাধ্যমে কোমর ও নিতম্বের অতিরিক্ত মেদ কমিয়ে ফেলা যায়। মেরুদণ্ড ও কোমরের ব্যথা উপশমে সহায়ক। এ ছাড়া এর মাধ্যমে হূদযন্ত্র ও হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়।

লক্ষ করুন
রমজানের সময় সেহিরর পর ভোরে যোগ্যব্যায়াম না করাই ভালো। দুপুরের দিকে যোগব্যায়ামের অভ্যাস করলেই উপকার পাওয়া যায় বেশি।

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ১৭, ২০১০

ভুজঙ্গাসন
ভুজঙ্গাসন শরীর ও মনের সৌন্দর্যের জন্য নিয়মিত যোগব্যায়ামের বিকল্প নেই। এমনকি এই রমজান মাসেও করতে পারেন যোগব্যায়াম। যোগব্যায়ামের ভুজঙ্গাসন ও শলভাসন করতে পারেন এ সময়। বাংলাদেশ ইয়োগা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ হারুন এ দুটি আসন অভ্যাস করার পদ্ধতিটি বলেন— - See more at: http://www.ebanglahealth.com/3569#sthash.gGEwEABg.dpuf

Labels: ,

যোগব্যায়াম: শরীর ও মনের সৌন্দর্যে

সুন্দর মনের বসবাস সুস্থ দেহের মধ্যেই। মন বা শরীর যেটির সৌন্দর্যের কথাই বলি না কেন, দুটোই নির্ভর করে ব্যায়ামের ওপর। বিশেষ করে যোগব্যায়ামের মাধ্যমে দেহ ও মনের স্বাস্থ্য এবং সৌন্দর্য সহজেই ধরে রাখা যায়। বারডেম হাসপাতাল ও ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজের ল্যাবরেটরি সার্ভিসেসের পরিচালক অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী বলেন, ব্যায়ামের মাধ্যমে আমাদের মন সজীব হয়। যখন আমাদের মন সতেজ থাকে, তখন এমনি এমনিই আমাদের শরীরও ভালো হয়ে যায়। তাই নিরোগ দেহের জন্য সব বয়সী মানুষই যোগব্যায়াম করতে পারে। তা ছাড়া ওষুধের পাশাপাশি যোগব্যায়াম অনুষঙ্গ হিসেবে ভালো কাজে দেয়।
বাংলাদেশ ইয়োগা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. হারুন বলেন, ‘বর্তমান চিকিৎসাবিজ্ঞান, শৈল্পিক জীবন অর্থাৎ সায়েন্স অ্যান্ড আর্ট অফ লিভিংয়ের আলোকে দেখা যায়, আমাদের স্বাস্থ্য, সৌন্দর্য, মেধার বিকাশ ও রোগ থেকে মুক্তির জন্য ইয়োগাচর্চার কোনো বিকল্প নেই।’ তিনি পাঁচ থেকে ৯৯ বছর বয়সী সব মানুষকে বয়স ও শরীরের অবস্থা অনুযায়ী যোগব্যায়াম করার পরামর্শ দেন। যোগব্যায়াম করার ক্ষেত্রে তিনি কিছু বিষয় খেয়াল রাখারও পরামর্শ দেন।
 যোগব্যায়াম করার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হচ্ছে ভোরবেলা। তবে সন্ধ্যার দিকেও করা যেতে পারে।
 ব্যায়াম করার সময় পোশাক যেন ব্যায়ামোপযোগী হয়, তা খেয়াল রাখুন। একদম চাপা আবার খুব বেশি ঢিলেঢালা পোশাক নয়, বরং হালকা ঢিলেঢালা পোশাক নির্বাচন করুন।
 কোমল বা নরম কাপড়ের ট্রাউজার এবং সুতি বা কোমল কাপড়ের ফতুয়া বা টি-শার্ট পরতে পারেন।
 ব্যায়াম করার সময় ব্রেসলেট, চুড়ি, আংটি, নূপুর, চেইন—এ ধরনের অলংকার খুলে নিলে আরাম বোধ করবেন।
 ছেলেদের চুল সামনে এলে ব্যায়ামের সময়টায় তা রাউন্ড ব্যান্ড দিয়ে আটকে নিতে পারেন। আর মেয়েরা চুলটা খোঁপা করে বা ওপরে উঠিয়ে বেঁধে নিন।
 যোগব্যায়াম করার সময় অন্য সব চিন্তা থেকে নিজেকে একটু দূরে সরিয়ে রাখুন। কেবল ব্যায়ামের দিকেই মনোযোগ দিন।
 যোগব্যায়ামটা শুরু করুন খুব সহজ কোনো আসন থেকে। তারপর ধীরে ধীরে কঠিন আসলগুলো চর্চা করে ফেলুন।
 যোগব্যায়ামের সব আসনই যে আপনার ক্ষেত্রে উপযুক্ত হবে, তা নয়। যেটি করতে বেশি কষ্ট হচ্ছে, সেটি বাদ দিন।
 যে স্থানটিতে যোগব্যায়াম করবেন সেটি যেন যথেষ্ট খোলামেলা হয় এবং পর্যাপ্ত আলোবাতাস থাকে।
 ব্যায়ামের ফলে কোনো শারীরিক সমস্যা হচ্ছে কি না, সেটি খেয়াল রাখুন।
 সঠিক পদ্ধতিতে যোগব্যায়াম করুন। অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের কাছে চর্চা করতে পারেন অথবা কোনো প্রশিক্ষকের দেওয়া পদ্ধতির ধারাগুলো খুব ভালোভাবে খেয়াল করে পরে নিজে নিজে চর্চা করুন।
আমাদের নকশার নিয়মিত পাঠকদের জন্য এবারের আয়োজনে রইল যোগব্যায়ামের একটি আসন— ‘ত্রিকোণাসন’। এটি যোগব্যায়ামের খুব গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি আসনের মধ্যে একটি। এ আসনটির মাধ্যম আপনি কোমরের দুই পাশের অতিরিক্ত মেদ কমিয়ে ফেলতে পারবেন। আপনার দেহের সুন্দর একটি কাঠামো গঠনে সহায়ক এ আসনটি। যাদের কিডনির সমস্যা আছে, তারাও এটি অভ্যাস করলে উপকার পাবেন।
বাংলাদেশ ইয়োগা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. হারুন জানিয়েছেন ত্রিকোণাসনের সঠিক নিয়মটি। আপনি নিজে ঘরে বসেই করে নিতে পারেন এ অভ্যাসটি।
 প্রথমে তাড়াসনে দাঁড়ান।
 আপনার ডান পা দেড় ফুট ডান দিকে ও বাঁ পা দেড় ফুট বাঁ-দিকে নিন।
 দুই হাত সোজা করে দুই পাশের কাঁধ সমান উঁচুতে তুলুন। খেয়াল রাখুন, আপনার হাতের তালু দুটো যেন নিচের দিকে একই সরলরেখায় থাকে।
 ডান পায়ের পাতা ডান দিকে ৯০ ডিগ্রি এবং বাঁ পায়ের পাতা ৩০ থেকে ৪৫ ডিগ্রি ডান দিকে ঘুরিয়ে নিন। এ সময় পায়ের পাতাটি যেন টানটান ও আঁটসাট থাকে।
 এবার নিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে শরীরটা কোমর থেকে ওপরের অংশে ধীরে ধীরে ডান দিকে বাঁকান এবং ডান হাত দিয়ে ডান পায়ের গোড়ালি ছোঁয়ার চেষ্টা করুন। পাশাপাশি বাম হাত সোজা টানটান করে কাঁধের সঙ্গে এক সরলরেখায় রাখুন। আপনার দৃষ্টি এ সময় বাঁ-হাতের বুড়ো আঙ্গুলের দিকে দিন।
 আপনার শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ৩০ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন।
 নিঃশ্বাস নিতে নিতে কোমরের ওপরের অংশ আগের মতো সোজা করুন ও ডান হাতটি তুলে পায়ের পাতা আগের মতো সোজা করুন। দুই হাত একই সরলরেখায় আনুন।
 এবার একইভাবে বাঁ-দিকে করুন ও এরপর ৩০ সেকেন্ড হাত-পা সোজা করে নড়াচড়া ছাড়া অসমান্তরালভাবে মাটিতে শুয়ে থাকুন ৩০ সেকেন্ড। এটি হচ্ছে শবাসন। পুরো প্রক্রিয়াটি এভাবে তিনবার করুন।

খেয়াল রাখুন
এই যোগব্যায়ামটি করার সময় আপনি আসনে গিয়ে যতক্ষণ স্থির হয়ে থাকবেন, ঠিক একই সময় নিয়ে শবাসনে বিশ্রাম নিন।

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ১৩, ২০১০
সুন্দর মনের বসবাস সুস্থ দেহের মধ্যেই। মন বা শরীর যেটির সৌন্দর্যের কথাই বলি না কেন, দুটোই নির্ভর করে ব্যায়ামের ওপর। বিশেষ করে যোগব্যায়ামের মাধ্যমে দেহ ও মনের স্বাস্থ্য এবং সৌন্দর্য সহজেই ধরে রাখা যায়। বারডেম হাসপাতাল ও ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজের ল্যাবরেটরি সার্ভিসেসের পরিচালক অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী বলেন, ব্যায়ামের মাধ্যমে আমাদের মন সজীব হয়। যখন আমাদের মন সতেজ থাকে, তখন এমনি এমনিই আমাদের শরীরও ভালো হয়ে যায়। তাই নিরোগ দেহের জন্য সব বয়সী মানুষই যোগব্যায়াম করতে পারে। তা ছাড়া ওষুধের পাশাপাশি যোগব্যায়াম অনুষঙ্গ হিসেবে ভালো কাজে দেয়।
বাংলাদেশ ইয়োগা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. হারুন বলেন, ‘বর্তমান চিকিৎসাবিজ্ঞান, শৈল্পিক জীবন অর্থাৎ সায়েন্স অ্যান্ড আর্ট অফ লিভিংয়ের আলোকে দেখা যায়, আমাদের স্বাস্থ্য, সৌন্দর্য, মেধার বিকাশ ও রোগ থেকে মুক্তির জন্য ইয়োগাচর্চার কোনো বিকল্প নেই।’ তিনি পাঁচ থেকে ৯৯ বছর বয়সী সব মানুষকে বয়স ও শরীরের অবস্থা অনুযায়ী যোগব্যায়াম করার পরামর্শ দেন। যোগব্যায়াম করার ক্ষেত্রে তিনি কিছু বিষয় খেয়াল রাখারও পরামর্শ দেন।
 যোগব্যায়াম করার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হচ্ছে ভোরবেলা। তবে সন্ধ্যার দিকেও করা যেতে পারে।
 ব্যায়াম করার সময় পোশাক যেন ব্যায়ামোপযোগী হয়, তা খেয়াল রাখুন। একদম চাপা আবার খুব বেশি ঢিলেঢালা পোশাক নয়, বরং হালকা ঢিলেঢালা পোশাক নির্বাচন করুন।
 কোমল বা নরম কাপড়ের ট্রাউজার এবং সুতি বা কোমল কাপড়ের ফতুয়া বা টি-শার্ট পরতে পারেন।
 ব্যায়াম করার সময় ব্রেসলেট, চুড়ি, আংটি, নূপুর, চেইন—এ ধরনের অলংকার খুলে নিলে আরাম বোধ করবেন।
 ছেলেদের চুল সামনে এলে ব্যায়ামের সময়টায় তা রাউন্ড ব্যান্ড দিয়ে আটকে নিতে পারেন। আর মেয়েরা চুলটা খোঁপা করে বা ওপরে উঠিয়ে বেঁধে নিন।
 যোগব্যায়াম করার সময় অন্য সব চিন্তা থেকে নিজেকে একটু দূরে সরিয়ে রাখুন। কেবল ব্যায়ামের দিকেই মনোযোগ দিন।
 যোগব্যায়ামটা শুরু করুন খুব সহজ কোনো আসন থেকে। তারপর ধীরে ধীরে কঠিন আসলগুলো চর্চা করে ফেলুন।
 যোগব্যায়ামের সব আসনই যে আপনার ক্ষেত্রে উপযুক্ত হবে, তা নয়। যেটি করতে বেশি কষ্ট হচ্ছে, সেটি বাদ দিন।
 যে স্থানটিতে যোগব্যায়াম করবেন সেটি যেন যথেষ্ট খোলামেলা হয় এবং পর্যাপ্ত আলোবাতাস থাকে।
 ব্যায়ামের ফলে কোনো শারীরিক সমস্যা হচ্ছে কি না, সেটি খেয়াল রাখুন।
 সঠিক পদ্ধতিতে যোগব্যায়াম করুন। অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের কাছে চর্চা করতে পারেন অথবা কোনো প্রশিক্ষকের দেওয়া পদ্ধতির ধারাগুলো খুব ভালোভাবে খেয়াল করে পরে নিজে নিজে চর্চা করুন।
আমাদের নকশার নিয়মিত পাঠকদের জন্য এবারের আয়োজনে রইল যোগব্যায়ামের একটি আসন— ‘ত্রিকোণাসন’। এটি যোগব্যায়ামের খুব গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি আসনের মধ্যে একটি। এ আসনটির মাধ্যম আপনি কোমরের দুই পাশের অতিরিক্ত মেদ কমিয়ে ফেলতে পারবেন। আপনার দেহের সুন্দর একটি কাঠামো গঠনে সহায়ক এ আসনটি। যাদের কিডনির সমস্যা আছে, তারাও এটি অভ্যাস করলে উপকার পাবেন।
বাংলাদেশ ইয়োগা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. হারুন জানিয়েছেন ত্রিকোণাসনের সঠিক নিয়মটি। আপনি নিজে ঘরে বসেই করে নিতে পারেন এ অভ্যাসটি।
 প্রথমে তাড়াসনে দাঁড়ান।
 আপনার ডান পা দেড় ফুট ডান দিকে ও বাঁ পা দেড় ফুট বাঁ-দিকে নিন।
 দুই হাত সোজা করে দুই পাশের কাঁধ সমান উঁচুতে তুলুন। খেয়াল রাখুন, আপনার হাতের তালু দুটো যেন নিচের দিকে একই সরলরেখায় থাকে।
 ডান পায়ের পাতা ডান দিকে ৯০ ডিগ্রি এবং বাঁ পায়ের পাতা ৩০ থেকে ৪৫ ডিগ্রি ডান দিকে ঘুরিয়ে নিন। এ সময় পায়ের পাতাটি যেন টানটান ও আঁটসাট থাকে।
 এবার নিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে শরীরটা কোমর থেকে ওপরের অংশে ধীরে ধীরে ডান দিকে বাঁকান এবং ডান হাত দিয়ে ডান পায়ের গোড়ালি ছোঁয়ার চেষ্টা করুন। পাশাপাশি বাম হাত সোজা টানটান করে কাঁধের সঙ্গে এক সরলরেখায় রাখুন। আপনার দৃষ্টি এ সময় বাঁ-হাতের বুড়ো আঙ্গুলের দিকে দিন।
 আপনার শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ৩০ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন।
 নিঃশ্বাস নিতে নিতে কোমরের ওপরের অংশ আগের মতো সোজা করুন ও ডান হাতটি তুলে পায়ের পাতা আগের মতো সোজা করুন। দুই হাত একই সরলরেখায় আনুন।
 এবার একইভাবে বাঁ-দিকে করুন ও এরপর ৩০ সেকেন্ড হাত-পা সোজা করে নড়াচড়া ছাড়া অসমান্তরালভাবে মাটিতে শুয়ে থাকুন ৩০ সেকেন্ড। এটি হচ্ছে শবাসন। পুরো প্রক্রিয়াটি এভাবে তিনবার করুন।
খেয়াল রাখুন
এই যোগব্যায়ামটি করার সময় আপনি আসনে গিয়ে যতক্ষণ স্থির হয়ে থাকবেন, ঠিক একই সময় নিয়ে শবাসনে বিশ্রাম নিন।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ১৩, ২০১০
- See more at: http://www.ebanglahealth.com/3564#sthash.FTCFqMRT.dpuf
সুন্দর মনের বসবাস সুস্থ দেহের মধ্যেই। মন বা শরীর যেটির সৌন্দর্যের কথাই বলি না কেন, দুটোই নির্ভর করে ব্যায়ামের ওপর। বিশেষ করে যোগব্যায়ামের মাধ্যমে দেহ ও মনের স্বাস্থ্য এবং সৌন্দর্য সহজেই ধরে রাখা যায়। বারডেম হাসপাতাল ও ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজের ল্যাবরেটরি সার্ভিসেসের পরিচালক অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী বলেন, ব্যায়ামের মাধ্যমে আমাদের মন সজীব হয়। যখন আমাদের মন সতেজ থাকে, তখন এমনি এমনিই আমাদের শরীরও ভালো হয়ে যায়। তাই নিরোগ দেহের জন্য সব বয়সী মানুষই যোগব্যায়াম করতে পারে। তা ছাড়া ওষুধের পাশাপাশি যোগব্যায়াম অনুষঙ্গ হিসেবে ভালো কাজে দেয়।
বাংলাদেশ ইয়োগা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. হারুন বলেন, ‘বর্তমান চিকিৎসাবিজ্ঞান, শৈল্পিক জীবন অর্থাৎ সায়েন্স অ্যান্ড আর্ট অফ লিভিংয়ের আলোকে দেখা যায়, আমাদের স্বাস্থ্য, সৌন্দর্য, মেধার বিকাশ ও রোগ থেকে মুক্তির জন্য ইয়োগাচর্চার কোনো বিকল্প নেই।’ তিনি পাঁচ থেকে ৯৯ বছর বয়সী সব মানুষকে বয়স ও শরীরের অবস্থা অনুযায়ী যোগব্যায়াম করার পরামর্শ দেন। যোগব্যায়াম করার ক্ষেত্রে তিনি কিছু বিষয় খেয়াল রাখারও পরামর্শ দেন।
 যোগব্যায়াম করার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হচ্ছে ভোরবেলা। তবে সন্ধ্যার দিকেও করা যেতে পারে।
 ব্যায়াম করার সময় পোশাক যেন ব্যায়ামোপযোগী হয়, তা খেয়াল রাখুন। একদম চাপা আবার খুব বেশি ঢিলেঢালা পোশাক নয়, বরং হালকা ঢিলেঢালা পোশাক নির্বাচন করুন।
 কোমল বা নরম কাপড়ের ট্রাউজার এবং সুতি বা কোমল কাপড়ের ফতুয়া বা টি-শার্ট পরতে পারেন।
 ব্যায়াম করার সময় ব্রেসলেট, চুড়ি, আংটি, নূপুর, চেইন—এ ধরনের অলংকার খুলে নিলে আরাম বোধ করবেন।
 ছেলেদের চুল সামনে এলে ব্যায়ামের সময়টায় তা রাউন্ড ব্যান্ড দিয়ে আটকে নিতে পারেন। আর মেয়েরা চুলটা খোঁপা করে বা ওপরে উঠিয়ে বেঁধে নিন।
 যোগব্যায়াম করার সময় অন্য সব চিন্তা থেকে নিজেকে একটু দূরে সরিয়ে রাখুন। কেবল ব্যায়ামের দিকেই মনোযোগ দিন।
 যোগব্যায়ামটা শুরু করুন খুব সহজ কোনো আসন থেকে। তারপর ধীরে ধীরে কঠিন আসলগুলো চর্চা করে ফেলুন।
 যোগব্যায়ামের সব আসনই যে আপনার ক্ষেত্রে উপযুক্ত হবে, তা নয়। যেটি করতে বেশি কষ্ট হচ্ছে, সেটি বাদ দিন।
 যে স্থানটিতে যোগব্যায়াম করবেন সেটি যেন যথেষ্ট খোলামেলা হয় এবং পর্যাপ্ত আলোবাতাস থাকে।
 ব্যায়ামের ফলে কোনো শারীরিক সমস্যা হচ্ছে কি না, সেটি খেয়াল রাখুন।
 সঠিক পদ্ধতিতে যোগব্যায়াম করুন। অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের কাছে চর্চা করতে পারেন অথবা কোনো প্রশিক্ষকের দেওয়া পদ্ধতির ধারাগুলো খুব ভালোভাবে খেয়াল করে পরে নিজে নিজে চর্চা করুন।
আমাদের নকশার নিয়মিত পাঠকদের জন্য এবারের আয়োজনে রইল যোগব্যায়ামের একটি আসন— ‘ত্রিকোণাসন’। এটি যোগব্যায়ামের খুব গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি আসনের মধ্যে একটি। এ আসনটির মাধ্যম আপনি কোমরের দুই পাশের অতিরিক্ত মেদ কমিয়ে ফেলতে পারবেন। আপনার দেহের সুন্দর একটি কাঠামো গঠনে সহায়ক এ আসনটি। যাদের কিডনির সমস্যা আছে, তারাও এটি অভ্যাস করলে উপকার পাবেন।
বাংলাদেশ ইয়োগা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. হারুন জানিয়েছেন ত্রিকোণাসনের সঠিক নিয়মটি। আপনি নিজে ঘরে বসেই করে নিতে পারেন এ অভ্যাসটি।
 প্রথমে তাড়াসনে দাঁড়ান।
 আপনার ডান পা দেড় ফুট ডান দিকে ও বাঁ পা দেড় ফুট বাঁ-দিকে নিন।
 দুই হাত সোজা করে দুই পাশের কাঁধ সমান উঁচুতে তুলুন। খেয়াল রাখুন, আপনার হাতের তালু দুটো যেন নিচের দিকে একই সরলরেখায় থাকে।
 ডান পায়ের পাতা ডান দিকে ৯০ ডিগ্রি এবং বাঁ পায়ের পাতা ৩০ থেকে ৪৫ ডিগ্রি ডান দিকে ঘুরিয়ে নিন। এ সময় পায়ের পাতাটি যেন টানটান ও আঁটসাট থাকে।
 এবার নিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে শরীরটা কোমর থেকে ওপরের অংশে ধীরে ধীরে ডান দিকে বাঁকান এবং ডান হাত দিয়ে ডান পায়ের গোড়ালি ছোঁয়ার চেষ্টা করুন। পাশাপাশি বাম হাত সোজা টানটান করে কাঁধের সঙ্গে এক সরলরেখায় রাখুন। আপনার দৃষ্টি এ সময় বাঁ-হাতের বুড়ো আঙ্গুলের দিকে দিন।
 আপনার শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ৩০ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন।
 নিঃশ্বাস নিতে নিতে কোমরের ওপরের অংশ আগের মতো সোজা করুন ও ডান হাতটি তুলে পায়ের পাতা আগের মতো সোজা করুন। দুই হাত একই সরলরেখায় আনুন।
 এবার একইভাবে বাঁ-দিকে করুন ও এরপর ৩০ সেকেন্ড হাত-পা সোজা করে নড়াচড়া ছাড়া অসমান্তরালভাবে মাটিতে শুয়ে থাকুন ৩০ সেকেন্ড। এটি হচ্ছে শবাসন। পুরো প্রক্রিয়াটি এভাবে তিনবার করুন।
খেয়াল রাখুন
এই যোগব্যায়ামটি করার সময় আপনি আসনে গিয়ে যতক্ষণ স্থির হয়ে থাকবেন, ঠিক একই সময় নিয়ে শবাসনে বিশ্রাম নিন।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ১৩, ২০১০
- See more at: http://www.ebanglahealth.com/3564#sthash.FTCFqMRT.dpuf

Labels: ,

জেনেনিন কিছু ভেষজ উদ্ভিদের ঔষধী গুন

আমাদের চারপাশে বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ রয়েছে। এর প্রায় সকলই মানুষের কল্যানে আল্লাহর সৃষ্টি। কিন্তু কোন উদ্ভিদে কি গুন তা আমরা সবাই জানি না। প্রত্যকটি ভেজষ উদ্ভিদেরই কিছু না কিছু ঔষধী গুন রয়েছে। বাংলাদেশে প্রায় পাঁচ হাজার উদ্ভিদ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সাড়ে পাঁচ শ ঔষধি উদ্ভিদ প্রজাতি বা ভেষজ। ঔষুধ শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ভেষজ উদ্ভিদের চাহিদা সারা বিশ্বের মতো আমাদের দেশে ক্রমেই বেড়ে চলেছে। ইউনানি, আয়ুর্বেদ ও হোমিওপ্যাথি ওষুধ উৎপাদনে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহারের পাশাপাশি বিউটি পার্লার ও প্রসাধনীতে এখন প্রচুর ভেষজ উপাদান ব্যবহৃত হচ্ছে।

বাংলাদেশে স্বল্পসময়ে কম জমিতে অধিক হারে উৎপাদন করে অধিক মুনাফা অর্জন করা সম্ভব_এমন ঔষধি রয়েছে ২৫টির মতো। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে_পুদিনা, ঘৃতকুমারী, থানকুনি, অর্জুন, আমলকী, হরীতকী, কালমেঘ, নিম, বহেড়া, কালিজিরা, বসাক, উলটকমল, অশ্বগন্ধা, সর্পগন্ধা, তুলসী, মেথি, সোনাপাতা, যষ্টিমধু, বাবলা, শতমূলী, ইসবগুল, আদা, রসুন, হলুদ, পিঁয়াজ ইত্যাদি।

নীচে কিছু ভেজষ উদ্ভিদের ঔষধী গুনাগন তুলে ধরা হলো:

বাসক:

বাসক একটি ভারত উপমহাদেশীয় ভেষজ উদ্ভিদ। আর্দ্র, সমতলভূমিতে এটি বেশী জন্মে। লোকালয়ের কাছেই জন্মে বেশী। হালকা হলুদে রংয়ের ডালপালায়ক্ত ১ থেকে ২ মি. উঁচু গাছ, ঋতুভেদে সর্ব্বদাই প্রায় সবুজ থাকে। বল্লমাকারের পাতা বেশ বড়। ফুল ঘন, ছোট স্পাইকের ওপর ফোটে। স্পাইকের বৃন্ত পাতার চেয়ে ছোট। স্পাইকের ওপর পাতার আকারে উপপত্র থাকে যার গায়ে ঘন এবং মোটা শিরা থাকে। ফুলের দল (কোরোল্লা বা পত্রমূলাবর্ত) সাদা বর্ণ। তার ওপর বেগুনী দাগ থাকে। ফল সুপারি আকৃতির; বীজে ভর্তি।
বাসকের ঔষধী গুণ:
তাজা অথবা শুকানো পাতা ওষুধের কাজে লাগে। বাসকের পাতায় “ভাসিসিন” নামীর ক্ষারীয় পদার্থ এবং তেল থাকে। শ্বাসনালীর লালাগ্রন্থিকে সক্রিয় করে বলে বাসক শ্লেষ্মানাশক হিসেবে প্রসিদ্ধ । বাসক পাতার নির্যাস, রস বা সিরাপ শ্লেষ্মা তরল করে নির্গমে সুবিধা ক’রে দেয় বলে সর্দি, কাশি এবং শ্বাসনালীর প্রদাহমূলক ব্যাধিতে বিশেষ উপকারী। তবে অধিক মাত্রায় খেলে বমি হয়, অন্তত: বমির ভাব বা নসিয়া হয়, অস্বস্তি হয়। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় বাসকের ভেষজ গুণাবলি প্রমাণিত হয়েছে।
এর মূল, পাতা, ফুল, ছাল সবই ব্যবহার হয়।
প্রয়োগ:
১. বাসক পাতার রস ১-২ চামচ হাফ থেকে এক চামচ মধুসহ খেলে শিশুর সদির্কাশি উপকার পাওয়া যায়।
২. বাসক পাতার রস স্নানের আধ ঘন্টা আগে মাথায় কয়েকদিন মাখলে উকুন মরে যায়। আমবাত ও ব্রণশোথে (ফোঁড়ার প্রাথমিক অবস্থা) বাসক পাতা বেটে প্রলেপ দিলে ফোলা ও ব্যথা কমে যায়।
৩. যদি বুকে কফ জমে থাকে এবং তার জন্যে শ্বাসকষ্ট হলে বা কাশি হলে বাসক পাতার রস ১-২ চামচ এবং কন্টিকারীরস ১-২ চামচ, ১ চামচ মধুসহ খেলে কফ সহজে বেরিয়ে আসে।
৪. প্রস্রাবে জ্বালা-যন্ত্রনা থাকলে বাসকের ফুল বেটে ২-৩ চামচ মিছরি ১-২ চামচ সরবত করে খেলে এই রোগে উপকার পাওয়া যায়।
৫. জ্বর হলে বা অল্প জ্বর থাকলে বাসকের মূল ৫-১০ গ্রাম ধুয়ে থেঁতো করে ১০০ মিলি লিটার জলে ফোটাতে হবে।
৬. ২৫ মিলি লিটার থাকতে নামিয়ে তা ছেঁকে নিয়ে দিনে ২ বার করে খেলে জ্বর এবং কাশি দুইই চলে যায়।
৭. বাসকের কচিপাতা ১০-১২ টি এক টুকরো হলুদ একসঙ্গে বেটে দাদ বা চুলকানিতে লাগলে কয়েকদিনের মধ্যে তা সেরে যায়।
৮. বাসকপাতা বা ফুলের রস ১-২ চামচ মধু বা চিনি ১চামচসহ প্রতিদিন খেলে জন্ডিস রেগে উপকার পাওয়া যায়।
৯. পাইরিয়া বা দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়লে বাসক পাতা ২০ টি থেঁতো করে ২ কাপ জলে সিদ্ধ করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ঈষদুষ্ণ অবস্থায় কুলকুচি করলে এই রোগে উপকার পাওয়া যায়।
ভেষজ দাওয়াই:
* শিশুর পেটে কৃমি থাকলে বাসকের ছালের ক্বাথ খাওয়ালে এর উগ্র তিক্ত স্বাদ কৃমি বের হয়ে যায়।
* যাদের হাঁপানির টান আছে তারা বাসক পাতা শুকনো করে, ওই পাতা বিড়ি বা চুরুটের মতো পাকিয়ে এর সাহায্যে ধূমপান করলে শ্বাসকষ্ট প্রশমিত হয়।
* যাদের গায়ে ঘামের গন্ধ হয় তারা বাসক পাতার রস গায়ে লাগালে দুর্গন্ধ দূর হবে।
*বাসকপাতার রস ও শঙ্খচূর্ণ মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করলে রং ফরসা হবে।
* এক কলসি পানিতে তিন-চারটি বাসকপাতা ফেলে তিন-চার ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখার পর সেই পানি বিশুদ্ধ হয়ে যায়। এরপর ব্যবহার করতে পারেন।
* পাতার রস নিয়মিত খেলে খিঁচুনি রোগ দূর হয়ে যায়।
* বাসক পাতার রস মাথায় লাগালের উকুন চলে যায়।
* বাসক পাতা বা ফুলের রস এক বা দুই চামচ মধু বা চিনি দিয়ে খেলে জন্ডিস ভালো হয়।
* শরীরে দাদ থাকলে বাসক পাতার রস লাগালে ভালো হয়ে যায়।
অন্যান্য উপকারিতা:
বাসকের পাতা সবুজ খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং পাতা থেকে হলদে রং পাওয়া যায়। বাসক পাতায় এমন কিছু ক্ষারীয় পদার্থ আছে যায় ফলে ছত্রাক জন্মায় না এবং পোকামাকড় ধরে না বলে ফল প্যাকিং এবং সংরক্ষণ করার কাজে ব্যবহৃত হয়। পাতায় কিছু দুর্গন্ধ আছে বলে পগুরা মুখ দেয় না। সেই কারণে চাষ আবাদের জন্য জমি উদ্ধারের কাজে বাসকের পাতা বিশেষ উপকারী।

তেলাকুচা

তেলাকুচা একপ্রকারের ভেষজ উদ্ভিদ। বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে একে ‘কুচিলা’, তেলা, তেলাকচু, তেলাহচি, তেলাচোরা কেলাকচু, তেলাকুচা বিম্বী ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। অনেক অঞ্চলে এটি সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। গাছটির ভেষজ ব্যবহারের জন্য এর পাতা, লতা, মূল ও ফল ব্যবহৃত হয়। এটি লতানো উদ্ভিদ। এটি গাঢ় সবুজ রঙের নরম পাতা ও কাণ্ডবিশিষ্ট একটি লতাজাতীয় বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। লতার কাণ্ড থেকে আকশীর সাহায্যে অন্য গাছকে জড়িয়ে উপরে উঠে। পঞ্চভূজ আকারের পাতা গজায়, পাতা ও লতার রং সবুজ। এর ফল ও কচি ডগা খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় সেখানে। তেলাকুচায় প্রচুর বিটা-ক্যারোটিন আছে।
ঔষধি গুণাগুণ:
তেলাকুচা ফলে আছে ‘মাস্ট সেল স্টেবিলাইজিং’, ‘এনাফাইলেকটিক-রোধী’ এবং ‘এন্টিহিস্টামিন’ জাতীয় উপাদান। কবিরাজী চিকিৎসায় তেলাকুচা বেশ কিছু রোগে ব্যবহৃত হয়, যেমন- কুষ্ঠ, জ্বর, ডায়াবেটিস, শোথ (edema), হাঁপানি, ব্রংকাইটিস ও জন্ডিস।

কালমেঘ:

কালমেঘ একটি ভেষজ উদ্ভিদ। ১ সে.মি. লম্বা ফুলের রং গোলাপী। দেড় থেকে দু সে.মি. লম্বা ফল অনেকটা চিলগোজার মতন দেখতে।শিকড় ব্যতীত কালমেঘ গাছটির সব অংশই ঔষুধের কাজে লাগে। কালমেঘ অত্যন্ত তেতো এবং পুষ্টিকর। মানব দেহের রোগপ্রতিরোধী শক্তি বৃদ্ধি করে। জ্বর, কৃমি, আমাশয়, সাধারণ শারীরিক দুর্বলতা এবং বায়ু আধিক্যে কালমেঘ অত্যন্ত উপকারী।
শিশুদের যকৃৎ রোগে এবং হজমের সমস্যায় কালমেঘ ফলপ্রদ। কালমেঘের পাতা থেকে তৈরী আলুই পশ্চিম বাংলার ঘরোয়া ঔষুধ যা পেটের অসুখে শিশুদের দেওয়া হয়। টাইফয়েড রোগে এবং জীবানুরোধে কালমেঘ কার্য্করী। সাধারণ একটা বিশ্বাস ছিল যে সাপের কামড়ে কালমেঘ খুব উপকারী। পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে কথাটা ভুল। কোথাও কোথাও কালমেঘ গাছ বেটে সরষের তেলে চুবিয়ে নিয়ে চুলকানিতে লাগানো হয়। গাছের পাতার রস কোষ্ঠকাঠিন্য ও লিভার রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে।
কালমেঘ গাছের পাতার রস জ্বর, কৃমি, অজীর্ণ, লিভার প্রভৃতি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য হলে পাতার রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ানো হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীরা শিশুদের বদহজম ও লিভারের সমস্যায় প্রাচীনকাল থেকে এটি ব্যবহার করছে। এ গাছের রস রক্ত পরিষ্কারক, পাকস্থলী ও যকৃতের শক্তিবর্ধক ও রেচক হিসেবেও কাজ করে। আবার এ গাছের পাতা সিদ্ধ করে ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিলে ঘা-পাঁচড়া জাতীয় রোগ দূর হয় বলে আদিবাসীদের বিশ্বাস।

অর্জুন:

ঔষধি গুন :
ভেষজশাত্রে ঔষধি গাছ হিসাবে আর্জুনের ব্যবহার অগনিত।বলা হয়ে থাকে, বাড়িতে একটি অর্জুন গাছ থাকা আর এক জন ডাক্তার থাকা একই কথা।এর ঔষধি গুন মানবসমাজের দৃষ্টি আকর্ষন করেছে সুপ্রাচীন কাল থেকেই।শরীরের বল ফিরিয়ে আনা এবং রণাঙ্গনে মনকে উজ্জীবিত রাখতে অর্জুন ব্যবহারের উল্লেখ রয়েছে মহাভারত ও বেদ-সংহিতায়।তার পর যত দিন যাচ্ছে ততই অর্জুনের উপকারী দিক উদ্ভাবিত হচ্ছে।
* যাদের বুক ধড়ফড় করে অথচ উচ্চ রাক্তচাপ নাই, তাদের পক্ষে অর্জুন ছাল কাঁচা হলে ১০-১২ গ্রাম, শুকনা হলে ৫-৬ গ্রাম একটু ছেঁচে ২৫০ মিলি দুধ ও ৫০০ মি লি জল এর সাথে মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে আনুমানিক ১২৫ মিলি থাকতে ছেঁকে বিকেলবেলা খেলে বুক ধড়ফড়ানি কমে যায়।তবে পেটে যাতে বায়ু না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
* অর্জুন ছাল বেটে খেলে হৃৎপিন্ডের পেশি শক্তিশালী হয়, হৃৎপিন্ডের ক্ষমতা বাড়ে।এটি রক্তের কোলেষ্টরল কমায় এবং ফলত রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকে।
* বিচুর্ণ ফল মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে এবং লিভারসিরোসিসের টনিক হিসাবে ব্যাবহৃত হয়।
* অর্জুনের ছালে ট্যানিন রয়েছে, এ টানিন মুখ,জিহ্বা ও মাড়ীর প্রদাহের চিকিৎসায় ব্যাবহার হয়।এটি মাঢ়ীঢ় রক্তপাত বন্ধ করে এবং শরীরে ক্ষত, খোস পাঁচড়া দেখা দিলে অর্জুনের ছাল বেটে লাগালে সেরে যায়।
* অর্জুনের ছাল হাঁপানি, আমাশয়, ঋতুস্রাবজনিত সমস্যা, ব্যথ্যা ,প্রদর ইত্যাদি চিকিৎসায়ও উপকারী।
* এটি সংকোচ ও জ্বর নিবারক হিসাবেও কাজ করে।
* এ ছাড়া অর্জুনে saponin রয়েছে, একটি যৌন উদ্দীপনা বাড়ায়।তাই চর্ম ও যৌন রোগে অর্জুন ব্যাবহ্রত হয়।যৌন উদ্দীপনা বাড়াতেও অর্জুনের ছালের রস ব্যাবহার হয়।
* অর্জুনের ছালে essential oil রয়েছে তাই অর্জুন খাদ্যা হজম ক্ষমতা বাড়ায়।খাদ্যাতন্ত্রের ক্রিয়া স্বভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
* ক্যান্সার কোষের বর্ধন রোধকারী gallic acid,ethy gallae ও lutenolin রয়েছে অর্জুন ছালে। এ কারনে এটি ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যাহারের সুযোগ রয়েছে।

অশ্বগন্ধা:

অশ্বগন্ধা আমাদের দেশের ভেষজ উদ্ভিদের মধ্যে অন্যতম। গাছের গন্ধ ঘোড়া বা অশ্ব এর মত বলেই সংস্কৃতে একে অশ্বগন্ধা বলে। বাংলায় ও আমার অশ্বগন্ধা-ই বলে থাকি। শক্তিবর্ধক হিসেবে এবং এ্যাফ্রোডেসিয়াক হিসেবে ব্যবহৃত হয় বলেই ইংরেজিতে একে Indian Ginseng বলে। Solanaceae ফ্যামিলির গাছ অশ্বগন্ধার বৈঙ্গানিক নাম Withania somnifera (L.) Dunal. Withanine নামক রাসায়নিক উপাদান এই গাছ থেকে আলাদা করার কারণে এই গাছের নামে Withania নামকরণ করা হয়েছে। আর somnifera এসেছে somnifer থেকে যার মানে নিদ্রা আনয়নকারী। মূল এবং পাতা স্নায়ুর বিভিন্ন রোগে ব্যবহৃত হয়। এ গাছ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকায় পাওয়া যায়। নিদ্রা আনয়নকারী ঔষধ হিসেবে প্রচীন মেসোপটেমিয়া এবং মিশরে এর ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়।

তুলসী:

তুলসী একটি ঔষধিগাছ। তুলসী অর্থ যার তুলনা নেই। সুগন্ধিযুক্ত, কটু তিক্তরস, রুচিকর। এটি সর্দি, কাশি, কৃমি ও বায়ুনাশক এবং মুত্রকর, হজমকারক ও এন্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে বিশেষ করে কফের প্রাধান্যে যে সব রোগ সৃষ্টি হয় সে ক্ষেত্রে তুলসী বেশ ফলদায়ক।
ঔষধিগুণ:
শিশুদের সর্দি কাশির জন্য এটি একটি মহা ঔষধ হলেও যে কোন বয়সের মানুষই এ থেকে উপকার পেয়ে থাকে । শুধু পুজো-অর্চনাতেই লাগে না ৷ তুলসী পাতার অনেক গুণ রয়েছে ৷
* জ্বর হলে জলের মধ্যে তুলসী পাতা, গোল মরিচ এবং মিশ্রী মিশিয়ে ভাল করে সেদ্ধ করুন ৷ অথবা তিনটে দ্রব্য মিশিয়ে বড়ি তৈরি করুন ৷ দিনের মধ্যে তিন-চার বার ঐ বড়িটা জলের সঙ্গে খান ৷ জ্বর খুব তাড়াতাড়ি সেরে যাবে।
* কাশি যদি না কমে সেই ক্ষেত্রে তুলসী পাতা এবং আদা পিষে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খান ৷ এতে উপকার পাবেন ৷
* পেট খারাপ হলে তুলসীর ১০ টা পাতা সামান্য জিরের সঙ্গে পিষে ৩-৪ বার খান ৷ পায়খানা একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে, মানে পায়খানার ওই সমস্যাটা আর কি!
* মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে দিনে ৪-৫ বার তুলসী পাতা চেবান ৷
* ঘা যদি দ্রুত কমাতে চান তাহলে তুলসী পাতা এবং ফিটকিরি একসঙ্গে পিষে ঘা এর স্থানে লাগান, কমে যাবে ৷
* শরীরের কোন অংশ যদি পুড়ে যায় তাহলে তুলসীর রস এবং নারকেলের তেল ফেটিয়ে লাগান, এতে জ্বালা কমবে ৷ পোড়া জায়গাটা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে ৷ সেখানে কোন দাগ থাকবে না ৷
* ত্বকের চমক বাড়ানোর জন্য, এছাড়াও ত্বকের বলীরেখা এবং ব্রোন দূর করার জন্য তুলসী পাতা পিষে মুখে লাগান ৷
* বুদ্ধি এবং স্মরণশক্তি বাড়ানোর জন্য প্রতিদিন ৫-৭ টা তুলসী পাতা চিবান ৷
* প্রস্রাবে জ্বালা হলে তুলসী পাতার রস ২৫০ গ্রাম দুধ এবং ১৫০ গ্রাম জলের মধ্যে মিশিয়ে পান করুন ৷ উপকার পাবেন ৷
* ত্বকের সমস্যা দূর করতে তিল তেলের মধ্যে তুলসী পাতা ফেলে হালকা গরম করে ত্বকে লাগান ৷
ব্যবহার:
আমাদের দেশে ছেলেমেয়েদের সর্দি-কাশিতে তুলসী পাতার রস ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হয়। এসব ক্ষেত্রে কয়েকটি তাজা তুলসী পাতার রসের সাথে একটু আদার রস ও মধুসহ খাওয়ানো হয়। বাচ্চাদের সর্দি-কাশিতে এটি বিশেষ ফলপ্রদ। তাজা তুলসী পাতার রস মধু, আদা ও পিঁয়াজের রসের সাথে এক সাথে পান করলে সর্দি বের হয়ে যায় এবং হাপানিতে আরাম হয়।
ঔষধি গুণাগুণ 
* পেট কামড়ানো, কাশি: তুলসী পাতার রসে মধু মিশিয়ে খাওয়ালে বাচ্চাদের পেট কামড়ানো, কাশি ও লিভার দোষে উপকার পাওয়া যায়।
* ঘামাচি ও চুলকানি: তুলসী পাতা ও দুর্বার ডগা বেটে গায়ে মাখলে ঘামাচি ও চুলকানি ভাল হয়।
দাদ ও অন্যান্য চর্মরোগে: স্থানীয়ভাবে তুলসী পাতার রস দাদ ও অন্যান্য চর্মরোগে ব্যবহার করলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। পাতার রস ফোঁটা ফোঁটা করে কানে দিলে কানের ব্যথা সেরে যায়।
* ম্যালেরিয়া: পাতা ও শিকড়ের ক্বাথ ম্যালেরিয়া জ্বরের জন্য বেশ উপকারী। ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক হিসেবে প্রতিদিন সকালে গোল মরিচের সাথে তুলসী পাতার রস খেতে দেয়া হয়। যতদিন সম্ভব খাওয়া যায়।
* বসন্ত, হাম: বসন্ত, হাম প্রভৃতির পুঁজ ঠিকমত বের না হলে তুলসী পাতার রস খেলে তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসবে।
* ক্রিমি: তুলসী পাতার রসের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে ক্রিমি রোগে বেশ উপকার পাওয়া যায়। শুষ্ক তুলসী পাতার ক্বাথ সর্দি, স্বরভঙ্গ, বক্ষপ্রদাহ, উদারাময় প্রভৃতি রোগ নিরাময় করে থাকে।
* পেট ব্যথা: অজীর্ণজনিত পেট ব্যথায় তুলসী পাতার বেশ উপকার সাধন করে থাকে। এটি হজমকারক। প্রতিদিন সকালে ১৮০ গ্রাম পরিমান তুলসী পাতার রস খেলে পুরাতন জ্বর, রক্তক্ষয়, আমাশয়, রক্ত অর্শ এবং অজীর্ণ রোগ সেরে যায়।
* বাত ব্যথা: বাত ব্যথায় আক্রান্ত স্থানে তুলসী পাতার রসে ন্যাকড়া ভিজিয়ে পট্টি দিলে ব্যথা সেরে যায়।
* কীট-পতঙ্গ কামড়ালে: বোলতা, ভীমরুল, বিছা প্রভৃতি বিষাক্ত কীট-পতঙ্গ কামড়ালে ঐ স্থানে তুলসী পাতার রস গরম করে লাগালে জ্বালা-যন্ত্রণা কম হয়।
* সর্দি: যারা সহজেই সর্দিতে আক্রান্ত হয় (বিশেষ করে শিশুদের) তারা কিছুদিন ৫ ফোঁটা মধুর সাথে ১০ ফোঁটা রস খেলে সর্দি প্রবণতা দূর হয়।
তুলসী মূল শুক্র গাঢ়কারক এবং বাজীকারক। তুলসী পাতার ক্বাথ, এলাচ গুঁড়া এবং এক তোলা পরিমাণ মিছরী পান করলে ধাতুপুষ্টি সাধিত হয় যতদিন সম্ভব খাওয়া যায়। এটি অত্যন্ত ইন্দ্রিয় উত্তেজক। প্রতিদিন এক ইঞ্চি পরিমাণ তুলসী গাছের শিকড় পানের সাথে খেলে যৌনদূর্বলতা রোগ সেরে যায়।
কোন কারনে রক্ত দূষিত হলে কাল তুলসিপাতার রস কিছুদিন খেলে উপকার পাওয়া যায়।শ্লেষ্মার জন্য নাক বন্ধ হয়ে কোনো গন্ধ পাওয়া না গেলে সে সময় শুষ্ক পাতা চূর্ণের নস্যি নিলে সেরে যায়। পাতাচূর্ণ দুই আঙ্গুলের চিমটি দিয়ে ধরে নাক দিয়ে টানতে হয়, সেটাই নস্যি। তুলসী পাতা দিয়ে চায়ের মত করে খেলে দীর্ঘদিন সুস্থ থাকা যায়। তুলসী চা হিসাবে এটি বেশ জনপ্রিয়।
তুলসিপাতার রসে লবন মিশিয়ে দাদে লাগালে উপশম হয়।
* প্রস্রাবজনিত জ্বালা: তুলসীর বীজ পানিতে ভিজালে পিচ্ছিল হয়। এই পানিতে চিনি মিশিয়ে শরবতের মত করে খেলে প্রস্রাবজনিত জ্বালা যন্ত্রনায় বিশেষ উপকার হয়।
* কালো দাগ: মুখে বসন্তের কাল দাগে তুলসীর রস মাখলে ঐ দাগ মিলিয়ে যায়। হামের পর যে সব শিশুর শরীরে কালো দাগ হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে তুলসী পাতার রস মাখলে গায়ে স্বাভাবিক রং ফিরে আসে।

চিরসবুজ বৃক্ষ হরীতকী:

হরীতকী মধ্যম থেকে বৃহদাকার চিরসবুজ বৃক্ষ। ত্রিফলার অন্যতম ফল হচ্ছে হরীতকী। হরীতকী গাছকে ভেষজ চিকিৎসকরা মায়ের সঙ্গে তুলনা করে থাকেন। তারা বলেন, মানুষের কাছে এ বৃক্ষ মায়ের মতোই আপন। মানুষের শরীরে সংক্রামিত প্রায় সব রোগ-ব্যাধির ওষুধ হিসেবে হরীতকীর ব্যবহার রয়েছে। অর্শরোগে, রক্তার্শে, চোখের রোগ, পিত্তবেদনা, গলার স্বর বসে যাওয়া, হৃদরোগ, বদহজম, আমাশয়, জন্ডিস, ঋতুস্রাবের ব্যথা, জ্বর, কাশি, হাঁপানি, পেটফাঁপা, ঢেঁকুর ওঠা, বর্ধিত যকৃত ও প্লীহা, বাতরোগ, মহৃত্রনালীর অসুখ, ফুসফুস, শ্বাসনালীঘটিত রোগে হরীতকী ফলের গুঁড়া ব্যবহৃত হয়।
এছাড়া ঘন ঘন পানির তৃষ্ণা কিংবা বমি বমিভাব কাটাতেও হরীতকী ব্যবহৃত হয়। ত্রিফলা অর্থাৎ আমলকী, বহেরা, হরীতকী_ এর প্রতিটির সমপরিমাণ গুঁড়ার শরবত কোলেস্টেরল অর্থাৎ প্রেসার বা রক্তচাপ কমানোর মহৌষধ। এক ওষুধ গবেষক দলের মতে, আধুনিক যে কোনো অ্যালোপ্যাথিক ওষুধের তুলনায় ত্রিফলা কোলেস্টেরল কমানোর ক্ষেত্রে অনেক বেশি ফলপ্রসহৃ। তাদের মতে, দ্রব্যগুলোর দিক দিয়ে হরীতকীই সর্বশ্রেষ্ঠ। দ্বিতীয় স্থানে আমলকী এবং তৃতীয় স্থানে বহেরা। ত্রিফলা শুধু কোলেস্টেরলই কমায় না বরং এতে প্লীহা ও যকৃতের উপকার হয়। এছাড়া হরীতকীর কাঠ আসবাবপত্র, কৃষি যন্ত্রপাতি ছাড়াও নানা কাজে ব্যবহৃত হয়। ফল থেকে ট্যানিন, লেখার কালি ও রং পাওয়া যায়।
নানা রোগ নিরাময়ে হরীতকী খুব উপকারী:
হরীতকী বললেই ত্রিফলার কথা আসে। ত্রিফলা মানে তিনটি ফলের সমাহার। এই তিনটি ফল হলো_ আমলকী, হরীতকী ও বহেড়া। তবে তিনটি ফলের মধ্যে হরীতকীর রয়েছে অসাধারণ গুণ। ফলে পাক ধরলে হলুদাভ সবুজ বর্ণ ধারণ করে এবং চিবুলে তিতকুটে লাগে। ফলের কোনো কিছু ফেলনা নয়। বীজের ভেতরের শাঁসও মজা করে খাওয়া যায়। হরীতকী ভেষজ গুণসমৃদ্ধ। আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতে ত্রিফলা ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়াও কলেরা ও আমাশয় নিরাময়ে এর যথেষ্ট ব্যবহার রয়েছে। হরীতকী চূর্ণ ঘিয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে পিত্তশূল দূর হয়। বিশেষভাবে পরিশোধনের মাধ্যমে।
পাইলস, হাঁপানি, চর্ম, ক্ষত, কনজাংটিভাইটিস রোগেও হরীতকী ব্যবহৃত হয়। হরীতকীর কাঠ খুবই শক্ত এবং টেকসই। গৃহনির্মাণ এমনকি সুদৃশ্য আসবাবপত্র তৈরিতে এ কাঠ ব্যবহৃত হয়। অন্যান্য গুণাগুণের কারণে বাংলার প্রায় প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় নিমের পাশাপাশি মানুষ হরীতকীর গাছ লাগায়। এমনকি সরকারও বনায়ন কর্মসূচির আওতায় রাস্তার পাশে হরীতকী রোপণে মনোনিবেশ করেছে।
হরীতকীর গুণাবলি :
আয়ুর্বেদিক বিজ্ঞানে ত্রিফলা নামে পরিচিত তিনটি ফলের একটি হরীতকী। এর নানা গুণ আছে। স্বাদ তিতা। এটি ট্যানিন, অ্যামাইনো এসিড, ফ্রুকটোজ ও বিটা সাইটোস্টেরল-সমৃদ্ধ।
ব্যবহার:
হরীতকী দেহের অন্ত্র পরিষ্কার করে এবং একই সঙ্গে দেহের শক্তি বৃদ্ধি করে। এটা রক্তচাপ ও অন্ত্রের খিঁচুনি কমায়। হৃৎপিণ্ড ও অন্ত্রের অনিয়ম দূর করে। এটা রেচক, কষাকারক, পিচ্ছিলকারক,পরজীবীনাশক, পরিবর্তনসাধক, অন্ত্রের খিঁচুনি রোধক এবং স্নায়বিক শক্তিবর্ধক। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য, স্নায়বিক দুর্বলতা, অবসাদ এবং অধিক ওজনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। হরীতকীতে অ্যানথ্রাকুইনোন থাকার কারণে রেচক বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে হরীতকী।
অ্যালার্জি দূর করতে হরীতকী বিশেষ উপকারী। হরীতকী ফুটিয়ে সেই পানি খেলে অ্যালার্জি কমে যাবে। হরীতকীর গুঁড়া নারিকেল তেলের সঙ্গে ফুটিয়ে মাথায় লাগালে চুল ভালো থাকবে। হরীতকীর গুঁড়া পানিতে মিশিয়ে খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে। গলা ব্যথা বা মুখ ফুলে গেলে হরীতকী পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে গার্গল করলে আরাম পাবেন। দাঁতে ব্যথা হলে হরীতকী গুঁড়া লাগান, ব্যথা দূর হবে। রাতে শোয়ার আগে অল্প বিট নুনের সঙ্গে ২ গ্রাম লবঙ্গ বা দারুচিনির সঙ্গে হরীতকীর গুঁড়া মিশিয়ে খান। পেট পরিষ্কার হবে।

বহেড়া:

বিভিন্ন রোগে প্রয়োগ:
* ইন্দ্রিয়-দৌর্বল্যেঃ এ রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে রোজ দু’টি করে বহেড়া বিচীর শাঁস খান।
* শ্বেতী রোগেঃ বহেড়া বিচির শাঁসের তেল বের করে শ্বেতীর ওপর লাগালে গায়ের রং অল্পদিনের মধ্যেই স্বাভাবিক হবে।
অকালে টাক পড়লেঃ বহেড়া বিচির শাঁস অল্প পানিতে মিহি করে বেটে চন্দনের মতো টাকে লাগালে, টাক সেরে যায়।
* শ্লেস্মায়ঃ আধা চা-চামচ বগেড়া চূর্ণ, ঘি গরম করে তার সাথে মিশিয়ে আবার গরম করে মধু মিশিয়ে চেটে খেলে উপরকার পাওয়া যায়।
* আমাশয়ঃ সাদা বা রক্ত যে কোনও আমাশয়ে প্রতিদিন সকালে পানির সাথে বহেড়া চূর্ণ খেলে উপকার পাওয়া যায়।
অকালে চুল পাকলেঃ বহেড়ার বিচি বাদ দিয়ে ১০ গ্রাম ছাল নিয়ে পানি দিয়ে বাটুন। এক কাপ পানিতে গুলে পানিতে ছেঁকে নিন, এবার সে পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
* ফুলো কমানোর জন্যঃ বহেড়ার বিচি বাদ দিয়ে ছাল বেটে একটু গরম করে ফুলোয় প্রলেপ দিলে ফুলো কমে যাবে।
ভেষজ দাওয়াই
ব্যবহার:
বহেড়া বিশেষভাবে পরিশোধিত করে এর ফল, বীজ এবং বাকল ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধ ও চিকিৎসায়। বহেড়ার কাঠ হরিদ্রাভ ও শক্ত। এ কাঠ সহজে পানিতে পচে না। এটি নৌকা তৈরিতে ব্যবহার হয়। ফল থেকে লেখার কালি বানানো হয়। বীজ থেকে বিশেষভাবে অঙ্কুরোদ্গম করা হয়।
ঔষধি গুণ:
কথিত আছে, প্রতিদিন বহেড়া ভেজানো পানি এক কাপ পরিমাণ পান করলে দীর্ঘায়ু হওয়া যায়। বহেড়া হৃৎপিণ্ড এবং যকৃৎ রোগের আক্রমণ কমায়। সর্দি-কাশি নিরাময় করে। এটা কৃমিনাশক, স্বরনাশক এবং অনিদ্রা দূর করে। এ ছাড়া পাইলস, হাঁপানি ও কুষ্ঠরোগে বহেড়ার চিকিৎসা বেশ ফলপ্রসূ।

আমলকী:

আমলকী বা ‘আমলকি’ একপ্রকার ভেষজ ফল। সংস্কৃত ভাষায় এর নাম ‘আমালিকা’।
কাঁচা আমলকি:
আমলকি নিয়ে প্রাথমিক গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে। এতে দেখা গেছে যে, এটি ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে পারে। প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, রিউমেটয়েড আর্থ্রাইটিস এবং অস্টিওপোরোসিস রোগে আমলকির রস কিছু কাজ করে। কয়েক ধরনের ক্যান্সারের বিরুদ্ধেও এর কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগেও আমলকি কার্যকর বলে ইঁদুরের উপর চালিত গবেষণায় প্রমান মিলেছে। প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগের পরে ক্ষতিগ্রস্ত প্যানক্রিয়াস (অগ্ন্যাশয়) -এর ক্ষত সারাতে আমলকি কার্যকর। আমলকির ফল, পাতা ও ছাল থেকে তৈরি পরীক্ষামূলক ওষুধে কিছু রোগ নিরাময়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে যেমন- ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, প্রদাহ এবং কিডনি-রোগ। আমলকি মানুষের রক্তের কোলেস্টেরল-মাত্রা হ্রাস করতে পারে বলে প্রমাণ রয়েছে ডায়াবেটিক ইঁদুরের উপর চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে, আমলকির রস রক্তের চিনির মাত্রা কমাতে পারে এবং লিভারের কর্মক্ষমতা পুনরোদ্ধারে সাহায্য করতে পারে।
আমলকিতে প্রচুর ভিটামিন-সি বা এস্করবিক এসিড থাকে (৪৪৫ মিগ্রা/১০০ গ্রাম)। তা সত্ত্বেও আরো অন্যান্য উপাদান নিয়ে মতভেদ আছে এবং আমলকির ‘এন্টি-অক্সিডেন্ট’রূপে কার্যকারিতার পেছনে মূল ভূমিকা ভিটামিন-সি এর নয়, বরং ‘এলাজিটানিন’ নামক পদার্থসমূহের বলে মনে করা হয়।যেমন এমব্লিকানিন-এ (৩৭%), এমব্লিকানিন-বি (৩৩%), পানিগ্লুকোনিন (১২%) এবং পেডাংকুলাগিন (১৪%).এতে আরো আছে পানিক্যাফোলিন, ফিলানেমব্লিনিন-এ, বি, সি, ডি, ই এবং এফ।এই ফলে অন্যান্য ‘পলিফেনল’ও থাকে। যেমন- ফ্ল্যাভোনয়েড, কেমফেরল, এলাজিক এসিড ও গ্যালিক এসিড।
ব্যবহার:
আমলকির ভেষজ গুণ রয়েছে অনেক। ফল ও পাতা দুটিই ওষুধরূপে ব্যবহার করা হয়। আমলকিতে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ থাকে। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, আমলকিতে পেয়ারা ও কাগজি লেবুর চেয়ে ৩ গুণ ও ১০ গুণ বেশি ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। আমলকিতে কমলার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ গুণ বেশি, আপেলের চেয়ে ১২০ গুণ বেশি, আমের চেয়ে ২৪ গুণ এবং কলার চেয়ে ৬০ গুণ বেশি ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে।
একজন বয়স্ক লোকের প্রতিদিন ৩০ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ দরকার। দিনে দুটো আমলকি খেলে এ পরিমাণ ভিটামিন ‘সি’ পাওয়া যায়। আমলকি খেলে মুখে রুচি বাড়ে।স্কার্ভি বা দন্তরোগ সারাতে টাটকা আমলকি ফলের জুড়ি নেই। এছাড়া পেটের পীড়া, সর্দি, কাশি ও রক্তহীনতার জন্যও খুবই উপকারী।লিভার ও জন্ডিস রোগে উপকারী বলে আমলকি ফলটি বিবেচিত। আমলকি, হরিতকী ও বহেড়াকে একত্রে ত্রিফলা বলা হয়। এ তিনটি শুকনো ফল একত্রে রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালবেলা ছেঁকে খালি পেটে শরবত হিসেবে খেলে পেটের অসুখ ভালো হয়।বিভিন্ন ধরনের তেল তৈরিতে আমলকি ব্যবহার হয়। কাঁচা বা শুকনো আমলকি বেটে একটু মাখন মিশিয়ে মাথায় লাগালে খুব তাড়াতাড়ি ঘুম আসে।কাঁচা আমলকি বেটে রস প্রতিদিন চুলে লাগিয়ে দুতিন ঘন্টা রেখে দিতে হবে। এভাবে একমাস মাখলে চুলের গোড়া শক্ত, চুল উঠা এবং তাড়াতড়ি চুল পাকা বন্ধ হবে।
ঔষধি গুণ:
  •  আমলকী কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের উপর কাজ করে।
  •  বমি বন্থে কাজ করে।
  •  দীর্ঘমেয়াদি কাশি সর্দি হতে উপকার পাওয়ার জন্য আমলকীর নির্যাস উপকারী।
  • এটি হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্কের শক্তিবর্ধক।
  • ভিটামিন সি’সমৃদ্ধ আমলকীতে প্রচুর পরিমাণে এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে। বিভিন্ন অসুখ সারানো ছাড়াও রোগ প্রতিরোধক ৰমতা গড়ে তুলতেও আমলকী দারুণ সাহায্য করে। আমলকীর গুণাগুণের জন্য আয়ুর্বেদিক ওষুধেও এখন আমলকীর নির্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে।
আমলকী খাওয়ার উপকারিতা

*ভিটামিন সি’সমৃদ্ধ আমলকীতে যথেষ্ট পরিমাণে এ্যান্টি অঙ্েিডন্ট রয়েছে, যা ফ্রি র্যাডিকালস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। বুড়িয়ে যাওয়া ও সেল ডিজেনারেশনের অন্যতম কারণ এই ফ্রি র্যাডিকালস।
*আমলকী ত্বক, চুল ও চোখ ভাল রাখার জন্য উপকারী। এতে রয়েছে ফাইটো-কেমিক্যাল যা চোখের সঙ্গে জড়িও ডিজেনারেশন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
*আমলকী হজমে সাহায্য করে ও স্টমাক এ্যাসিডে ব্যালেন্স বজার রাখে।
* আমলকী লিভার ভাল রাখে, ব্রেনের কার্যকলাপে সাহায্য করে ফলে মেন্টাল ফাংশনিং ভাল হয়।
* আমলকী বস্নাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রেখে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কোলেস্টেরল লেভেলেও কম রাখাতে যথেষ্ট সাহায্য করে।
* হার্ট সুস্থ রাখে, ফুসফুসকে শক্তিশালী করে তোলে।
* শরীর ঠান্ডা রাখে, শরীরের কার্যৰমতা বাড়িয়ে তোলে, মাসল টোন মজবুত করে।
* লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা বাড়িয়ে তুলে দাঁত ও নখ ভাল রাখে।
* জ্বর, বদহজম, সানবার্ন, সানস্ট্রোক থেকে রৰা করে।
* আমলকীর জুস দৃষ্টি শক্তি ভাল রাখার জন্য উপকারী। ছানি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। ব্রণ ও ত্বকের অন্যান্য সমস্যায় উপকারী।
* পেটের জ্বালা জ্বালাভাব কম রাখে। লিভারের কার্যকলাপে সাহায্য করে, পাইলস সমস্যা কমায়।
* শরীরের অপ্রয়োজনীয় ফ্যাট ঝরাতে সাহায্য করে। ব্রঙ্কাইটেসও এ্যাজমার জন্য আমলকীর জুস উপকারী।
* আমলকী গুঁড়োর সঙ্গে সামান্য মধু ও মাখন মিশিয়ে খাওয়ার আগে থেকে পারেন। খিতে বাড়াতে সাহায্য করে।
* এক গস্নাস দুধ বা পানির মধ্যে আমলকী গুঁড়ো ও সামান্য চিনি মিশিয়ে দিনে দু’বার খেতে পারেন। এ্যাসিডেটের সমস্যা কম রাখতে সাহায্য করবে।
* আমলকীতে সামান্য লবণ, লেবুর রস মাখিয়ে রোদে রাখুন। শুকিয়ে যাওয়ার পর খেতে পারেন।
* খাবারের সঙ্গে আমলকীর আচার খেতে পারেন। হজমে সাহায্য করবে।
* আমলকী মাঝারি আকারে টুকরো করে নিয়ে ফুটনত্ম পানির মধ্যে দিন। আমলকী নরম হয়ে তরে নামিয়ে ঝরিয়ে লবণ, আদা কুঁচি, লেবুর রস মাখিয়ে রোদে রেখে দিতে পারেন। সারা বছরই ভাল থাকবে।

নিম:

নিম একটি ঔষধি গাছ, বৈজ্ঞানিক নাম(AZADIRACHTA INDICA)। এর ডাল, পাতা, রস, সবই কাজে লাগে। নিম একটি বহু বর্ষজীবি ও চির হরিত বৃক্ষ। কৃমিনাশক হিসেবে নিমের রস খুবই কার্যকর।নিমের কাঠ খুবই শক্ত। এ কাঠে কখনো ঘুণ ধরে না। পোকা বাসা বাঁধে না। উইপোকা খেতে পারে না। এ কারণে নিম কাঠের আসবাবপত্রও তৈরি করা হচ্ছে আজকাল। এছাড়া প্রাচীনকাল থেকেই বাদ্যযন্ত্র বানানোর জন্য কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। এর উত্পাদন ও প্রসারকে উত্সাহ এবং অন্যায়ভাবে নিম গাছ ধ্বংস করাকে নিরুত্সাহিত করছে। নিমের এই গুনাগুনের কথা বিবেচনা করেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘একুশ শতকের বৃক্ষ’ বলে ঘোষনা করেছে।
নিম একটি বহু বর্ষজীবি ও চির হরিত বৃক্ষ।নিম গাছের পাতা, ফল, ছাল বা বাকল, নিমের তেল,বীজ। এক কথায় নিমের সমস্ত অংশ ব্যবহার করা যায়।
ঔষধি গুণাগন:
বিশ্বব্যাপী নিম গাছ, গাছের পাতা, শিকড়, নিম ফল ও বাকল ওষুধের কাঁচামাল হিসেবে পরিচিত। বর্তমান বিশ্বে নিমের কদর তা কিন্তু এর অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে ব্যহারের জন্য। নিম ছত্রাকনাশক হিসেবে, ব্যাকটেরিয়া রোধক হিসেবে ভাইরাসরোধক হিসেবে, কীট-পতঙ্গ বিনাশে চ্যাগাস রোধ নিয়ন্ত্রণে, ম্যালেরিয়া নিরাময়ে,দন্ত চিকিতসায় ব্যাথামুক্তি ও জ্বর কমাতে, জন্ম নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয়।
ব্যবহার:
  1. কফজনিত বুকের ব্যথা: অনেক সময় বুকে কফ জমে বুক ব্যথা করে। এ জন্য ৩০ ফোটা নিম পাতার রশ সামান্য গরম পানিতে
  2. মিশিয়ে দিতে ৩/৪ বার খেলে বুকের ব্যথা কমবে। গর্ভবতী,শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য এ ঔষধটি নিষেধ।
  3. কৃমি: পেটে কৃমি হলে শিশুরা রোগা হয়ে যায়। পেটে বড় হয়। চেহারা ফ্যকাশে হয়ে যায়। এ জন্য ৫০ মিলিগ্রাম পরিমাণ নিম গাছের মূলের ছালের গুড়া দিন ৩ বার সামান্য পানি গরমসহ খেতে হবে।
  4. উকুন নাশ: নিমের পাতা বেটে হালকা করে মাথায় লাগান। ঘন্টা খানেক ধরে মাথা ধুয়ে ফেলুন। ২/৩ দিন এভাবে লাগালে উকুন মরে যাবে।
  5.  অজীর্ণ: অনেকদিন ধরে পেটে অসুখ। পাতলা পায়খানা হলে ৩০ ফোটা নিম পাতার রস, সিকি কাপ পানির সঙ্গে মিশিয়ে সকাল- বিকাল খাওয়ালে উপকার পাওয়া যাবে।
  6. খোস পাচড়া: নিম পাতা সিদ্ধ করে পানি দিয়ে গোসল করলে খোসপাচড়া চলে যায়। পাতা বা ফুল বেটে গায়ে কয়েকদিন লাগালে চুলকানি ভালো হয়।
  7. পোকা-মাকড়ের কামড়: পোকা মাকড় কামল দিলে বা হুল ফোটালে নিমের মূলের ছাল বা পাতা বেটে ক্ষত স্থানে লাগালে ব্যথা উপশম হবে।
  8. দাতের রোগ: নিমের পাতা ও ছালের গুড়া কিংবা নিমের চাল দিয়ে নিয়মিত দাত মাজলে দাত হবে মজবুত, রক্ষা পাবে রোগ।
  9. জন্ম নিয়ন্ত্রণে নিম: নিম তেলা একটি শক্তিশালী শ্রক্রানুনাশক হিসেবে কাজ করে। ভারতীয় বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন যে, নিম তেল মহিলাদের জন্য নতুন ধরনের কার্যকরী গর্ভনিরোধক হতে পারে। এটি ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই শুক্রানু মেরে ফেলতে সক্ষম।

Labels: