Sunday, January 11, 2015

মধুর মাধুর্য

"মধু মাখা মুখ",কিংবা "মধুর বচন" আমাদের দেশে খুব প্রচলিত কথা। এর মানে হল,বাল্যকালে যে যত বেশী মধু খাবে, তার বচন তত মিষ্ট হবে।
এটা আমাদের দেশের একটা প্রতিষ্ঠিত গুজব ছাড়া আর কিছুই নয়। আজকাল এই আজব ধরনের গুজবটি নিয়ে আমাদের আধুনিক মন্য চিকিৎসক ও মধুপ্রেমী নানী দাদীদের মতবিরোধ কিছুটা সাংঘর্ষিক পর্যায়ে চলে গেছে।
সদ্য জন্মানো শিশুটিকে চিকিৎসক যখনি মধু খাওয়াতে মানা করবেন,অমনি ইনারা পণ করে বসবেন,যে করেই হোক খাওয়াতেই হবে। আর এই মতবিরোধের অবসান ঘটাতে হলে জানতে হবে মধুর প্রাকৃতিক গুন,উপকারী ও অপকারী দিকগুলো সম্পর্কে। চলুন জেনে নেয়া যাক দেহের জন্যে উপকারী মধুর কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়.....

১.মধু সংগ্রহের সময় বিভিন্ন বিষাক্ত ফুলের মধুও চলে আসে। আবার এতে বিভিন্ন ময়লা আবর্জনাও থাকতে পারে। অপেক্ষাকৃত বড় শিশু এবং বয়স্করা এটির প্রতিরোধ
ক্ষমতা রাখে। কিন্তু সদ্যজাত শিশুর মাঝে তা থাকে না। তাই সহজেই এতে আক্রান্ত হয়ে যায়। তাই এক বছর বা তার কমবয়সী শিশুকে মধু দেয়া উচিত নয়।

২.একটি গবেষনায় দেখা যায় যে,মধু সর্দি কাশির জন্য খুবই উপাদেয়। বিশেষ করে যে সমস্ত শিশুরা কাশির দমকে রাতে ঘুমোতে পারে না,তাদের উপর প্রয়োগ করে বিশেষ ফল পাওয়া গেছে।

৩.মধুতে পানির একটি অংশ থাকে যা মানবদেহের ওজন হ্রাস করতে সহায়তা করে। তবে মনে রাখা ভাল,এক চা চামচ মধুতে ৬৪ কি.গ্রাম ক্যালরি থাকে। তাই অতিরিক্ত খাবার ফলে নানা সমস্যাও হতে পারে।

৪.এছাড়াও মধু নানা রোগের ওষুধ হিসেবে কাজ করে। যেমন ব্যাকটেরিয়া জনিত কারনে যে সমস্ত হার্টের রোগ, আলসার,ক্যান্সার হয়ে থাকে সেগুলোর প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে মধু। আবার ডায়রিয়াকে দীর্ঘস্থায়ী হওয়া থেকে রোধ করে মধু।

৫.যদিও মধু প্রধান একটি প্রাকৃতিক মিষ্টি জাতীয় খাদ্য,এতে ৬৯% গ্লুকোজ ও ফ্রাক্টোজ থাকে যা আপনার রক্তে চিনির পরিমান স্বাভাবিক রাখবে। সাধারন চিনি বা রোগীদের জন্য যে কৃত্রিম চিনি তার চাইতে বহুলাংশে স্বাস্থের জন্যে উপকারী হল মধু।

৬.এছাড়াও মধুতে ভিটামিন সি, কালসিয়াম ও আয়রন থাকে। ফলে মধু ক্ষত বা আঘাতজনিত ইনফেকশন রোধে সহায়তা করে।

৭.আয়ুর্বেদিক চিকিতসা হিসেবেও মধু ব্যাপক জনপ্রিয়। দুধ ও মধুর মিশ্রন ত্বক উজ্বল,মসৃন,ও ঝকঝকে হতে সাহায্য করে। মধু রান্না করে খাওয়া যায় কিনা,এ নিয়ে অনেকে অনেক সময় দ্বিধায় ভুগে থাকেন। এক্ষেত্রে রান্না না করাই শ্রেয়, কারন রান্না করার ফলে মধু এত আঠাল পদার্থে পরিনত হয়, যা হজমশক্তিতে ব্যাঘাত ঘটায়।

সবচাইতে বড় কথা হল,মধু খাবার উপকারী দিক রয়েছে বটেই,কিন্তু তা বয়স সাপেক্ষে। আর মধু কেনার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে তা প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছে কিনা।

নতুবা হিতে বিপরীত হবার সম্ভাবনা থেকে যায়।

(তথ্যসুত্র :অয়েব এমডি ডট কম)

Labels:

0 Comments:

Post a Comment

Subscribe to Post Comments [Atom]

<< Home