Sunday, January 11, 2015

জরায়ুর টিউমার ও চিকিৎসা



নারীদের হাজার সমস্যার মধ্যে তলপেটে ব্যাথা একটি। প্রতি মাসের বিশেষ দিনগুলিতে প্রায় লাগামছাড়া হয়ে যায়। এর সঙ্গে রয়েছে অতিরিক্ত ব্লিডিং, যা থেকে রক্তশূন্যতাও হতে পারে। তবে এর থেকে যে দুটো সম্ভাবনার কথা মনের মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকে তা হলো বন্ধ্যাত্ব এবং ক্যানসার। তবে জরায়ুতে হওয়া ফাইব্রয়েডের থেকে ক্যানসার প্রায় হয়ই না। বিশেষ কিছু অবস্থা ছাড়া ভবিষ্যতে প্রেগনেন্সিতেও কোন সমস্যা হয় না।

মহিলাদের প্রজননক্ষম বয়সে জরায়ুতে সবচেয়ে বেশি যে টিউমারটি হতে দেখা যায় তা হলো ফাইব্রয়েড বা মায়োমা। জরায়ুর পেশির অতিরিক্ত ও অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে এই টিউমারের সৃষ্টি হয়। ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে নারীদের মধ্যে ২০ শতাংশই এই সমস্যায় আক্রান্ত। ফাইব্রয়েড এক ধরনের নিরীহ টিউমার, এটি ক্যানসার বা বিপজ্জনক কিছু নয়।
এখন বুঝবেন কি করে যে আপনার শরীরে বাসা বেধেঁছে এই অসুখটি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগী নিজে বুঝতেই পারেন না যে তিনি ফাইব্রয়েডের সমস্যায় ভুগছেন। তাই কয়েকটি লক্ষণ অবহেলা করা উচিত হবে না। যেমনঃ
পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত ব্লিডিং,তলপেটি যন্ত্রণা,পিরিয়ড দীর্ঘস্থায়ী হওয়া ইত্যাদি হতে পারে।
অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

তলপেট চাপ ধরে থাকে,ইউরিন সমস্যা ইত্যাদিও থাকতে পারে।ইউরিন ও স্টুল বন্ধ হয়ে যায়।
তলপেট এ লাম্প হতে পারে। তলপেটি আকারে বড় যায় বলে প্রেগনেন্সির মতো দেখতে লাগে।
পূর্বাভাস যাই হোক না কেন নিশ্চিত হতে গেলে প্রয়োজন কিছু পরীক্ষা নিরাক্ষা।
সমস্যা থাকলে সমাধানও নিশ্চয়ই আছে।

চিকিৎসা : মূলত অস্ত্রোপচারই ফাইব্রয়েড টিউমারের প্রধানতম চিকিৎসা। ওষুধের মাধ্যমে এর স্থায়ী চিকিৎসা হয় না। অস্ত্রোপচার প্রধানত দুই ধরনের। ১. বয়স ৪৫-এর বেশি ও Family Complete অর্থাৎ আর বাচ্চা নেওয়ার ইচ্ছা না থাকলে জরায়ু ফেলে দেওয়া। ২. প্রজননক্ষম বয়স এবং যাদের বন্ধ্যাত্বের মতো সমস্যা দেখা যাচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে মায়োমেটমি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ফাইব্রয়েডকে জরায়ুর দেয়াল থেকে তুলে এনে আবার তা সেলাই করে দেওয়া হয়। এতে জরায়ু কেটে ফেলার প্রয়োজন হয় না। বর্তমানে এই অস্ত্রোপচার পেট কেটে বা ছিদ্র করে উভয় পদ্ধতিতেই করা হয়।

যা জেনে রাখা জরুরি : ১. এই অস্ত্রোপচারে বেশ রক্তপাত হতে পারে। ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের সময় জরায়ু কেটে ফেলে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। ২. অস্ত্রোপচারের পর আবার ফাইব্রয়েড হওয়ার সম্ভাবনা ১০ থেকে ১৫ ভাগ। ৩. অস্ত্রোপচারের পর গর্ভধারণের সম্ভাবনা ৪০ থেকে ৬০ ভাগ। এটি নির্ভর করে ফাইব্রয়েড টিউমারের সংখ্যা, আকার এবং অস্ত্রোপচারের সফলতার ওপর। ফাইব্রয়েড অস্ত্রোপচারের পর গর্ভধারণ করলে অবশ্যই ভালো সুযোগ-সুবিধা আছে এমন হাসপাতালে সন্তান প্রসব করাতে হবে।
সূত্র:shorir

Labels:

0 Comments:

Post a Comment

Subscribe to Post Comments [Atom]

<< Home