Saturday, January 17, 2015

বিয়ারের পকেটে জীবনের চাবিকাঠি


মদ্য পানের অপকারিতা নিয়ে বহু বিশেষজ্ঞ পাতার পর পাতা খরচ করেছেন। মদের নেশা ছাড়াবার জন্য কত বিজ্ঞাপনই না জায়গা করে নেয় ল্যাম্পপোস্ট আর ট্রেনের দেওয়ালে। কিন্তু এই মদিরায় যে কত `মধু` লুকিয়ে আছে তা এবার নেশাতুর মন ছাড়াও সর্বজনের কাছে প্রতিষ্ঠা করলেন গবেষকরা। গুছিয়ে নিজের আয়ু বাড়িয়ে নিতে অ্যালকোহলের যে জুড়ি মেলা ভার এবার তার স্বপক্ষে ঝাণ্ডা ধরলেন তাঁরা। জানালেন ক্রোমোজোমাল ডিএনএ-এর শেষপ্রান্ত টেলোমেয়ারের দৈর্ঘ্য বজায় রাখে অ্যালকোহল। অন্যদিকে, কফিতে অবস্থিত ক্যাফেন এই টেলোমেয়ারের দৈর্ঘ্যের সময়ের তুলনায় দ্রুত হ্রাস ঘটায়।

মার্কিন গবেষক মার্টিন কুপি জানিয়েছেন কিছু প্রাকৃতিক কারণ টেলোমেয়ারের দৈর্ঘ্যের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
ডিএনএ ও প্রোটিন দ্বারা নির্মিত টেলোমেয়ার ক্রোমোজোমের ডিএনএ-এর শেষপ্রান্তের নির্দেশক। ডিনএনএ স্ট্র্যান্ড ঠিকমত প্রতিলিপি তৈরি করছে কী না তারই নির্দেশক এই ডিএনএ।
প্রত্যেকবার যখন একটি কোষ বিভাজিত হয় তার মধ্যে অবস্থিত ক্রোমোজোমগুলি বিভাজিত হয়ে নতুন কোষে প্রবেশ করে। এই প্রক্রিয়ার সময় প্রতিবার টেলোমেয়ারের দৈর্ঘ্য হ্রাস হয়। এভাবে টেলোমেয়ারের দৈর্ঘ্য কমতে কমতে এক সময় এতটাই ছোট হয়ে যায় যে এর ফলে কোষের মৃত্যু হয়। শুধু মাত্র ক্যান্সার কোষের ক্ষেত্রে এই নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটে। সেক্ষেত্রে টেলোমেয়ার-এর দৈর্ঘ্যের কোনও ব্যতিক্রম হয় না। তাই কোষ অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিভাজিত হতে থাকে।
আগেই প্রমাণিত হয়েছে স্বাভাবিক অবস্থায় টেলোমেয়ারের দৈর্ঘ্য যত বেশি হয় কোষ তত বেশী বিভাজিত হয় এবং আয়ু তত বৃদ্ধি পায়। (তবে কোনও অসুস্থতা বা লাইফস্টাইল কারণ গুলির মাধ্যমে কোষের অস্বাভাবিক মৃত্যু না হলে এই নিয়মের অন্যথা হয় না।)

বিজ্ঞানীরা পরীক্ষাগারে কিছু ইস্ট কোষকে ক্যাফেন দ্রবণ এবং এসপ্রেসোর মধ্যে রেখে দেওয়ার পর দেখেন ক্রোমোজোমের টেলোমেয়ারের দৈর্ঘ্য হ্রাস পেয়েছে। অন্যদিকে ৫% থেকে ৭% ইথানল দ্রবণের মধ্যে রেখে দিলে টেলোমেয়ার দৈর্ঘ্যে বেড়ে যায়। অর্থাৎ যে সমস্ত মদে ৫%-৯% অ্যালকোহল থাকে (যেমন বিয়ার) সেই সব মদ আয়ু বৃদ্ধি করে।

বিঃদ্রঃ উপরোক্ত লেখাটি কিন্তু কোনওভাবেই মদ্যপানের জয়গান করতে নয়। তাই এর থেকে একটুও ভাবার কারণ নেই যে দিনরাত মদের মৌতাত করলে চড়চড় করে আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পাবে। এই পানীয়ের অতিরিক্ত সেবন কিন্তু ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে আপনার অনান্য অঙ্গে। তাই অতি উৎসাহিত বোধহয় না হওয়াই ভাল।

Labels:

0 Comments:

Post a Comment

Subscribe to Post Comments [Atom]

<< Home