Sunday, January 11, 2015

জরায়ুমুখের ক্যানসার


জরায়ুমুখের ক্যানসার মহিলাদের জন্য খুব যন্ত্রণা দায়ক এবং খারাপ একটি রোগ। রোগটি সাধারনত ধিরে ধিরে সংক্রামিত হতে থাকে এবং এক সময় প্রকট আকার ধারণ করে। পরবর্তীতে ক্যানসারে রুপ নেয়। ক্যানসার থেকে দ্রুত পিণ্ডের আকারে বেড়ে যায় এবং জরায়ুমুখে ক্ষত সৃষ্টি করে। আসতে আসতে দিক খারাপ অবস্থায় যেতে থাকে এবং একসময় তা আর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকেনা।

জরায়ুমুখের ক্যানসার রোগে সাধারণত ৩৫ থেকে ৫৫ বয়সী নারীরা আক্রান্ত হয়ে থাকে। তবে এর নিচে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা নেই এবং ৬০ বছরে এই রোগ আক্রান্ত করতে পারে তাদের সংখ্যা তুলনা মূলক ভাবে কম।
জরায়ুমুখের ক্যানসার তেমন কোন সঠিক লক্ষণ দেখা যায়না। তবে ধীরগতিতে সৃষ্টি হওয়ায় খুব সহজেই এবং কম খরচে ক্যানসার-পূর্ব অবস্থায় রোগ শনাক্ত করা যায়। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এর প্রতীকার করা সম্ভব।

জরায়ুমুখের ক্যানসারের কারণঃ
১. বেশির ভাগ সময়ে আল্প বয়সে যৌনসম্পর্কের এবং একাধিক যৌনসাথির কারনেই হয়ে থাকে।
২. আল্প বয়সে ঘন ঘন সন্তানধারণ।
৩. প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নেশা জাতীও দ্রব্য গ্রহন করার ফলে।
৪. হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাসের আক্রমণের কারনে হয়ে থাকে।এছাড়াও আরো অনেক কারনে জরায়ুমুখের ক্যানসার হয়ে থাকে।

পেপস স্মেয়ার টেস্টঃ এই টেস্টের মাধ্যমে জরায়ুমুখ থেকে রস নিয়ে আণুবীক্ষণিক (মাইক্রোস্কোপিক) যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষার মধ্যমেই শনাক্ত করাহয় ক্যানসার, ক্যানসার হওয়ার পূর্বাবস্থা ও জরায়ুমুখের অন্যান্য রোগ। এই টেস্টে ব্যবহুল কম। তাই বিবাহিত নারিদের ২১ থেকে ৬৪ বছর পর্যন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তিন বছর পর পর এ টেস্ট করা উচিত।

জরায়ুমুখের ক্যানসারের প্রতিরোধ
বর্তমানে প্রচুর পরিমাণে নারীরা জরায়ুমুখের ক্যানসারে আক্রান্ত। সেই তুলনায় বাংলাদেশ প্রথম। বাংলাদেশে প্রতি চারজন ক্যানসার রোগীর মধ্যে একজন জরায়ুমুখের ক্যানসার রোগে আক্রান্ত। এর প্রতীকারের জন্য প্রথমে নারীদের সচেতন হতে হবে।

 নিম্নে কীভাবে জরায়ুমুখের ক্যানসারের প্রতিরোধ করা যায়, তার কিছু পরামর্শ উপস্থাপন করা হলঃ
১. বাল্যবিবাহ আমাদের দেশের একটি প্রচলিত সমস্যা। এর জন্য আমদের বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন মেনে চলতে হবে।
২. অধিক সন্তান নেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
৩. ধূমপান থেকে এড়িয়ে চলতে হবে।
৪. পানের সঙ্গে জর্দা ও সাদা পাতা খাওয়া ও দাঁতের গোড়ায় গুল (তামাকের গুঁড়া) লাগানো ইত্যাদি খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
৫. পুষ্টি জনিত খাবার গ্রহণ করতে হবে। এর জন্য প্রতিদিন তিন থেকে চার বার ফল, শাকসবজি ও তরকারি গ্রহণ করা যেতে পারে।
৬. সব সময় পরিষ্কার-পরিছন্ন থাকার চেষ্টা করতে হবে।
৭. সঠিক সময়ে এইচপিভি টিকা নিতে হবে।
উপস্থাপিত বিষয় গুলো সঠিক ভাবে পালন করতে হবে এবং অন্যজনকে মানার তাগিদ দিতে হবে। তাহলেই আমাদের দেশ থেকে জরায়ুমুখের ক্যানসার জনিত মৃত্যুর হার অনেকটা কমে আসবে।

Labels:

0 Comments:

Post a Comment

Subscribe to Post Comments [Atom]

<< Home