গর্ভবতী-মায়ের-খাদ্য
আমাদের দেশে গুরুজনরা বলে থাকেন মহিলাদের গর্ভবতী অবস্থায় একজনের নয় বরং দুজনের জন্য খাবার খেতে হয়। নারীর পূর্ণতা মাতৃত্বে। গর্ভকালীন সময় প্রতিটি মেয়ের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এ সময়ে নিজের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বজায় রাখা ও গর্ভস্থ সন্তানের বৃদ্ধি এবং সুস্থতার জন্য, গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি চাহিদা বৃদ্ধি পায়। হ্যাঁ, কিন্তু প্রশ্ন হলো আপনাদের দুজনের জন্য আপনি কী খাবেন? প্রতিদিন আপনাকে যথেষ্ট পরিমাণ ভিটামিন এবং মিনারেল খেতে হবে।
মায়ের সব ধরনের খাদ্যই একটু বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত।এছাড়া গর্ভবতী হওয়ার আগে থেকেই আপনার স্বাস্থ্যকর সুষম খাদ্য গ্রহণের পাশাপাশি প্রিন্যাটাল ভিটামিনসমৃদ্ধ (গর্ভকালীন চাহিদাকৃত ভিটামিন) খাবার গ্রহণ করা উচিত। তাই পরিবারের সবাইকে গর্ভবতী মায়ের খাবার দাবারের দিকে নজর রাখতে হবে। স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশী খাবার ও কমপক্ষে ২ঘন্টা বিশ্রাম নিতে দিতে হবে। প্রতিদিনের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে ক্যালরিযুক্ত খাবার যেমন-শস্য, আলু, তেল ইত্যাদি একটু বেশি খেতে হবে।
এছাড়া ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন ব্রকলি (এক ধরনের সবুজ ফুলকপি) ও কম স্নেহযুক্ত দুধ প্রভৃতি প্রচুর পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত। এতে বাড়ন্ত ভ্রূণের বা শিশুর হাড় ও দাঁতের বৃদ্ধি সাধিত হবে। তাছাড়া চর্বিবিহীন মাংস যেমন মুরগির মাংস নিয়মিতভাবে গ্রহণ করা যেতে পারে। গর্ভকালীন নিম্নোক্ত খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত-কাঁচা মাছ, অপাস্তুরিত দুধ এবং পনির জাতীয় খাবার। কেননা এসব খাবারে লিস্টেরিয়া নামক ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে, যা গর্ভাশয়ে প্রবেশের ফলে ভ্রূণের ঝুঁকিপূর্ণ সংক্রামক রোগ এমনকি গর্ভপাতও হতে পারে। এছাড়া অর্ধসিদ্ধ মাংস দিয়ে তৈরি স্যান্ডউইচ জাতীয় খাবারে লিস্টেরিয়া ব্যাকটেরিয়া থাকার আশঙ্কা থাকে বিধায় তাও পরিহার করা উচিত।
মনে রাখতে হবে, গর্ভকালীন সময়ের প্রথম তিন মাস ভ্রুনের বৃদ্ধি খুব সামান্যই হয়। এ সময়ে পুষ্টি চাহিদার পরিমাণ খুব বেশি থাকে না। তবে মায়ের প্রথম থেকেই পুষ্টি সচেতন হওয়া উচিত। গর্ভবতী মায়ের যত্নে এগিয়ে আসতে হবে পরিবারের সবাইকে। প্রতিদিনের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে ক্যালরিযুক্ত খাবার যেমন-শস্য, আলু, তেল ইত্যাদি একটু বেশি খেতে হবে।
গর্ভকালীন সময়ে মোট ওজন ১০-১২ কেজি পর্যন্ত বাড়তে পারে। এসময় ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক।
এছাড়া অন্যান্য খাদ্যের মধ্যে প্রতিদিন ১ গ্লাস দুধ খেতে হবে।
পর্যাপ্ত শাক সবজি এবং ফল খেতে হবে। ডিম, মাছ, ডাল, মাংস, লৌহ ও ফলিক এসিডের জন্য কলিজা এবং সামুদ্রিক মাছ খাওয়াও প্রয়োজন।
অন্য ফলের পাশাপাশি বাদাম এবং শিমের বিচি খেতে হবে। খাদ্য তালিকায় সব ধরনের খাবারই পর্যায়ক্রমে রাখতে হবে। সব সময় দামী খাবার থেকেই পুষ্টি পেতে হবে এমন কোনো কথা নেই। সাধারন খাবারের মধ্যেও যথেষ্ট পুষ্টিগুন থাকে।
মনে রাখতে হবে, গর্ভকালীন সময়ে মায়ের যত্নের ওপরই নির্ভর করে ভবিষ্যতের শিশুর সুস্থতা।
সূত্র: shorir
Labels: খাদ্য-ও-পুষ্টি
0 Comments:
Post a Comment
Subscribe to Post Comments [Atom]
<< Home