Tuesday, January 13, 2015

ঝামেলাহীন আনন্দময় জীবন যাপনের ১০টি সহজ কৌশল

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কত রকম ঝামেলার মাঝেই না কাটাতে হয় প্রতিনিয়ত। কাজের চাপ, টেনশন আর নানা সমস্যার মাঝে জীবন যেন একটি একটু করে মলিন হতে শুরু করে। সব আনন্দ হারিয়ে গিয়ে একঘেয়ে এক রুটিনে চলতে থাকে যান্ত্রিক জীবন। কিন্তু কিছু কৌশল অবলম্বণ করেই কিন্তু আপনি আপনার জীবনকে করে তুলতে পারেন রঙিন আর আনন্দময়। খুব কঠিন কিছু নয় এটা। প্রয়োজন কিছু সহজ অনুশীলন।
আনন্দময় জীবন
আনন্দময় জীবন
আপনারই জন্যে রইলো কিছু টিপস
১) বেশি বেশী হাসুন
হাসুন
বেশী বেশী হাসুন। এটা আপনার মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য দুটোই ভালো রাখবে। এটি আপনার মনকে ভালো রাখার প্রাকৃতিক একটি উপায়। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মানুষ সকালে উঠে ৫ মিনিট হাসেন তারা সারা দিন বেশ ফুরফুরে মেজাজে থাকেন অন্যান্যদের চেয়ে।
২) যা ইচ্ছে করুন
জীবনটা অনেক ছোট্ট আর একেবারেই আপনার নিজস্ব। তাই মাঝে মাঝে নিজেকে স্বাধীনতা দিন। যা ইচ্ছে করুন। দৈনন্দিনতা থেকে ছুটি নিয়ে বেড়িয়ে আসুন, আড্ডা দিন, পছন্দমত শপিং করুন, এক কথায় যা খুশী করুন। এই আনন্দ আপনাকে জীবনে যত ঝামেলার চিন্তা ভাবনা ভুলিয়ে দেবে।
৩) বর্তমানে বাঁচুন
অতীতের দুঃসহ কোন স্মৃতি বুকে আঁকড়ে রেখে এখনো তিলে তিলে কষ্ট পাওয়াটা বোকামী। যা হয়ে গেছে তা এখন অতীত। তার চেয়ে বর্তমানে বাঁচুন। বর্তমানের আনন্দমুখরতায় নিজেকে সামিল করুন।
৪) জীবন নিয়ে দুশ্চিন্তা নয়
জীবন নিয়ে দুশ্চিন্তা নয়
জীবন নিয়ে দুশ্চিন্তা করে লাভ নেই। কাল কি হবে তার চেয়ে আজকের সময়টাকে উপভোগ করুন এবং নিজের কাজগুলো ঠিকভাবে করতে থাকুন যাতে এর ফল আপনি আগামীকাল পেতে পারেন। পরিকল্পনা করুন আগামীর। যাতে ভবিষ্যতে কোন সমস্যা হলেও আপনি নিজেকে স্বান্তনা দিতে পারেন যে, আপনি আপনার সামর্থ্যের সবটুকু করেছেন।
৫) বন্ধু বাছাই করুন বুঝে শুনে
বন্ধু
আপনার অনেক বন্ধু থাকতে পারে। কিন্তু এদের মাঝে কাছের বন্ধু বাছাই করুন সময় নিয়ে বুঝে শুনে। যারা বিপদে আপদে আপনার পাশে ছায়ার মত থাকবে। এরাই আপনাকে নানা মানসিক ও সামাজিক চাপ থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করবে।
৬) সম্পর্কগুলো ভাঙবেন না
একটা সম্পর্ক গড়ে তুলে সেটা ভালো একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়া কিন্তু বেশ কঠিন। তাই চেষ্টা করুন কোন সম্পর্ক যাতে সহজে ভেঙে না যায়। প্রয়োজনে কিছুদিন সম্পর্ক থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন।
৭) আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখুন
দৈনন্দিন জীবনের নানা বিক্ষিপ্ত ঘটনায় আপনি বিষণ্ণ হতে পারেন, রেগে যেতে পারেন বা আক্রান্ত হতে পারেন চরম হতাশায়। কিন্তু কোন কিছুই দীর্ঘস্থায়ী নয়। তাই চেষ্টা করুন আবেগগুলো প্রশমনের। কোথাও লিখে রাখুন আর চেষ্টা করুন সেই পরিস্থিতি থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকার।
৮) ইতিবাচক চিন্তা করুন
সারাদিনে কি কি বিষয় আপনার খারাপ লাগলো তার বদলে ভাবুন কি কি বিষয়ে আপনি আনন্দ পেয়েছেন। দেখবেন খারাপ লাগার চেয়ে ভালো লাগার পাল্লাটাই ভারী হয়ে আপনার মুখে ফুটে উঠেছে এক চিলতে হাসি।
৯) ক্ষমাশীল হোন
ক্ষমা করতে শিখুন। পৃথিবীর সব মানুষ আপনার পক্ষে থাকবে না। কারো কারো দ্বারা আপনি ক্ষতির শিকার হতে পারেন। চেষ্টা করুন ক্ষমা করার আর সেই সাথে বজায় রাখুন কিছুটা দূরত্ব। আপনি ভালো থাকবেন।
১০) বিশ্রাম নিন
গর্ভকালীন রক্তশূন্যতা
বিশ্রাম নিন। কাজের চাপ, পরিবারের জন্যে সময় সব বাদেও নিজের জন্যে খানিকটা সময় বের করুন। এ সময়টুকু কেবলই নিজের জন্যে। নিজেকে নিয়ে নিজের সময়টুকু উপভোগ করুন। সময় কাটান পোষা প্রানীটির সাথে, নিন স্পা বা ম্যাসাজ, লিখতে পারেন ডায়েরী বা নিয়ে নিন ছোট্ট একটি ন্যাপ (স্বল্প সময়ের ঘুম) এই বিশ্রাম আপনাকে নতুন উদ্যামে কাজ করতে সাহায্য করবে।
সাদাকালো জীবনে বুলিয়ে নিন আপনার পছন্দের রঙের পরশ। ভালোবাসুন নিজেকে, নিজের জীবনকে। জীবনকে উপভোগের সময় তো এখনই!

 সূত্র:হেল্থ বাংলা ডট কম

Labels:

যে ১৫ টি গুণ থাকলে প্রেমিককে হাতছাড়া করবেন না

প্রেম তো করছেন, কিন্তু বিয়ে করবেন কিনা ভাবছেন? আজকাল কেবল ছেলেরাই নয়, অনেক মেয়েও এই বিষয়টি নিয়ে দ্বিধায় ভোগেন। আর ভোগাটাই স্বাভাবিক। কেননা বিয়ের পর ব্রেকআপ নয়, ডিভোর্স হয়। এবং দ্রুত গতিতে বাড়ছে ডিভোর্সের হার। এমন পরিস্থিতিতে ভেবেচিন্তে বিয়ে করাটাই শ্রেয়। কিন্তু কীভাবে বুঝবেন যে কোন মানুষটি আপনাকে ভালো রাখবে? তাহলে জেনে নিন ১৫টি বিশেষ গুণের কথা। এই ১৫টি বিশেষ গুণ যদি কোন পুরুষের মাঝে পেয়েই যান, তবে ভুল করেও হাতছাড়া করবেন না যেন!
Ideal Lover
প্রেমিককে হাতছাড়া করবেন না

যে ১৫ টি গুণ থাকলে প্রেমিককে হাতছাড়া করবেন না

১) যখন একসাথে থাকেন, সে শুধু আপনাকেই দেখে

পুরুষ মাত্রই অন্য নারীদের দিকে তাকাবেন। কিন্তু যখন আপনারা একসাথে থাকেন, তাঁর মুগ্ধ দৃষ্টি কি কেবল আপনার দিকেই থাকে? তবে জেনে রাখুন, এই মানুষটি আপনাকে আসলেই ভালোবাসেন।

২) তিনি দয়ালু মানুষ, কিন্তু দুর্বল নন

জীবনসঙ্গী দয়ালু মানুষ হওয়া বাঞ্ছনীয়। যিনি অন্যের সাথে কঠোর, আপনার প্রতি কঠোর হতে কতক্ষণ?

৩) তিনি ধৈর্যশীল

একজন পুরুষ ধৈর্যশীল হলে সংসার জীবন নিঃসন্দেহে হয়ে ওঠে অনেক বেশী সুখের, ঝগড়া হয় কম আর ভালোবাসা থাকে বেশী।

৪) তিনি দারুণ উচ্চাকাঙ্ক্ষী, কিন্তু কল্পবিলাসী নন

একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী মানুষ জীবনে অনেকদূর যাবার যোগ্যতা রাখেন। তবে আকাশ কুসুম কল্পনায় ব্যস্ত মানুষেরা নন। তেমন জীবনসঙ্গী কেবল বিপর্যয় ডেকে আনেন জীবনে।

৫) রাঁধতে জানেন

দুজনেই কর্মজীবী হলে একজন রাঁধতে জানা স্বামী নিঃসন্দেহে বাড়তি পাওয়া!

৬) দারুণ কেমিস্ট্রি

কেবল ভালোবাসা থাকলেই হবে না, দুজনের মাঝে একটা দারুণ রসায়নও থাকা চাই। আগ্রহ, উত্তেজনা, কাছে যাবার বাসনা ইত্যাদি মিলিয়েই তৈরি হয় দারুণ রোমান্স।

৭) তিনি বুদ্ধিমান, কিন্তু অহংকারী নন

বুদ্ধিমান মানুষ যদি অহংকারী হন, তবে সারা জীবন আপনাকে দাবিয়ে রাখবেন। অহংকারী পুরুষ হতে সাবধান।

৮) তিনি আপনাকে হাসাতে পারেন, ভরিয়ে রাখেন আনন্দে

যতক্ষণ তাঁর সাথে থাকেন, আপনার মনটা কি আনন্দে ভরে থাকে? তিনি কি খুব অনায়াসেই আপনাকে হাসাতে পারে? তবে জেনে রাখুন, এটাই সেই পুরুষ যাকে আপনি খুঁজছেন!

৯) না বললেও তাঁর ভালোবাসা আপনি নিজের গভীরে অনুভব করতে পারেন

মুখে ভালোবাসি না বললেও তাঁর ছোট ছোট কাজ দিয়েই কি আপনি অনুভব করতে পারেন তাঁর গভীর ভালোবাসা? এমন মিষ্টি একজন পুরুষকে ছেড়ে দেবার কথা ভাববেন না মোটেও।

১০) দুজনের সম্পর্ক রক্ষায় ইচ্ছা করেই ঝগড়ায় হেরে যান

ঝগড়া হচ্ছে খুব? ভীষণ তর্ক? দোষটা যারই হোক, কেবল শান্তি রক্ষা করতে গিয়েই কি তিনি তর্কে হেরে যান? তাহলে জেনে রাখুন, মানুষটি নিজের চাইতেও অনেক বেশী ভালো আপনাকে বাসে।

১১) আপনার যখনই কোন সাহায্য প্রয়োজন হয়, তিনি আছেন

বিশাল বড় কোন বিষয় থেকে শুরু করে একদম তুচ্ছ কোন ব্যাপার, আপনার যে কোন প্রয়োজনে তিনি বাড়িয়ে দেন সাহায্যের হাত। এমন পুরুষ ছাড়া আর কে জীবনসঙ্গী হবার যোগ্য?

১২) তিনি আপনাকে মুখে তুলে খাইয়ে দেন

মুখে তুলে খাইয়ে দেবার কাজটা সাধারণত মেয়েরা করে। যখন এই কাজটি কোন প্রেমিক করেন নিজের প্রেমিকার জন্য, বুঝতে হবে মেয়েটিকে তিনি সারা জীবন আগলে রাখবেন।

১৩) আপনার ওজন নিয়ে তাঁর মাথাব্যথা নেই

আপনি দেখতে কেমন, মোটা না চিকন ইত্যাদি নিয়ে যে পুরুষের মাথা ব্যথা নেই কিংবা যিনি আপনাকে কখনোই রোগা/মোটা হতে বলেন না- ভালবাসুন শুধু তাকেই।

১৪) আপনার সম্মান তাঁর সম্মান

আপনার সম্মান রক্ষার জন্য কি তিনি যে কোন কিছু করতে পারেন? তিনিই আপনার স্বামী হবার যোগ্য!

১৫) আপনি তাঁর জীবনের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অংশ, আপনাকে ছাড়া তিনি এলোমেলো হয়ে যান

সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এই বিষয়টি। যে মানুষ আপনাকে ছাড়া নিজেকে হারিয়ে ফেলেন, সারাটা জীবন তাঁর কাছে আপনি থাকবেন সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ নারী। আর এমন কাউকে খুঁজে ফেলে তাঁকে হারাতে দেবেন না ভুলেও।

 সূত্র:হেল্থ বাংলা ডট কম

Labels:

নখের যত্ন – ম্যানিকিওর পেডিকিওর

নখ সুন্দর রাখতে পানির ব্যবহার যত কম করা যায় ততই ভালো। কিন্তু গৃহিণীদের প্রায় সকল কাজেই পানির ছোঁয়া আছে। একটুখানি ইচ্ছা এবং সচেতনতা থাকলেই সম্ভব নখের যত্ন নেওয়া। আর নখের যত্নে ম্যানিকিওর ও পেডিকিওর জরুরি।
Nail Care
নখের যত্ন

ম্যানিকিওর

বাড়িতে অথবা পার্লারে মাসে ৩/৪ বার নখের যত্নে ম্যানিকিওর করা উচিত। বাড়িতে ম্যানিকিওর করতে চাইলে প্রয়োজনীয় প্রসাধন সামগ্রী যেকোনো ভালো মার্কেট থেকে কিনে নেবেন। এগুলো হচ্ছে—নেল কাটার, নেল ব্রাশ, নেল বাফার, নেল পলিশ, নেল পলিশ রিমুভার, ছোট তোয়ালে, ছোট গামলা এমারিবোর্ড, স্টেরিলাইজড তুলো, অরেঞ্জ স্টিক, কিউটিকল সফলার লোশন, ক্রিম বা অলিভ অয়েল, বিউটিকল সিজার, বেস-কোট নেল এনামেল বা ন্যাচারাল এনামেল। প্রথমে হাতের নখ কেটে নিন ডিম্বাকৃতির শেপে। নখ না কাটলে চাইলে এমারি বোর্ড দিয়ে কোণ থেকে ঘষে ঘষে অর্ধ গোলাকার করে নিন। এমারি বোর্ড দিয়ে নখ ঘষার সময় খেয়াল রাখবেন কোণ থেকে মাঝ বরাবর ঘষবেন কখনোই মাঝ থেকে কোণ বরাবর ঘষবেন না। ঘষলে নখ মসৃণ এবং সুন্দর হবে না। নখে নেল পলিশ লাগানো থাকলে নেল পলিশ রিমুভারে তুলো ভিজিয়ে প্রতিটি নখে চেপে চেপে ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। ক্রিম বা অলিভ অয়েল তুলোতে ভিজিয়ে প্রতিটি নখে লাগান। ছোট গামলার কুসুম কুসুম গরম পানিতে শ্যাম্পু এবং এক চিমটি লবণ গুলে আঙুলগুলো ডুবিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। এরপর নেল ব্রাশ দিয়ে ঘষে ঘষে নখ পরিষ্কার করুন। এবার নরমাল পানিতে হাত ধুয়ে তোয়ালে দিয়ে মুছে হাত শুকিয়ে নিন।
নেল এনামেল লাগাবার আগে ইচ্ছা করলে নেল বাফার দিয়ে একদিকে ঘষে ঘষে নখে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে নিতে পারেন। আধ মিনিট করে একেকটা নখ ঘষলেই চলবে। বাফার ব্যবহার করলে নখ বেশি চকচক করে ও বেশি রক্ত চলাচল করার দরুণ নখ ভালো থাকে।

পেডিকিওর

Manicure
কাটা নখ এমারি বোর্ড দিয়ে ঘষে মসৃণ করে নিন
মাসে ২/৩ বার পেডিকিওর করলেই হবে। ম্যানিকিওর করার জন্য যেসব জিনিসের তালিকা দেওয়া হয়েছে তার সাথে মাঝারি বালতি, পিউমিস স্টোন বা পা ঘষার ব্রাশ/ছোবড়া যোগ করলেই হবে। বাড়িতে পেডিকিওর করবেন যেভাবে—নেল এনামেল রিমুভার দিয়ে পুরোনো নেল এনামেল হাতের নখের মতো তুলে ফেলুন। নেল কাটার দিয়ে নখ কেটে নিন। পায়ের নখ আড়ের দিকে সোজা করে কাটবেন, গোল করে নয়। কাটা নখ এমারি বোর্ড দিয়ে ঘষে মসৃণ করে নিন। গোলাকার আকৃতি করবেন না। সোজা করে একদিকে ঘষবেন।
এক বালতি হালকা গরম পানিতে শ্যাম্পু এবং একটু লবণ গুলে নিন। এবার পা দুটো ২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এক পা উঠিয়ে নেইল ব্রাশ দিয়ে নখ পরিষ্কার করে দিন, এবার অন্য পা একইভাবে পরিষ্কার করে নিন। ছোবড়া বা পা ঘষার ব্রাশ দিয়ে ঘষে ঘষে পরিষ্কার করে নিন। যদি পায়ের পাতা বেশি কর্কশ হয় অথবা কালো ছাপ থাকে। পিউমিস স্টোন দিয়ে ঘষে ঘষে মসৃণ করে নেবেন ও দাগ তুলে ফেলবেন। অরেঞ্জ স্টিকে তুলো জড়িয়ে নখের কোণা পরিষ্কার করে নিন।

নখের যত্নে যা যা করতে হবে

  1. অতিরিক্ত পানি, অতিরিক্ত গরম, ঠাণ্ডা, ক্ষার জাতীয় পদার্থ নখের জন্য ক্ষতিকর।
  2. দিনে ২ বার সাবান পানিতে কবজি থেকে নখ পর্যন্ত হাত ও নখসহ পায়ের পাতা ধোয়া দরকার।
  3. হাত-পা ধোয়ার পর তেল, ক্রিম বা লোশন মেখে নেবেন।
  4. হাত পা সব-সময় শুকনো রাখার চেষ্টা করবেন।
  5. নখ প্রসাধনের জন্য যে নেল এনামেল ব্যবহার করা হয় তা খুব উপকারী। এসব সামগ্রী উজ্জ্বলতার পাশাপাশি নখ মোটা করে। তাই চট করে নখ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
 সূত্র:হেল্থ বাংলা ডট কম

Labels: ,

মেয়েদের অবাঞ্ছিত লোম কারণ ও প্রতিকার

মেয়েদের মুখে যদি ছেলেদের মত লোম গজাতে শুরু করে, তবে তা খুব বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্যই নয়, শরীরের অনেক রোগের কারণেও এমন অবস্থা হতে পারে। তাই চিকিৎসা নেয়াটাও জরুরী।
মেয়েদের ঠোঁটের ওপর, চিবুক, বুক, পেট বা পিঠে যদি তুলনামূলক মোটা, কালো কখনো বা একটু ঘন লোম দেখা দেয়, তাতে যেকোনো মেয়েই বিব্রত এবং দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ডাক্তারি ভাষায় এই অবাঞ্ছিত লোম বৃদ্ধিকে হারসুটিজম বলা হয়।
হারসুটিজম
এ সমস্যা খুব বিরল কিছু নয়। সমীক্ষায় দেখা গেছে যে বিশ্বব্যাপী ৫% থেকে ১৫% বয়ঃসন্ধিপ্রাপ্ত বা প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েরা এ সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন। তবে পারিবারিক ইতিহাস, গোত্র বা জাতিভেদে এর তারতম্য দেখা যায়। মধ্য এবং দক্ষিণ এশিয়ার মেয়েদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি। ওজন আধিক্য বা স্থূল মেয়েদেরও এ সমস্যা বেশি হয়।

কীভাবে অবাঞ্ছিত লোম তৈরি হয়?

মেয়েদের শরীরে স্বাভাবিকভাবে এন্ড্রোজেন বা পুরুষ হরমোনের পরিমাণ খুব অল্প। কিন্তু কখনো ডিম্বাশয় বা এডরেনাল গ্রন্থি থেকে এই এন্ড্রোজেন অধিক পরিমাণে তৈরি হলে বা এন্ড্রোজেনের অধিক কার্যকারিতার কারণে এই হারসুটিজম দেখা দিতে পারে।
অবাঞ্ছিত লোম

কী কী কারণে অতিরিক্ত এন্ড্রোজেন তৈরি হয়?

প্রথমেই জেনে নেওয়া ভালো যে এটা কোনো রোগ নয়, বরং লক্ষণ। বিভিন্ন কারণে পুরুষ হরমোন এন্ড্রোজেনের আধিক্য হয় মেয়েদের রক্তে।

রিস্ক ফ্যাক্টরঃ

- সাধারণত মেনোপজ হয়ে গিয়েছে বা হচ্ছে এই সময়টা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। মেনোপজ হল যখন মাসিক একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। এই সময়ে হরমোন পরিবর্তন হয়ে যায়, তাই ঝুঁকি বেশি। তবে যে কোন বয়সেই এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- অবিবাহিত মহিলাদের মাসিকের অনিয়মিত অবস্থাও এর সাথে বিদ্যমান থাকতে দেখতে হবে।
- বিবাহিত হলে অনিয়মিত মাসিকের সাথে সন্তান হওয়া বা না হওয়ার সম্পর্ক জড়িত থাকে। সেক্ষেত্রে ও রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা নিতে হবে।

কারণগুলো হলো:

  • পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রম: ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে অবাঞ্ছিত লোমের কারণ এটি। অবাঞ্ছিত লোম বৃদ্ধির পাশাপাশি মুখে ব্রন, মাথার চুল পরা, ঘাড়ে কালো দাগ, ওজন বৃদ্ধি বা স্থ্থূলতা, অনিয়মিত মাসিক, গর্ভধারণে সমস্যা, উচ্চ রক্তশর্করা-কোলেস্টরল, উচ্চ রক্তচাপ, ডিম্বাশয়ে সিস্ট ইত্যাদি থাকতে পারে।
  • অনির্ণিত কারণ: অনেক সময় সুনির্দিষ্ট কারণ অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরও পাওয়া যায় না। পারিবারিক ইতিহাস থাকে বা স্থূল মেয়েদের ক্ষেত্রে দেখা দেয়।
  • ডিম্বাশয় এবং এডরেনালগ্রন্থির টিউমার বা হাইপারপ্লাসিয়া: এ রকম টিউমার থেকে অত্যধিক পরিমাণ এন্ড্রোজেন হরমোন নিঃসরণের জন্য গলার স্বর পরিবর্তিত হতে পারে, শরীরের গঠন বা মাংসপেশির পুরুষালি পরিবর্তন ঘটে, এমনকি জননেন্দ্রিয়রও পরিবর্তন দেখা দেয়।
  • অন্যান্য হরমোনজনিত রোগ: থাইরয়েডের সমস্যা, কুসিংস সিনড্রম, এক্রোমেগালি, প্রোলেকটিনোমা, ইনসুলিন রেজিসটেন্স সিনড্রম ইত্যাদি কারণে এই সমস্যা হতে পারে। তবে এগুলো বিরল সমস্যা।
  • ওষুধ: ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়ও এ সমস্যা হতে পারে। যেমন স্টেরয়েড, ডেনাজল, মিনোক্সিডিল, মেটোক্লোপ্রামাইড, মিথাইলডোপা, ফেনোথায়াজিন, প্রজেস্টেরন ইত্যাদি।
থাইরয়েডের সমস্যা

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবেঃ

১) লোম খুব দ্রুত হারে বাড়তে থাকলে।
২) আরও কিছু পুরুষদের লক্ষণ বিদ্যমান থাকলে, যেমন-কণ্ঠস্বর পরিবর্তন, ব্রণ হওয়া, পেশি বেড়ে যাওয়া, ব্রেস্ট ছোট হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
৩) সাথে যদি পিরিয়ডের সমস্যা থাকে।

রোগ নির্ণয়ঃ

ব্লাড টেস্ট করে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। কিছু হরমোন লেভেল দেখতে হয়। যেমন -
- Testosterone
- Dihydroepiandrosterone sulfate (DHEA-S)
- Luteinizing hormone (LH)
- Follicle stimulating hormone (FSH)
- Prolactin
- 17-hydroxyprogesterone

মেয়েদের অবাঞ্ছিত লোমের প্রতিকার

কারণ নির্ধারণ এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া জরুরি।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হয় এবং কমপক্ষে ছয় মাস সময় লাগতে পারে ফল পাওয়া শুরু হতে।
ওষুধের পাশাপাশি ওয়াক্সিং, শেভিং, ক্রিম, ইলেকট্রলাইসিস, লেসার ইত্যাদির মাধ্যমে সাময়িকভাবে লোম কমিয়ে ফেলা যায়।
ওজন কমানো অত্যন্ত জরুরি। উচ্চ রক্তশর্করা, কোলেস্টরল বা উচ্চরক্তচাপ হলে চিকিৎসা নিন।

সূত্র:হেল্থ বাংলা ডট কম


Labels:

নারীস্বাস্থ্য সমস্যা – জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি

নারীস্বাস্থ্য সমস্যা – জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি

সমস্যাঃ আমার বয়স ২৭ বছর। বিয়ে হয়েছে সাড়ে চার বছর। আড়াই বছরের একটি সন্তান রয়েছে। জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি খেলে খুব সমস্যা হতো বলে আমি ২০০৮ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত তিন মাস অন্তর চারটি জন্মবিরতির ইনজেকশন নিই। এর পর থেকে আমার স্বামী প্রতিরোধক নিচ্ছেন। সমস্যা হচ্ছে, ইনজেকশন নেওয়া শুরু করার পর থেকে আমার পিরিয়ড বন্ধ আছে। এ বিষয়ে এক মাস আগে চিকিৎসককে দেখালে তিনি এটাকে ইনজেকশনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বলেন এবং আমাকে কোনো ওষুধ না দিয়ে আরও অপেক্ষা করতে বলেন। উল্লেখ্য, আগে কখনো আমার পিরিয়ড-সংক্রান্ত কোনো সমস্যা ছিল না। আমার ছেলে নিয়মিত বুকের দুধ পান করে। মাঝেমধ্যে কোমরে হালকা ব্যথা ছাড়া তেমন কোনো সমস্যা নেই। তবে দীর্ঘ ১৬ মাস পিরিয়ড না হওয়ায় আমি দুশ্চিন্তায় আছি এবং মনে হচ্ছে এতে আমার ওজন বাড়ছে। এ প্রসঙ্গে পরামর্শ দিলে কৃতজ্ঞ থাকব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
কোতোয়ালি, চট্টগ্রাম।
ওরাল পিল
পরামর্শঃ জন্মবিরতির ইনজেকশন নিলে এ রকম হতে পারে। এ ক্ষেত্রে অপেক্ষা করাই চিকিৎসা। যেহেতু বেশ কয়েক মাস অতিক্রান্ত হয়েছে এবং আপনি উদ্বেগের মধ্যে আছেন, তাই মাসিক হয়ে যাওয়া প্রয়োজন। আপনি ট্যাবলেট নরমেনস একটি করে তিনবার পাঁচ দিন খাবেন। পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে আশা করি মাসিক হয়ে যাবে। ওজন যাতে না বাড়ে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
পরামর্শ দিয়েছেন
রওশন আরা খানম
স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিশেষজ্ঞ
সহকারী অধ্যাপক, বেগম খালেদা জিয়া মেডিকেল
কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ১২, ২০০৯

Labels: ,

ইয়াবা খেলে কি হয় – মাদকতার নিষিদ্ধ জগত

বাংলাদেশের টেকনাফ বর্ডার দিয়ে মাদক হিসেবে ইয়াবা প্রথম প্রবেশ করে ১৯৯৭ সালে। ইয়াবা হলো মেথাফেটামাইন ও ক্যাফেইনের মিশ্রণ। মাদকটি একাধারে মস্তিষ্ক ও হূদ্যন্ত্র আক্রমণ করে। এর পরবর্তী সময়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন জার্মান প্রেসিডেন্ট এডলফ হিটলার তার মেডিকেল চিফকে আদেশ দিলেন দীর্ঘ সময় ব্যাপি যুদ্ধক্ষেত্রের সেনাদের যাতে ক্লান্তি না আসে এবং উদ্দীপনায় যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারে বা বিমানের পাইলটের নিদ্রাহীনতা, মনকে উৎফুল, চাঙ্গা রাখার জন্য একটা কিছু আবিস্কার করতে।
ইয়াবা
ইয়াবা
টানা ৫ মাস রসায়নবিদগণ চেষ্টা চালিয়ে মিথাইল অ্যামফিটামিন ও ক্যাফেইনের সংমিশ্রনে তৈরি করলেন ইয়াবা। ব্যাস! হিটলারের উদ্দেশ্য সফল। সেনারা মানসিক শক্তিতে বলিয়ান হল।

ইয়াবা আসলে কী জিনিস

এর মূল শব্দ থাই থেকে উত্পত্তি। সংক্ষিপ্ত অর্থ পাগলা ওষুধ। অনেকে একে বলে ‘ক্রেজি মেডিসিন‘। মূল উপাদান মেথঅ্যামফিটামিন। আসলে ইয়াবা নেশা জাতীয় ওষুধ। এক ভয়াবহ মাদক যা মস্তিষ্ক, হূদযন্ত্র এবং শরীরের যে কোনো অঙ্গকেই আক্রান্ত করতে পারে। ধীরে ধীরে অকেজো করে দেয় একটি সুন্দর দেহ, মন ও মানসিকতার। ইয়াবা আসক্তির কারণে মস্তিষ্কের বিকৃতি হতে পারে। মাঝে মাঝে ইয়াবার সঙ্গে ক্যাফেইন বা হেরোইন মেশানো হয়, যা আরও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এটি এক সময় সর্দি ও নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার ওষুধ হিসেবে ব্যবহূত হতো কোনো কোনো দেশে। আরো ব্যবহার করা হতো ওজন কমানোর ওষুধ হিসাবে। পরবর্তী সময়ে সাধারণ মানুষ বিশেষত শিক্ষার্থী, দীর্ঘ যাত্রার গাড়ি চালক ও দৌড়বিদরা এটি ব্যবহার শুরু করেন। ধীরে ধীরে এর কুফল বা দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া উদঘাটিত হতে থাকায় বিশ্বব্যাপী এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির সেনাদের নিদ্রা, ক্ষুধা ও ক্লান্তিহীন করার জন্য ইয়াবা জাতীয় ওষুধ খাওয়ানো হতো। বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ক্লন্তি দূর করতে ও সজাগ থাকতে সেনাদের মধ্যে জনপ্রিয় ছিল মেথঅ্যামফিটামিন। সেনারা হতো হিংশ্র, ক্লান্তিহীন ও আগ্রাসী। কিন্তু একবার আসক্ত হয়ে যুদ্ধ ফেরত সেনারা মানসিক অবসাদ গ্রস্ততায় ভুগত এবং আরও হিংশ্র হয়ে উঠত। এক সেনা আরেক সেনাকে গুলি করে মারত, আবার কখনো নিজে আত্মহত্যা করত।

ঐশী জন্ম দাতা দাত্রী পিতা মাতাকে খুন করেছে

ঐশী বাংলাদেশ তথা পৃথিবীতে এখন একটি আলোচিত নাম। যা নাড়া দিয়েছে কোটি কোটি মানুষের হূদয় ও বিবেককে। কারণ একটাই, সে তার জন্ম দাতা দাত্রী পিতা মাতাকে খুন করেছে। কোন সন্তান কি পারে তার মা বাবাকে খুন করতে? তাও আবার মেয়ের হাতে মা বাবা খুন! শিশুর কোমল মনটি কেন বিগড়ে গেল? কোমল মনটি কোথায় যেন হোঁচট খেয়ে মা বাবা খুনের দায় ঘাড়ে নিয়ে আজ জেলে। বাহ্যিক দৃষ্টিতে খুনের দায় ঐশীর ঘাড়ে। কিন্তু একটু গভীর দৃষ্টিতে তাকালে দেখা যায়, কোনো কোমল হূদয় বা মানুষের বিবেক এই খুন করেনি। খুন করেছে ইয়াবা নামক এক ভয়ানক সর্বানাশা মাদক।
Drug
Drug
তরুণ প্রজন্ম যে একটু একটু করে হলেও মাদকতার নিষিদ্ধ জগতে হাত বাড়িয়েছে, তা আজ আর কারও অজানা নেই। ঐশীর জীবনের ভয়াবহ পরিণতি আমাদেরকে চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়ে গেছে, আমাদের ইয়াবা রুপী মাদকতার বিষাক্ত ছোবল কতটা ভয়াবহ। ইয়াবা নামের ছোট্ট ট্যাবলেটটি দেখতে অনেকটা ক্যান্ডির মতো, স্বাদেও তেমনি মজাদার। তরুণ তরুণীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে মূল উপাদানের সঙ্গে মেশানো হয় আঙুর, কমলা বা ভ্যানিলার ফ্লেভার, সবুজ বা লাল কমলা রঙ। ফলে আসক্ত ব্যক্তিরা এর প্রচন্ড ক্ষতিকর প্রভাবটুকু প্রথমে বুঝতে পারে না। একই কারণে এটি পরিবহন করা ও লুকিয়ে রাখাও সহজ।
ইয়াবার আনন্দ আর উত্তেজনা আসক্ত ব্যক্তিদের সাময়িকভাবে ভুলিয়ে দেয় জীবনের সব যন্ত্রণা। তারা বাস করে স্বপ্নের এক জগতে। এই ভয়ানক মাদক সেবন করলে মনে উত্ফুল্ল ভাব তৈরি হয়, মুড হাই হয়ে যায়। ইয়াবা ট্যাবলেট খেলে সেক্স কি বাড়ে? এমনকি ইয়াবার প্রচন্ড উত্তেজক ক্ষমতা আছে বলে যৌন উত্তেজক হিসেবে অনেকে ব্যবহার করে এটি। এতে যৌন উত্তেজনা বেড়ে যায়, মনে উত্তেজনা আসে। তাই অনেক যুবক যুবতীরা কৌতূহল বশত ইয়াবা সেবন করে থাকে। ক্ষুধা কমিয়ে দেয় বলে স্লিম হওয়ার ওষুধ হিসেবে অনেকে শুরু করে ইয়াবা সেবন। কিছুটা ওজন কমে। ঘুম কমিয়ে দেয়, সারা রাতের পার্টির আগে ক্লান্তিহীন উপভোগ নিশ্চিত করতে অনেকের পছন্দ ইয়াবা। তবে সবগুলোই সাময়িক। কিন্তু সাময়িক আনন্দের এই ভয়ানক ট্যাবলেটটি যে তাদের ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে, তা টের পাওয়ারও অবকাশ সে সময় তাদের আর থাকে না। দেখা যায়, কিছুদিন ইয়াবা সেবনের পর শুরু হয় এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। কৌতূহল বশত: কয়েকদিন সেবনের পরই আসক্তি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে, এটি ছেড়ে দেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তখন ইয়াবা ছাড়া আর কিছুই ভালো লাগে না। ওই মাদক পেতে যে কোনো হীন অপকর্ম করতেও হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। প্রথমে কম ডোজে এ ট্যাবলেট কাজ করলেও ধীরে ধীরে ডোজ বাড়াতে হয়। আগে যে পরিমাণ ইয়াবা আনন্দ এনে দিত, পরে তাতে আর হয় না। বাড়তে থাকে ট্যাবলেটের পরিমাণ, ক্ষণস্থায়ী আনন্দের পর বাড়তে থাকে ক্ষতিকর নানা উপসর্গও। প্রথমেই শুরু হয় মানসিক অবসাদ গ্রস্থতা। শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়তে থাকে, মেজাজ হয় খিটখিটে, গলা মুখ শুকিয়ে আসতে থাকে, অনবরত প্রচন্ড ঘাম আর গরমের অসহ্য অনুভূতি বাড়তে থাকে। বাড়ে নাড়ির গতি, রক্তচাপ, দেহের তাপমাত্রা আর শ্বাস প্রশ্বাসের গতি। দেহে আসে মানসিক অবসাদ, ঘুম না হওয়া এবং চিন্তা ও আচরণে বৈকল্য দেখা দেয়। মানুষ আর মানুষ থাকে না। হয়ে উঠে হিংশ্র, হিতাহিত জ্ঞানশূন্য। ন্যায় অন্যায় বোধ লোপ পায়। হয়ে উঠে অপরাধ প্রবণ। অনায়াসে মানুষ খুন করতেও দিদ্ধা বোধ করেনা। এক সময়ে শরীরের অন্যান্য অঙ্গও অকেজো হয়ে যায়।

ইয়াবা সেবিরা উচ্চ রক্তচাপে ভোগে

দীর্ঘদিনের আসক্ত ব্যক্তিরা উচ্চ রক্তচাপে ভোগে। মস্তিষ্কের ভেতরকার ছোট রক্তনালিগুলো ক্ষয় হতে থাকে, এগুলো ছিঁড়ে অনেকের রক্তক্ষরণ শুরু হয়। স্মৃতিশক্তি কমে যায়, মানসিক নানা রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, অহেতুক রাগারাগি, ভাংচুরের প্রবণতা বাড়ে। পড়াশোনা, কর্মক্ষেত্র বা পারিবারিক জীবনে বিরূপ প্রভাব পড়ে। সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থতা বা পিছিয়ে পড়তে থাকায় আসক্ত ব্যক্তিরা বিষন্নতায় আক্রান্ত হয়। কারও কারও মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয়। দৃষ্টি বিভ্রম, শ্রুতি বিভ্রম আর অস্বাভাবিক সন্দেহ প্রভৃতি উপসর্গ থেকে এক সময় জটিল মানসিক ব্যধিও দেখা দেয়। বেশি পরিমাণে নেওয়া ইয়াবা সেবনের ফলে শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রমের ব্যত্যয় ঘটিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে।
সামগ্রিক দৃষ্টিতে ইয়াবা সেবনের ক্ষতি অসীম ও অপূরণীয়ও এটি পরিবারকে ধ্বংস করে। সমাজকে করে কলুষিত এবং দেশকে করে পঙ্গু। পারিবারিক ও সামাজিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পরে। রাষ্ট্রের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায়। এই মাদক জীবন থেকে জীবন এবং হূদয়ের আবেগ অনুভুতি কেড়ে নেয়। আলোর পথ ছেড়ে নিয়ে যায় অন্ধকার পথে। স্বাধীন হূদয় পরিণত হয় নেশার দাসে। ইয়াবার পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি আসক্ত ব্যক্তিরা এর ওপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। একবার ইয়াবা নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা বা নির্দিষ্ট সময় পর আবার না নিলে শরীরে ও মনে নানা উপসর্গ দেখা দেয়। ফলে বাধ্য হয়ে আসক্ত ব্যক্তিরা আবার ফিরে যায় নেশার জগতে।

ইয়াবার প্রতিকার ও প্রতিরোধ

ইয়াবা আসক্তি প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ করা অনেক সহজ। সুতরাং প্রতিরোধের উপর বেশি মনোযোগ দিতে হবে। এই মাদকের আগ্রাসন থেকে দেশের যুব সমাজকে রক্ষা করতে প্রয়োজন সামগ্রিক প্রতিরোধ। আসক্ত ব্যক্তি, যিনি পুনরায় স্বাভাবিক সুস্থ জীবন ফিরে পেতে চায়, তাদের নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। এ কথা মোটেই সত্য নয় যে, তারা আর কখনোই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবে না। শুধু মাত্র প্রয়োজন ধৈর্য সহকারে দীর্ঘমেয়াদি চিকিত্সা। একবার কেউ আসক্ত হয়ে গেলে তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে ভালোভাবে বোঝাতে হবে, যাকে বলে কাউন্সেলিং। কোনক্রমেই বকাবকি, তালাবদ্ধ করে রাখা যাবে না। চিকিত্সার জন্য রাজি করিয়ে তার শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার চিকিত্সার পাশাপাশি মানসিক চিকিত্সার জন্য মনোরোগ চিকিত্সকের পরামর্শ নেওয়া জরুরী। মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে বিভিন্ন ধরনের চিকিত্সা পদ্ধতি আসক্ত ব্যক্তিদের আশার আলো দেখাচ্ছে। তারা ফিরে যেতে পারছে মাদকমুক্ত জীবনধারায়। ওষুধ, সাইকোথেরাপি ও অন্যান্য উপায়ে মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে স্বাভাবিক ও সুস্থ জীবনযাপন পদ্ধতিতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়। পরিবর্তন করার চেষ্টা করা হয় তার আগের পারিপার্শিক পরিবেশ, যা তাকে মাদকাসক্ত হতে উদ্ধুদ্ধ করেছিল। এতে মানসিক রোগ চিকিত্সক ও মনোবিজ্ঞানীর যেমন ভূমিকা রয়েছে, তেমনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে পরিবার, আত্মীয়স্বজন আর প্রকৃত ভালো বন্ধুরও। একজন নেশাসক্ত ব্যক্তি সবার সম্মিলিত সহযোগিতায়ই আবার ফিরে পেতে পারে মাদকমুক্ত সুস্থ জীবন। আর প্রতিরোধ একক ভাবে কোনো ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ বা দেশের পক্ষে করা সম্ভব নয়। সবাইকে নিয়েই এই প্রতিরোধ যুদ্ধে নামতে হবে এবং এই যুদ্ধ চলমান রাখতে হবে। গড়ে তুলতে হবে মাদক প্রতিরোধ সামাজিক আন্দোলন।দৃঢ় পারিবারিক বন্ধন ও সঠিক শিক্ষা মাদক প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। প্রথমেই এসব দায়িত্ব বর্তায় পরিবারের উপর। আর সমাজ ও দেশের দায়িত্ব মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে ঘৃণা ও অপরাধী হিসেবে বড় করে না দেখে কোথা থেকে, কীভাবে, কারা মাদক সরবরাহকারী বা কারা এসবের মূল হোতা, তাদের বিচার ও শাস্তির আওতায় আনা। তবেই এই ভয়ানক ইয়াবার ছোবল থেকে আমাদের ভবিষ্যত্ প্রজন্ম ও কোমলমতি সন্তানদের রক্ষা করা সম্ভব হবে। তাই এখনই উচিত সবাইকে একতাবদ্ধ হয়ে মাদক বিরোধী স্লোগানে সোচ্চার হওয়া। মনে রাখতে হবে অপরাধী নয়, অপরাধই ঘৃণার বিষয়। স্বাভাবিক সুস্থ জীবনে ফিরে আসতে তাদের প্রতি ঘৃণা নয়, বরং সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।


অধ্যাপক ডাঃ এ বি এম আব্দুল্লাহ
লেখক:ডীন, মেডিসিন অনুষদ
অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়
সূত্র:হেল্থ বাংলা ডট কম

Labels:

বার্ধক্য রোধে হরমোন

হরমোন হচ্ছে শক্তিশালী কিছু কেমিক্যাল, যা আমাদের দেহের স্বাভাবিক কাজকর্ম বজায় রাখতে সহায়তা করে। আমাদের দেহে প্রাকৃতিকভাবেই হরমোন উৎপন্ন হয় এবং বিভিন্ন উপায়ে দেহে প্রভাব বিস্তার করে।
তবে কিছু কিছু হরমোনের মাত্রা বয়সকালে কমতে থাকে অথবা আমাদের দেহও পর্যাপ্ত হরমোন উৎপন্ন করতে অক্ষম হয়ে পড়ে। সেসব ক্ষেত্রে বাইরে থেকে হরমোন প্রয়োগ কতটুকু বিজ্ঞানসম্মত কিংবা ফলদায়ক সেটাই এখানে আলোচনার বিষয়।
বার্ধক্য রোধে হরমোন
বার্ধক্য রোধে হরমোন

বার্ধক্য রোধে হরমোন

বিশেষ কয়েকটি হরমোন যেমন DHEA, গ্রোথ হরমোন, টেস্টোসটেরন, ইস্ট্রোজেন এ ক্ষেত্রে প্রণিধানযোগ্য। যৌবন ধরে রাখার জন্য কিংবা বয়স পিছিয়ে দেয়ার জন্য বাইরে থেকে এগুলোর ব্যবহার কতটুকু ফলপ্রসূ অথবা এসব হরমোন আদৌ গুরুত্বপূর্ণ কি-না, তা আজো বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বাস্তব কথা হচ্ছে, যাদের বেলায় সত্যিকারভাবেই হরমোনের ঘাটতি বা সম্পৃক্ততা রয়েছে তাদের বেলায় কিছুটা উপকারী হলেও এসব হরমোনের ব্যাপারে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। সঠিক মাত্রায় প্রয়োগে দেহ সুস্থ থাকবে, কিন্তু ভুল মাত্রায় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এবার দেহে প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত হরমোনের কার্যকারিতার সাথে কৃত্রিমভাবে প্রয়োগকৃত হরমোনের পার্থক্য নিয়ে আলোচনা করা যাক। দেহের অভ্যন্তরস্থ কোষগুলোর সমষ্টিতে গ্রন্থির সৃষ্টি এবং নালীবিহীন গ্রন্থি নিঃসৃত হরমোন রক্তে মিশ্রিত হয়ে এবং বাহিত হয়ে দেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে কাজ করে, কিন্তু কৃত্রিমভাবে দেহে নিঃসৃত হরমোনের মতো নয়। কারণ দেহে হরমোন বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় নিঃসৃত হয়ে থাকে। আরেকটি পার্থক্য হচ্ছে, প্রয়োগকৃত হরমোন দেহে বেশি মাত্রায় বিরাজ করতে পারে। ফলে নেগেটিভ প্রভাব দেখা দিতে পারে। এমনকি দেহের হরমোনও বিপরীতমুখী প্রভাব সৃষ্টি করে। তাই অল্পমাত্রার এসব রাসায়নিক যৌগ হরমোন দেহ থেকেই নিঃসৃত হোক অথবা বাইরে থেকে প্রয়োগ করা হোক না কেন, এগুলোর ব্যাপক কার্যকারিতা রয়েছে।

শরীরের বিভিন্ন হরমোন
প্রথমেই দেহের বৃদ্ধি সাধনকারী হরমোন গ্রোথ হরমোন নিয়ে আলোচনা করা যাক। কারো কারো মতে, এই গ্রোথ হরমোন বার্ধক্যেও লক্ষণগুলো কমাতে ভূমিকা রাখে। যেমন মাংসপেশির বৃদ্ধি এবং চর্বি কমানো এবং দেহে শক্তি ও ভালো লাগা এবং সুস্থ থাকার অনুভূতি সৃষ্টিতে এই হরমোন সহায়ক।
আমাদের মস্তিষ্কে অবস্থিত পিটুইটারি গ্রন্থিকে মাস্টার গ্লান্ডও বলা হয়। তা থেকে নিঃসৃত গ্রোথ হরমোন আমাদের দেহের টিস্যু ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও পরিপূর্ণতা নিয়ন্ত্রণের জন্য অতি জরুরি। বিশেষ করে শিশুদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই গ্রোথ হরমোন বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে এর মাত্রা কমে যেতে থাকে।
বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাইরে থেকে প্রয়োগকৃত এই হরমোন ব্যক্তিবিশেষে উপকার নিয়ে আসতে পারে। অনেক সময় শিশুরা অস্বাভাবিকভাবে খাটো হতে পারে যদি তাদের শরীরে এই হরমোন সঠিকভাবে সৃষ্টি না হয়। এসব ক্ষেত্রে বাইরে থেকে প্রয়োগ করলে তা দৈহিক বৃদ্ধি ঘটবে। অন্য দিকে তরুণ বয়সে যদি গ্রোথ হরমোন নিয়ন্ত্রণকারী পিটুইটারি গ্রন্থি কোনো কারণে টিউমারের জন্য অথবা অন্য কোনো অপারেশনের ফলে ফেলে দিতে হয় তাহলে এই হরমোন আর সৃষ্টি হয় না এবং এসব ক্ষেত্রে মেদবহুল দেহের সৃষ্টি হয়। এসব রোগীর ক্ষেত্রে বাইরে থেকে হরমোন প্রয়োগ করলে ওজন কমে যাবে।
এখনো রীতিমতো গবেষণা হচ্ছে, এই গ্রোথ হরমোন বৃদ্ধ বয়সে প্রয়োগের ফলে এ সময়ে তাদের মাংসপেশি শক্তিশালী ও দেহের চর্বি কমানো যায় কি-না। এ ধরনের গবেষণায় রোগীদের আরো বিশেষ পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধানে রেখে দেখা হয়েছে যে, এই বয়সে এই হরমোন প্রয়োগে কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে ডায়াবেটিস রোগ ত্বকে ও টিস্যুতে পানি টেনে নিয়ে আসাতে ব্লাডক্যান্সার বেড়ে যেতে পারে এবং হার্ট ফেইলিউর হতে পারে, অস্থিসন্ধিতে ব্যথাও হতে পারে। যদিও বিদেশে বহু লোক বার্ধক্য ঠেকাতে অঢেল অর্থ অপচয় করছেন, দেহে বাইরে থেকে হরমোন প্রয়োগ করছেন কিন্তু ফল খুব আশাপ্রদ নয়।

টেস্টোসটেরন ঠিক ও কম থাকলে যা যা হবার কথা
এবারে টেস্টোসটেরন হরমোন প্রসঙ্গে আলোচনা করা যাক টেস্টোসটেরন হরমোন পুরুষ হরমোন হলেও নারী-পুরুষ উভয়ের দেহে টেস্টোসটেরন উৎপাদিত হয়। পুরুষদের দেহে টেস্টোসটেরন মাত্রা বেশি হওয়াতে পুরুষালি লক্ষণ যেমন কণ্ঠস্বর ভরাট, দাড়ি-গোঁফ গজানো এবং মাংসপেশির প্রশস্ততা ইত্যাদি দেখা দেয়। এই টেস্টোসটেরন হরমোন পুরুষদের যৌন অনুভূতি, চেতনা ও পুরুষাঙ্গের উত্থান ক্ষমতায় বিশেষ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
বার্ধক্যে টেস্টোসটেরনের মাত্রা কমে যেতে পারে। তবে বার্ধক্যে যে যৌন দুর্বলতা দেখা দিয়ে থাকে তার সব কারণই কিন্তু টেস্টোসটেরন কমে যাওয়ার জন্য নয়। যেমন কিছু ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস, রক্তনালীর সমস্যা ইত্যাদি আরো কিছু কারণ রয়েছে।
ওষুধ হিসেবে টেস্টোসটেরন ব্যবহার হয়ে আসছে অনেক আগে থেকেই, তবে ব্যবহারের যৌক্তিকতা তাদের জন্যই হওয়া উচিত, যাদের দেহে টেস্টোসটেরনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কম রয়েছে অথবা যাদের দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণে হরমোন তৈরি হচ্ছে না। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, যাদের দেহের মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্রন্থি কোনো কারণে নষ্ট হয়ে গেছে তা টিউমার অথবা ইনফেকশনের কারণে হতে পারে অথবা টেস্টোসটেরন উৎপাদনকারী অণ্ডকোষ কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অথবা অসুস্থ থাকার কারণেও হতে পারে।
যাদের সত্যিকারভাবেই টেস্টোসটেরনের মাত্রা অপূর্ণতায় রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে বাইরে থেকে প্রয়োগকৃত টেস্টোসটেরন ওষুধের অনেক উপকারিতা ও কার্যকারিতা রয়েছে। এই হরমোনের অভাবে পুরুষদের মাংসপেশি ও হাড় দিন দিন দুর্বল হয়ে যেতে পারে। সেই সাথে শুধু এই হরমোনের অভাবে ও স্বল্পতায় যৌন উদ্দীপনা ও আগ্রহ এবং ক্ষমতা এবং বিশেষ করে পুরুষাঙ্গের উত্থান ক্ষমতা কমে যেতে পারে। বাইরে থেকে প্রয়োগকৃত হরমোন ব্যবহারে এই সমস্যাগুলো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। কারণ এর ফলে হরমোনের স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখা যায়।

তবে সব কিছুরই অতিরিক্ত প্রয়োগ ও ব্যবহার ক্ষতিকর। টেস্টোসটেরনের প্রয়োজনীয়তা ও কার্যকারিতা থাকার পরও এর অতিরিক্ত স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ও টেস্টোসটেরন হরমোনের ব্যবহার মাংসপেশির বৃদ্ধি ও শক্তি বৃদ্ধি ঘটাতে গিয়ে বিতর্কিত ঘটনার অবতারণা হয়েছে।
তাদের বেলায় দেখা গেছে, তাদের বেশির ভাগেরই টেস্টোসটেরন হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে এবং বাইরে থেকে প্রয়োগের ফলে হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দেখা যাবে, প্রস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে গেছে, দেহের চর্বি কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গিয়ে পরবর্তী সময়ে হৃদরোগের সৃষ্টি করতে পারে। বন্ধ্যত্ব ও ব্রণ সমস্যারও বৃদ্ধি ঘটাতে পারে। যদিও এটা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি যে, বাইরে থেকে অতিরিক্ত টেস্টোসটেরন হরমোন প্রয়োগের ফলে প্রস্টেট গ্রন্থির ক্যান্সার হতে পারে কি-না।
তাই পরিশেষে বলতে চাই, বার্ধক্য রোধে নিজ থেকে হরমোন প্রয়োগ করা ঠিক নয়। অনেক সময় দেখা যায়, আমাদের দেশে হাতুড়ে ডাক্তার অথবা যারা ফার্মেসিতে ওষুধ বিক্রি করেন অথবা সাধারণ এমবিবিএস ডাক্তারও তাদের প্রাত্যহিক প্র্যাকটিস জীবনে যৌনসমস্যা দেখা দিলে যথাযথ হরমোন পরীক্ষা না করে সরাসরি হরমোনের ওষুধ ব্যবহারের কথা বলে থাকেন অথবা ব্যবস্থাপত্র লিখে থাকেন। এটা কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ বার্ধক্যের সব যৌনসমস্যা বা যৌনদুর্বলতার কারণই হরমোনজনিত নয়। কাজেই এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। আপনার চিকিৎসকই নির্ধারণ করবেন, বার্ধক্যে আপনার হরমোন গ্রহণ কতটুকু প্রয়োজন ও কতটুকু এর উপকারিতা রয়েছে।
লেখক: ডা: এম ফেরদৌস
চর্ম, যৌন রোগ ও কসমেটিক বিশেষজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক, কুমুদিনী উইমেনস মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। ফোন : ৮১২৩৭৫৮
  সূত্র:হেল্থ বাংলা ডট কম

Labels:

গর্ভাবস্থায় সহবাসের নিয়ম

গর্ভাবস্থায় সহবাস অনেকেই পছন্দ করেন না। আবার গর্ভবস্থায় সহবাস অনেক সময় ক্ষতিকরও প্রমাণিত হতে পারে।  তবে, এই সময় সহবাসের বিষয়ে বিভিন্ন মত রয়েছে। তার কারণ গর্ভাবস্থায় যৌনসঙ্গমের কতগুলি নির্দিষ্ট যুক্তি রয়েছে।
গর্ভাবস্থায় সহবাস

গর্ভাবস্থায় সহবাসের নিয়ম

সাধারণত যে কারণে গর্ভবস্থায় সহবাস করা উচিত নয়:

# গর্ভাবস্থায় সঙ্গমের সময় সঠিক পদ্ধতি জানা না থাকলে বা ধাক্কা লাগলে গর্ভপাত পওয়র সম্ভাবনা থাকে।
# গর্ভাবস্থায় সহবাসের ফলে পেটে ব্যথা ও মৃদু রক্তপাত হতেই থাকে।
# অনেক সময় অসুরক্ষিত সহবাসের ফলে গর্ভপাত না হলেও শিশু বিকলাঙ্গ জন্মাতে পারে।
তবে,

গর্ভবস্থায় কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখলে আবার সহবাসের ক্ষেত্রে তেমন কোন অসুবিধা হয় না:

# গর্ভাবস্থায় প্রথম ছ’মাস পর্যন্ত সহবাস করা যেতে পারে।
# প্রথম ছ’মাস গর্ভপাতের ভয় থাকে না বলে, সহবাস তুলনামূলক নিরাপদ
# গর্ভাবস্থায় সহবাসের সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে পেটে ধাক্কা না লাগে।
# গর্ভাবস্থায় ছ’ থেকে সাতমাসে নারীর যৌন আকাঙ্খা বেড়ে যায়। তখন যৌন মিলন না হলে নারীর মানসিক ক্ষতি হতে পারে। তাই, সহবাস ছাড়াও এই সময় যৌনতার মাধ্যমে স্ত্রীকে তৃপ্ত রাখতে হবে।

  সূত্র:হেল্থ বাংলা ডট কম

Labels: ,

Evergreen তরুণ থাকার টিপস

Evergreen তরুণ থাকতে কে না চায়! বয়সের ভারে আমাদেরকে এক সময় বুড়িয়ে যেতেই হয়। অনেকেই বলে থাকেন মন সতেজ তো বয়স ফ্যাক্ট নয়। কিন্তু প্রাত্যহিক জীবনে যদি খাদ্যাভ্যাস  থেকে শুরু করে সবকিছুতে কিছুটা নিয়ম  মেনে চলতে পারি তাহলে থাকতে পারি আরও  চির তরুণ। যৌবনের সময় টা সবারই কাম্য। আপনি চাইলে হালকা কিছু নিয়মনীতি অনুসরণ করে হতে পারেণ একজন Evergreenbangla তরুণ। এবার আপনাদের সামনে তুলে ধরছি চির তরুণ থাকার জন্য সামান্য কয়েকটি পরামর্শ।
যত বয়সী হই আর তরুণই হই না কেন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আক্ষেপের শেষ থাকে না আমাদের। শরীর-মন ভালো থাকলেও আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের একটাই আক্ষেপ। যদি আরো তরুণ থাকতে পারতাম।
তরুণEvergreen তরুণ

Evergreen তরুণ থাকার টিপস

১. খুব ধীরে ধীরে চেষ্টা করতে করতে কয়েক মাসের মধ্যে সকালে ঘুম থেকে উঠে চার গ্লাস পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন। এর পর বাথরুমে যান।
২. বাথরুম থেকে ফিরে এসে আরও এক গ্লাস পানি খান এবং তার পর খান দুধ ছাড়া খুব হালকা এক কাপ চা। আপনার ওজন বেশি হলে চিনি খাওয়া ছেড়ে দিন। চা কখনোই অতিরিক্ত গরম খাবেন না।
৩. সারা দিনে ৮ থেকে ১২ গ্লাস বাড়তি পানি খাবেন। রং চা দিনে কমপক্ষে চার কাপ খাবেন।
৪. পানি খাওয়ার নাম হচ্ছে হাইড্রোথেরাপি রা জলচিকিৎসা। মূলত এটি হচ্ছে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার বছরের প্রাচীন ভারতীয় চিকিৎসা। আধুনিক বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে- ঘুম থেকে উঠে ধীরে ধীরে চার গ্লাস পানি খাওয়ার অভ্যাস করলে প্রায় ৩৬ ধরণের রোগ হয় না এবং হলেও সেরে যায়।
৫. অপর পক্ষে, দুধহীন এবং দুধ-চিনি-হীন হালকা গরম চা হচ্ছে আড়াই হাজার বছর আগের একটি চায়নিজ হারবাল মেডিসিন। সেকালে এই চা দিয়ে হার্ট, ব্লাড প্রেসার (উচ্চ রক্তচাপ) ও পেটের নানা রকম রোগের চিকিৎসা করা হতো। আবার আধুনিক বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে- চায়ে রয়েছে অ্যান্টিঅিডেন্ট, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে নিশ্চিত অবদান রাখে। এ ছাড়াও অন্য বহুগুণ রয়েছে চায়ে। তবে যে চা-টা প্রক্রিয়াজাত হয়নি, সে চায়ের গুণাগুণই অপেক্ষাকৃত ভালো।
৬. ভিটামিন সি একটি বৈপ্লবিক খাদ্যপ্রাণ এর গুণাগুণ অসংখ্য। জানা গেছে, দিনে ১ হাজার মিলিগ্রাম ভিটামিন সি খেলে মানুষ চির তরুণ থাকে। তবে ট্যাবলেট খেলে কিছুই উপকার পাওয়া যায় না। প্রতিদিনই কমবেশী খেতে হবে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ তাজা ফলমূল। ভিটামিন সিও ক্যান্সার ঠেকাতে সাহায্য করে। আমলকি, সব ধরনের লেবু, টমেটো, কমলা, পেয়ারা, নানা রকর টক স্বাদের ফলে বিভিন্ন মাত্রায় ভিটামিন সি রয়েছে।
৭. ধূমপানসহ সকল ধরণের নেশা জাতীয় অভ্যাস ত্যাগ করুণ। কারণ নেশা মানুষকে সকল দিক দিয়ে ধ্বংস করে দেয়।
৮. রেডমিট অর্থাৎ গরু, মহিষ, খাসি, ভেড়া ইত্যাদির মাংস খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে। ফার্মের মুরগিও চলবে না। শুধু চর্বিহীন বাচ্চা মুরগির মাংস খাওয়া চলতে পারে।
৯. প্রচুর পরিমাণে আধা-সেদ্ধ শাক-সবজি, তরিতরকারি এবং খুব অল্প পরিমাণে ভাত-রুটি খাওয়া উচিত।
ভাজাভুজি খাবেন না। অতিরিক্ত তেল, চর্বি, ঘি, মাখন খাবেন না। মসলার বিভিন্ন ভেষজ গুণ আছে, তবুও রান্নায় খুব বেশি মসলা ব্যবহার করবেন না।
১০. সালাদ হিসাবে প্রতিদিন বেশি করে খাবেন কাঁচা লেটুস পাতা, পুদিনা পাতা, টমেটো ইত্যাদি।
১১. বিধিনিষেধ না থাকলে সকালে খালি পেটে এক চামচ মধু খাবেন।
১২. পূর্ণবয়স্কদের জন্য গরু, ছাগল, মহিষের দুধ অপ্রয়োজনীয় তো বটেই, রীতিমতো ক্ষতিকর।
১৩. ছোট-বড় সব ধরনের মাছ খাবেন। সমুদ্রের মাছ খাওয়া অভ্যাস করতে পারলে তো খুবই ভালো। কেননা, এটা মহৌষধ। গাদা-গাদা মাছের কাটা খাওয়া ঠিক নয়। ওতে পাকস্থলিতে পাথর হতে পারে।
১৪. সূর্যমূখী ফুলের বীজ হচ্ছে হার্টের ভেষজ ওষুধ। রান্নায় সূর্যমূখী তেল ব্যবহার করলে হার্টের সুরক্ষা যেমন হয়, তেমনি হার্টের অসুখ থাকলে তা সারাতে সাহায্য করে।
১৫. প্রতিদিন অল্প একটু টক দই খাওয়ার অভ্যাস করুন। টক দই উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে।


  সূত্র:হেল্থ বাংলা ডট কম

Labels:

বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়াবেন না

বিবাহিত পুরুষদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে না জড়ানোর অনেক কারণ আছে। হৃদয় তো ভাঙবেই। লোকেরাও দ্বিতীয় নারী বলে ফোঁড়ন কাটবে। কিন্তু যৌক্তিক কোন কোন কারণে বিবাহিত পুরুষদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়া উচিত নয় তা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। জেনে নিন ঝটপট:
বিবাহিত প্রেম প্রতারণা
বিবাহিত প্রেম প্রতারণা
১. এটা অনৈতিক
আপনি নিজেকে বোঝাবার যতই চেষ্টা করুন, বিবাহিত পুরুষদের সঙ্গে প্রেম করার কোনো যৌক্তিক কারণ থাকতে পারে না। এটা নৈতিকভাবে ‘ভুল’। নানাভাবেই এ প্রেম আপনার জীবনকে সমস্যায় ফেলতে পারে।
২. সেকেন্ড চয়েস
বিবাহিত পুরুষটি আপনাকে বোঝাতে চেষ্টা করবেন যে, আপনিই তার আসল প্রেম। কিন্তু দিন শেষে তার কাছে প্রধান বিষয় তার স্ত্রী ও সন্তান। মনে রাখবেন, পরিবারকে মিথ্যা বলে বলে সম্পর্কটা হয়তো তিনি চালিয়ে নিতে পারবেন, কিন্তু যদি আপনি ও তার পরিবারের মধ্যে যে কোনো একটি বেছে নেয়ার প্রশ্ন আসে তবে তিনি পরিবারকেই বেছে নেবেন।
৩. মিথ্যা
বিবাহিত পুরুষদের সঙ্গে জড়িত না হওয়ার পেছনে আরেক বড় যুক্তি মিথ্যা। ঘরে যার স্ত্রী ও সন্তান আছে তিনি বাধাহীনভাবে আপনার সঙ্গে দিনের পর দিন দেখা করতে পারবেন না। সবসময় আপনাকে শপিংয়ে বা সিনেমায় সময়ও দিতে পারবেন না। ফলে মিথ্যা তাকে বলতেই হবে।
৪. এটা কি আপনার ভাল লাগবে?
একটু অপেক্ষা করুন, ভাবুন। আপনার স্বামী যদি আপনার বা আপনার সন্তানের সঙ্গে প্রতারণা করেন তবে সেটা কি আপনি মেনে নিতে পারবেন? দেখেও না দেখার ভান করবেন? যে কোনো প্রতারণাই কিন্তু অসম্মানজনক। তাছাড়া আপনি এই নিশ্চয়তা দিতে পারবেন না যে, পুরুষটি বৈধভাবে আপনার সঙ্গে থাকার জন্য তার স্ত্রী ও সন্তানকে ত্যাগ করবেন।
ফলে, বিবাহিত পুরুষদের সঙ্গে জড়ানো উচিত নয়।

সূত্র:হেল্থ বাংলা ডট কম

Labels:

এক চুমুতেই ৮০ মিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া পারাপার হয়

১০ সেকেন্ডের এক চুমুতেই ৮০ মিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া পারাপার হয়। সম্প্রতি নেদারল্যান্ডসের একদল বিজ্ঞানীর গবেষণার বরাত দিয়ে এমন রিপোর্ট প্রকাশ করেছে বিবিসি।

এক চুমুতেই ৮০ মিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া পারাপার হয়


এক চুমুতেই ৮০ মিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া পারাপার হয়
 এক চুমুতেই ৮০ মিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া পারাপার হয়
বিজ্ঞানী দলটি ২১ জোড়া প্রেমিক-প্রেমিকাকে গবেষণার জন্য বেছে নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে যারা দিনে গড়ে নয় বার পরস্পরকে চুম্বন করেন তারা লালার মাধ্যমে জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকেন। গবেষণাটিতে আরো দেখা গেছে, মানুষের মুখে প্রায় ৭০০ রকমের ব্যাকটেরিয়া থাকে, যার মধ্যে কিছু কিছু খুব সহজেই চুমুর মাধ্যমে ছড়াতে পারে। গবেষণাটি বিজ্ঞান সাময়িকী মাইক্রোবায়োমে প্রকাশ করা হয়েছে।
ডাচ অর্গানাইজেশন ফর অ্যাপ্লায়েড সাইন্টিফিক রিসার্চের বিজ্ঞানী দলটি ২১টি জুটিকে তাদের চুমু খাওয়ার অভ্যাস এবং প্রতিদিনের চুমুর সংখ্যার তথ্য নিয়ে কাজ শুরু করেন। বিজ্ঞানীরা চুমুর আগে ও পরে তাদের মুখের লালার নমুনা সংগ্রহ করেন। তারপর জুটির এক জনকে সহজেই চিহ্নিত করা যায় এমন ব্যাকটেরিয়া সমৃদ্ধ পানীয় খেতে দেন। তার পর আবারো ১০ সেকেন্ড সময় ধরে চুমু খেতে বলেন। ফলাফলে দেখা যায়, প্রতি ১০ সেকেন্ডের চুমুতে প্রায় ৮০ মিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া তাদের সঙ্গীর মুখে পার হয়েছে।
গবেষক দলটির নেতা প্রফেসর রেমকো কোর্ট জানিয়েছেন, ‘ফ্রেঞ্চ কিসের’ মাধ্যমে এত কম সময়েই বিশাল সংখ্যক ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পাড়া সম্ভব, যা আর কোন মাধ্যমেই এত বিশাল সংখ্যায় ছড়ায় না।

 সূত্র:হেল্থ বাংলা ডট কম

Labels:

কনডম ব্যবহারের ভুলগুলো

জন্মনিরোধক ব্যবহার করার অন্যতম দুটি কারণ হল, অযাচিত গর্ভধারণ রোধ এবং যৌনবাহিত রোগ থেকে রক্ষা। আর সবচেয়ে কার্যকর নিরোধক হল কনডম। বেশিরভাগই মনে করেন শারীরিক সম্পর্কের সময় ব্যবহার করলেই হল, এর বেশি আর কী জানার আছে।
Red Condom
কনডম
তবে যখন কনডমের বিষয় আসে তখন বিভিন্ন রকম ভুলের বিষয়গুলোও চলে আসে। কারণ অনেক অজানা কারণে এই গর্ভনিরোধক ঠিকমতো কাজ নাও করতে পারে।

কনডম ব্যবহারের ভুলগুলো

অনেকদিনের অব্যবহৃত কনডম

বহুদিন ফেলে রাখা কনডম ব্যবহার নিরাপদ নাও হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর সেক্সুয়াল হেল্থ প্রোমোশন সেন্টারের সহযোগী পরিচালক ও অধ্যাপক ডেবি হার্বনিক (পিএইচ ডি) বলেন, “যদি দেখেন আপনার সঙ্গী মানিব্যাগ থেকে কনডম বের করছেন, তবে সেটা বাদ দিয়ে নতুন ব্যবহার করুন। কারণ ঘরে পড়ে থাকা বা মানিব্যাগে থাকা কনডমে অযাচিত ঘষা লাগা এবং গরম তাপমাত্রার কারণে কনডমের কার্যকারিতা হারাতে পারে।”

বেশি জায়গা না রাখা

Perfect Condom BD
বেশি জায়গা না রাখা
কনডমের সামনের দিকে কিছুটা জায়গা বাড়তি থাকে। যেখানে শরীর থেকে বের হওয়া ‘তরল’ জমা হয়। বেশি আঁটসাঁট করে পরলে সঙ্গমের সময় কনডম ফুটা হয়ে যেতে পারে বা ফেটেও যেতে পারে।
এই দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে হার্বনিক পরামর্শ দেন, “কনডমের সামনের সরু প্রান্ত চেপে ধরে তারপর পরিধান করুন। এতে ভেতরে বাতাস আটকে থাকার সম্ভাবনা থাকবে না, এবং যথাযথভাবে দৃঢ়ভাবে আটকে থাকবে।”

ভুল মাপ

Small Condom
ভুল মাপ
“বেশিরভাগ কনডমই যে কোনো পুরুষের ক্ষেত্রে সঠিক মাপের হয়। তবে কারও যৌনাঙ্গ বেশি বড় আবার কারও ছোট হতে পারে। তাদের খেয়াল করতে হবে, যে মাপ ঠিকমতো লাগবে সেটা ব্যবহার করা। কারণ বেশি ঢিলা হলে কনডম সঙ্গমের সময় খুলে যেতে পারে। আর বেশি চেপে থাকলে ফেটে যেতে পারে।”

দেরিতে পরা

সঙ্গমের সময় অনেকেই প্রথম থেকে কনডম ব্যবহার করেন না। তারা মনে করেন একেবারে ‘শেষ পর্যায়ে’ পরে কাজ শেষ করবেন। তবে এই ভুলের কারণে অযাচিত গর্ভধারণ এবং যৌনবাহিত রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়, জানালেন হার্বনিক।
সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, যেসব যুগল শারীরিক সম্পর্কের নিরাপত্তায় কনডম এবং পিল দুটোই ব্যবহার করেন তাদের মধ্যে ৫৯ শতাংশ পুরুষ সঠিকভাবে কনডম ব্যবহার করেন। বাকিরা হয় খুব দেরিতে পরেন অথবা বেশি আগে খুলে ফেলেন।
তাই পরামর্শ হচ্ছে, যদি পূর্ণ নিরাপত্তা চান তবে সঙ্গম শুরুর প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত কনডম ব্যবহার করুন।

মেয়াদোত্তীর্ণ কনডম

সব পণ্যের মতো কনডমেরও নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে। তবে ব্র্যান্ড ভেদে এক একটির মেয়াদ একেক রকম হয়। আর মেয়াদের মধ্যে থাকলেও সেটা ঠিক থাকবে, তাও নয়।
কিছু কনডমে লুব্রিকেন্টের অন্যতম একটি উপাদান স্পারমিসাইড এছাড়াও থাকে গরম বা ঠাণ্ডা অনুভূতি আনবার উপাদান। এই ধরনের কনডমগুলো অন্যদের তুলনায় একটু আগে মেয়াদ শেষ হয়ে যেতে পারে।
তাই যতটা সম্ভব নতুন কনডম ব্যবহার করে নিরাপদ থাকুন।
সূত্র:হেল্থ বাংলা ডট কম

Labels: ,

ইসলামে জন্মনিয়ন্ত্রণের বিধান

জন্মনিয়ন্ত্রণ (Birth control) আন্দোলন আঠারো শতকের শেষাংশে ইউরোপে সূচনা হয়। ইংল্যান্ডের বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ ম্যালথাসই (Malthus) এর ভিত্তি রচনা করেন। এ আন্দোলনের আসল উদ্দেশ্য হলো- বংশ বৃদ্ধি প্রতিরোধ।
জন্মনিয়ন্ত্রণ
জন্মনিয়ন্ত্রণ
জনসংখ্যা বৃদ্ধির উচ্চহার দেখে মি. ম্যালথাস হিসাব করেন, পৃথিবীতে আবাদযোগ্য জমি ও অর্থনৈতিক উপায়-উপাদান সীমিত। কিন্তু বংশবৃদ্ধির সম্ভাবনা সীমাহীন। ১৭৯৮ সালে মি. ম্যালথাস রচিত An essay on population and as it effects, the future improvment of the society. (জনসংখ্যা ও সমাজের ভবিষ্যৎ উন্নয়নে এর প্রভাব) নামক গ্রন্থে সর্বপ্রথম তার মতবাদ প্রচার করেন।
এরপর ফ্র্যান্সিস প্ল্যাস (Francis Place) ফরাসী দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রতিরোধ করার প্রতি জোর প্রচারণা চালান। কিন্তু তিনি নৈতিক উপায় বাদ দিয়ে ওষুধ ও যন্ত্রাদির সাহায্যে গর্ভনিরোধ করার প্রস্তাব দেন।
আমেরিকার বিখ্যাত ডাক্তার চার্লস নোল্টন (Charles knowlton) ১৮৩৩ সালে এ প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন সূচক উক্তি করেন। তিনি তার রচিত The Fruits of philosophy নামক গ্রন্থে সর্বপ্রথম গর্ভনিরোধের চিকিৎসা শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা এবং এর উপকারের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। কিন্তু মাঝখানে ১৮৪০ সাল থেকে ১৮৭৫ সাল পর্যন্ত এ আন্দোলন বন্ধ থাকে। ইংল্যান্ডের অধিবাসীরা এর প্রতি কোনোরূপ গুরুত্বারোপ ও সহযোগিতা করতে অস্বীকার জানিয়েছিলেন।আবার ১৮৭৬ সালে নতুন করে ম্যালথাসীয় আন্দোলন (New Malthusian Movment) নামক নতুন আন্দোলন শুরু হয়। মিসেস অ্যানী বাসন্ত ও চার্লস ব্রাডার ডা. নোল্টনের (Fruits of philosophy) গ্রন্থটি ১৮৭৬ সালে ইংল্যান্ডে প্রকাশ করেন। ১৯৭৭ সালে ডা. ড্রাইসডেল (Drysdale)-এর সভাপতিত্বে একটি সমিতি গঠিত হয় ও জন্ম নিয়ন্ত্রণের প্রচার কার্য শুরু হয়ে যায়।১৮৭৯ সালে মিসেস বাসন্ত-এর রচিত Law of population (জনসংখ্যার আইন) নামক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। ১৮৮১ সালে হল্যান্ড, বেলজিয়াম, ফ্রান্স ও জার্মানিতে এ আন্দোলন ছড়িয়ে যায় এবং ক্রমে ইউরোপ ও আমেরিকার সকল সভ্য দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং স্থানে স্থানে জন্মনিরোধ ক্লিনিক (Birth Control Clinics) খুলে দেয়।(ইসলামের দৃষ্টিতে জন্মনিয়ন্ত্রণ, (ঢাকা, আধুনিক প্রকাশনী, ১৯৯২) পৃঃ ১৩-১৫,)
বর্তমানে একবিংশ শতাব্দীতে সারা বিশ্বে জন্মনিয়ন্ত্রণের নামে প্রকাশ্যে সন্তান হত্যার হিড়িক পড়ে গেছে। এমনকি দৈনিক পত্রিকাসহ সকল মিডিয়াতে ফলাও করে প্রচারণা চলছে। যেমন : ‘ছেলে হোক মেয়ে হোক দু’টি সন্তানই যথেষ্ট, দুইটি সন্তানের বেশি নয়, একটি হলে ভালো হয়’ ইত্যাদি। এছাড়াও কিছু স্যাটেলাইট ক্লিনিক গর্ভবর্তী মায়ের সেবার নামে গর্ভপাত ঘটানোর গ্যারেজে পরিণত হয়েছে।

জন্মনিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি-

জন্মনিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি দু’প্রকারঃ
(১) সাময়িক ব্যবস্থা ও
(২) স্থায়ী ব্যবস্থা।

সাময়িক ব্যবস্থাঃ

(ক) আযল তথা ভিতরে বীর্যপাত না করা (With drawal)।
(খ) নিরাপদ সময় মেনে চলা (Safe period) ।
(গ) কনডম ব্যবহার।
(ঘ) ইনজেকশন পুশ।
(ঙ) পেশীতে বডড়ি ব্যবহার।
(চ) মুখে পিল সেবন ইত্যাদি।

স্থায়ী ব্যবস্থাঃ

(ক) পুরুষের অপারেশন।
(খ) নারীর অপারেশন।
(ক) পুরুষের অপারেশনঃ
ভাসেকটমি
ভাসেকটমি
পুরুষের অন্ডকোষে উৎপাদিত শুক্রকীটবাহী নালী (Vas deferens) দু’টি কেটে বিচ্ছিন্ন করা হয়। ফলে পুরুষের বীর্যপাত ঘটে, কিন্তু বীর্যে xy ক্রমোজম শুক্রকীট না থাকায় সন্তান হয় না।
( ডা. এস.এন. পান্ডে, গাইনিকলজি শিক্ষা, (কলিকাতা, আদিত্য প্রকাশনী, ১৯৭৭), পৃঃ ১২৪)
(খ) নারীর অপারেশনঃ
কপার টি
কপার টি
নারীর ডিম্বাশয়ে উৎপাদিত ডিম্ববাহী নালী (Fallopian Tube কেটে বিচ্ছিন্ন করা হয়। ফলে পূর্ণ xx ক্রমোজম ডিম্ব (Matured Ovum) আর জরায়ুতে প্রবেশ করতে পারে না। নারী অথবা পুরুষে যেকোন একজন স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে, অন্যজনকে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয় না। কারণ নারীর ডিম্ব পুরুষের শুক্রকীট দ্বারা নিষিক্ত না হলে সন্তানের জন্ম হয় না।

জন্মনিয়ন্ত্রণের কুফল

জন্মনিয়ন্ত্রণের বহুবিদ কুফল রয়েছে। এর মধ্যে কিছু নিম্নে আলোচনা করা হল-
ব্যাভিচারের প্রসার : ব্যাভিচার সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা অবৈধ যৌন সম্ভোগের নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ।’ (সুরা বনী ইসরাইল, আয়াত: ৩২)
কিন্তু শয়তান মানুষকে দরিদ্রতার ভয় দেখিয়ে অসামাজিক, অনৈতিক কাজের প্রতি প্রলুব্ধ করে। নারী জাতি আল্লাহ ভীতির পাশাপাশি আরও একটি নৈতিকতা রক্ষা করতে বাধ্য হয়। তাহলো অবৈধ সন্তান জন্মের ফলে সামাজিক মর্যাদা বিনষ্ট হবার আশঙ্কা। কিন্তু জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে, এ আশঙ্কা থেকে একদম মুক্ত। যারা নৈশক্লাবে নাচ-গান করে, পতিতা বৃত্তি করে, প্রেমের নামে রঙ্গলীলায় মেতে উঠে, তারা অবৈধ সন্তান জন্মানোর আশঙ্কা করে না।
তাছাড়া কখনও হিসাব নিকাশে গড়মিল হয়ে অবৈধ সন্তান যদিও গর্ভে এসে যায়, তবে স্যাটেলাইট ক্লিনিক নামের সন্তান হত্যার গ্যারেজে গিয়ে প্রকাশ্যে গর্ভ নষ্ট করে ফেলে।
ইংল্যান্ডে প্রতি ১০০ জন নারীর মধ্যে ৮৬ জন নারী বিয়ে ছাড়াই যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে। অবৈধ সন্তান জন্মের সময় এদের শতকরা ৪০ জন নারীর বয়স ১৮-১৯ বছর, ৩০ জন নারীর বয়স ২০ বছর এবং ২০ জন নারীর বয়স ২১ বছর। এরা তারাই যারা জন্মনিয়ন্ত্রণের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরও এ দুর্ঘটনাবশত গর্ভবতী হয়েছিল। (Sehwarz Oswald, The Psycology of Sex (London : 1951), P. 50)
সেখানে প্রতি তিন জন নারীর একজন বিয়ের পূর্বে সতীত্ব সম্পদ হারিয়ে বসে। ডা. চেসার তার রচিত ‘সতীত্ব কি অতীতের স্মৃতি?’ গ্রন্থে এ সম্পর্কে পরিষ্কার ভাষায় বর্ণনা করেছেন। ( Cheser Is Chastity Outmoded, (Londen : 1960), P. 75)
আমেরিকার বিদ্যালয় সমূহে অশ্লীল সাহিত্যের চাহিদা সর্বাপেক্ষা বেশি। তরুণ-তরুণীরা এসব অধ্যয়ন করে অশালীন কাজে লিপ্ত হয়। এছাড়া হাইস্কুলের শতকরা ৪৫ জন ছাত্রী স্কুল ত্যাগ করার পূর্বে চরিত্রভ্রষ্ট হয়ে পড়ে। আর এদের যৌন তৃষ্ণা অনেক বেশি। ব্রিটেনেও শতকরা ৮৬ জন যুবতী বিয়ের সময় কুমারী থাকে না। (দৈনিক ইনকিলাব, ৬ই জুন ১৯৯৮ ইং)
প্রাশ্চাত্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে তাদের শিক্ষা ব্যয়ের প্রায় অধিকাংশ খন্ডকালীন যৌনকর্মী হিসাবে অর্জন করে থাকে। মঙ্গোলয়েড দেশসমূহে যৌন সম্পর্কীয় বিধি-বিধান অত্যন্ত শিথিল।
থাইল্যান্ডের ছাত্রীদের বিপুল যৌনতা লক্ষ্য করা যায়। (মাসিক পৃথিবী (প্রশ্চাত্যে যৌন বিকৃতি, জুলাই ২০০১ইং, পৃঃ ৫২-৫৩)
চীনের ক্যান্টন শহরে কুমারীদের প্রেম বিষয়ে শিক্ষা দেওয়ার জন্য বিদ্যালয় খোলা হয়েছে। ( জহুরী খবরের খবর, ১ খন্ড, ১১৬ পৃঃ)
পশ্চিমা সভ্যতার পূজারীরা সর্বজনীন অবৈধ যৌন সম্পর্কের মহামারীর পথ প্রশস্ত করেছে। ( মরিয়ম জামিলা, ইসলাম ও আধুনিকতা, ৯৯ পৃঃ)
চীনে যৌন স্বাধীনতার দাবি সম্বলিত পোস্টারে যার সঙ্গে খুশী যৌন মিলনে কুণ্ঠিত না হওয়ার আহবান জানানো হয়। (খবরের খবর, ১ম খন্ড, ১১৬ পৃঃ)
ইউরোপে যৌন স্বাধীনতার দাবিতে পুরুষের মত নারীরাও নৈতিকতা হারিয়ে উচ্ছৃংখল ও অনাচারী এবং সুযোগ পেলেই হন্যে হয়ে তৃপ্ত করত যৌনক্ষুধা। অশুভ এই প্রবণতার ফলে বৈবাহিক জীবন ও পরিবারের প্রতি চরম অনিহা সৃষ্টি হয়। (সায়্যেদ কুতুব, ভ্রান্তির বেড়াজালে ইসলাম, ৯৮ পৃঃ)
অর্থ সাশ্রয়ের উদ্দেশ্যে আমেরিকার ৭৫ লাখ নারী পুরুষ বিবাহ ব্যতীত ‘লিভ টুগেদার’-এ। (দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন, ১৬ এপ্রিল ২০১১, পৃঃ ৫)
পাশ্চাত্যের তরুণীরা যাতে অপ্রত্যাশিতভাবে গর্ভবতী না হয়ে পড়ে, সেজন্য তাদেরকে যথেষ্ট পরিমাণে গর্ভনিরোধের দ্রব্যাদি দেওয়া হয় এবং এ সকল দ্রব্য ব্যবহারের বিষয়ে তাদেরকে যথোপযুক্ত প্রশিক্ষণও প্রদান করা হয়ে থাকে। এমনকি মায়েরা মেয়েদেরকে এই সকল দ্রব্য ব্যবহারের কায়দা-কৌশল শিক্ষা দিয়ে থাকে। গর্ভনিরোধ দ্রব্যাদির ব্যবহার সম্পর্কে স্কুল-কলেজে প্রচারপত্র বের করে এবং বিশেষ কোর্সেরও প্রবর্তন করে। এর অর্থ হল- সকলেই নিঃসংকোচে মেনে নিয়েছে যে, তরুণ-তরণীরা অবৈধ যৌন সম্ভোগ করবেই। (নারী, পৃঃ ৮৫; আত-তাহরীক, জানুয়ারী ২০০৩, পৃঃ ৪)
পাশ্চাত্যে ক্রমবর্ধমান অবৈধ যৌন স্বাধীনতাই সবচাইতে ক্ষতিসাধন করেছে। নারীর দেহকে বাণিজ্যিক রূপ দেওয়ার কোনো প্রচেষ্টাই বাকি রাখা হয়নি। অবিবাহিত নারীদের গর্ভধারণের সংখ্যা বৃদ্ধি, অবৈধ সন্তান জন্ম, গর্ভপাত, তালাক, যৌন অপরাধ ও যৌন ব্যাধিই এর প্রমাণ। অন্যদিকে, অবৈধ যৌন সম্পর্কের ফলে কোন আইন-বিচার ও আইনি শাস্তির বিধান নেই। বরং এটাকে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ব্যাপার বলে বিবেচনা করা হয়। (ইসলাম ও আধুনিকত, পৃঃ ২৩)
সম্প্রতি ভারতেও অবৈধ যৌন সম্প্রীতি ও হিন্দু-মুসলমান যুবক-যুবতীর নির্বিঘ্নে বিবাহ বন্ধন এবং জন্ম নিয়ন্ত্রণের নামে গর্ভপাত ঘটানোর হিড়িক পড়ে গেছে।

জন্মনিয়ন্ত্রণে জটিল রোগের প্রাদুর্ভাব

নারীর ব্যাভিচার দিনদিন প্রসার লাভ করে চলেছে। নারী স্বাধীনতার নামে এরা আরও বেপরোয়া হয়ে গেছে। এই অবৈধ যৌন সম্ভোগের মাধ্যমে নারী-পুরুষের মারাত্মক জটিল সব রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। জন্ম নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে জীবাণুনাশক ওষুধ, পিল, কনডম ইত্যাদি উপকরণ ব্যবহারের ফলে তৎক্ষণাৎ কোনো ক্ষতি হয় না। কিন্তু বেশ কিছু কাল যাবৎ এসব ব্যবহার করার ফলে মধ্যবর্তী বয়সে উপনীত হতে না হতেই নারী দেহের স্নায়ুতন্ত্রীতে বিশৃঙ্খলা (Nervous instability) দেখা দেয়। যেমন : নিস্তেজ অবস্থা, নিরানন্দ, উদাসীনতা, রুক্ষমেজায, বিষণ্ণতা, নিদ্রাহীনতা, মস্তিষ্কের দুর্বলতা, হাত-পা অবশ, শরীরে ব্যথা, স্তনে সাইক্লিক্যাল ব্যথা, ক্যান্সার, অনিয়মিত ঋতু, সৌন্দর্য নষ্ট ইত্যাদি।’ ( ইসলামের দৃষ্টিতে জন্ম নিয়ন্ত্রণ, পৃঃ ৬২)
নারী-পুরুষ অবৈধ যৌন মিলনে সিফিলিস, প্রমেহ, গণরিয়া, এমনকি এইডস-এর মত মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যে সমস্ত বিবাহিতা নারীর দেহে অস্ত্রপচার করা হয়, তাদের শতকরা ৭৫ জনের মধ্যেই সিফিলিসের জীবাণু পাওয়া যায়। (Her self, Dr. Lowry, P-204)
সিফিলিস রোগে আক্রান্ত রোগী সুচিকিৎসা গ্রহণ না করলে মারাত্মক সব রোগের সৃষ্টি হয়। এইডস রোগের ভাইরাসের নাম এইচ. আই. ভি (HIV)। এ ভাইরাস রক্তের শ্বেত কণিকা ধ্বংস করে। এ রোগ ১৯৮১ সালে প্রথম ধরা পড়ে এবং ১৯৮৩ সালে একজন ফরাসী বিজ্ঞানী এইচ. আই. ভি ভাইরাসকে এই রোগের কারণ হিসাবে দায়ী করেন। (কারেন্ট নিউজ (ডিসেম্বর সংখ্যা ২০০১), পৃঃ ১৯)
বল্গাহীন ব্যাভিচারের ফলে এই রোগ উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। ডা. হিরোশী নাকজিমা বলেন, জনসাধারণের মধ্যে এইডস বিস্তার লাভ করলে সমগ্র মানবজাতির বিলুপ্তি ঘটতে পারে। (The New Straits Jimes, (Kualalampur, Malaysia, 23 june 1988), P-9)
জন্মনিরোধ পদ্ধতি ব্যবহার করার ফলে নানা প্রকার রোগ বদঅভ্যাসের প্রসার ঘটেছে। তন্মধ্যে কনডম ব্যবহার বা আযল করার জন্য নারীরা মিলনে পরিতৃপ্ত না হতে পেরে অবৈধ মিলনের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। স্তনে সাইক্লিক্যাল ব্যথা, স্তনচাকা বা পিন্ড, স্তন ক্যান্সারের পূর্ব লক্ষণ। জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি সেবনে স্তনে এ ধরনের ব্যথা ও পিন্ড তৈরি হয় এবং ৭৫% নারী স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিতে থাকে। (প্রথম আলো, ২৭ অক্টোবর ২০১০, পৃঃ ৪)
বুক ও জরায়ুর কার্সিনোমা হতে পারে শর্করা জাতীয় খাদ্য সহ্য হয় না, লিভার দুর্বল হয়, রক্ত জমাট বাঁধতে ব্যহত হয়, বুকের দুধ কমে যায় এবং Lactation কম হয় এবং দেহে ফ্যাট জমা হয়। (গাইনিকলজি শিক্ষা, পৃঃ ১২৩)
এছাড়া জরায়ু ক্যান্সার ও স্থানচ্যুতিসহ আরও অনেক রোগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জন্মনিয়ন্ত্রণে জন্মের হার কমে যাওয়া

ওরাল পিল
ওরাল পিল
আগত ও অনাগত সন্তান হত্যার ব্যাপারে মহান আল্লাহ নিষেধ করেন, ‘তোমরা অভাব ও দরিদ্রতার আশঙ্কায় তোমাদের সন্তানদের হত্যা কর না।’ (সুরা বনী ইসরাইল, আয়াত : ৩১)
কিন্তু শয়তান আল্লাহর প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলল, ‘‘আমি অবশ্যই তাদেরকে নির্দেশ দিব। আর তারা তদনুযায়ী সৃষ্টির কাঠামোতে রদবদল করবে।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১১৯)
এই রদবদল শব্দের অর্থ খুঁজতে গেলে বর্তমান যুগের জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা অন্যতম। আর জন্মনিয়ন্ত্রণ আন্দোলনের নামে যারা সন্তান হত্যা বা অনাগত ভবিষ্যত বংশধরদের হত্যা করে চলেছে, তারা সন্তানের জন্মকেই দারিদ্রের কারণ বলে চিহ্নিত করেছে। আর সেজন্যেই ক্রমশ, জন্মনিয়ন্ত্রণ আন্দোলন নির্লজ্জভাবে চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে করে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার জ্যামিতিক হারে হরাস পেয়েছে। ভবিষ্যৎ বংশধর উৎপাদন ব্যাহত হলে মানব জাতি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। যার ফলশ্রুতিতে মুনাফা অর্জনের চেয়ে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি সক্রিয় হবে।
জাহেলী যুগে সন্তানের আধিক্য থেকে বাঁচার জন্য লোকেরা সন্তান প্রসবের সঙ্গে সঙ্গে তাকে হত্যা করত। গর্ভ নিরোধের প্রাচীন ও আধুনিক যত ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয়েছে, সবগুলোই মানব বংশ ধ্বংসের পক্ষে কঠিন বিপদ বিশেষ। (পরিবার ও পারিবারিক জীবন, লেখক : মাওলানা আব্দুর রহিম, পৃঃ ৩৩২)
জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে ইউরোপ তাদের জন্য ভয়াবহ বিপদ বিবেচনা করেছে। (ইসলামের দৃষ্টিতে জন্মনিয়ন্ত্রণ, পৃঃ ১২৮)
জন্মনিয়ন্ত্রণ জন্মহার হ্রাসের একমাত্র কারণ না হলেও অন্যতম প্রধান কারণ একথা নিশ্চিত।
ইংল্যান্ডের রেজিস্ট্রার জেনারেল নিজেই একথা স্বীকার করেছেন যে, জন্মহার হরাস পাওয়ার শতকরা ৭০ ভাগ জন্ম নিয়ন্ত্রণের দরুণ ঘটে থাকে।
ইনসাইক্লোপিডিয়া অব ব্রিটানিকাতে বলা হয়েছে, পাশ্চাত্য দেশসমূহের জন্ম হার হ্রাস প্রাপ্তির কারণগুলোর মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণের কৃত্রিম উপকরণাদির প্রভাব অত্যধিক। জন্মনিয়ন্ত্রণ ও ইচ্ছাকৃতভাবে পরিবারকে সীমিত করার প্রবণতার কারণেই জন্মহার হ্রাস পাচ্ছে। (Report of the Royal Commission on population (1949), P-34)
ফ্রান্স সর্বপ্রথম ব্যাপকভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণের উপায় ও পদ্ধতিকে পরীক্ষা করেছে। একশত বছর পর সেখানে প্রতিটি জেলায় মৃত্যুহারের চেয়ে জন্মহার কমে যেতে থাকে। আর এই জনসংখ্যার হার কমে যাওয়ার ফলে দু’টি বিশ্বযুদ্ধে ফ্রান্স এমন শোচনীয় পরাজয় বরণ করে যে, বিশ্বে তার প্রভাব প্রতিপত্তির সমাধি রচিত হয়। (ইসলামের দৃষ্টিতে জন্মনিয়ন্ত্রণ, পৃঃ ১১২)
ফিডম্যান বলেন, সমষ্টিগতভাবে আমেরিকান শতকরা ৭০টি পরিবার জন্ম নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। আর বৃটেন ও আমেরিকার অবস্থা পর্যবেক্ষণে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, পরিবারগুলোর ক্ষুদ্র আকার প্রাপ্তির মূলে রয়েছে জন্মনিরোধের প্রচেষ্টা। (Family Planning Sterility and Population Growth (Newyork : 1959), P-5)
যদি ম্যালথাস আজ জীবিত থাকতেন, তাহলে এটা নিশ্চয়ই অনুভব করতেন যে, পাশ্চাত্যের লোকেরা জন্ম নিরোধ করার ব্যাপারে প্রয়োজনের চেয়েও অনেক বেশী দূরদর্শীতার পরিচয় দিয়েছে। পাশ্চাত্যের শিল্প ও নগর সভ্যতার কারণে অন্যান্য জাতিও বিপদের সম্মুখীন।

সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়-

পুরুষের দুর্বলতা
পুরুষের দুর্বলতা
জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে পারিবারিক জীবনে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কের মধ্যে যে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে তাতে ক্রমশ, পারস্পরিক সদ্ভাব ও ভালবাসা হরাস এবং অবশেষে ঘৃণা ও অসন্তোষ সৃষ্টি করে। তাছাড়া নারীদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে যে বৈকল্য দেখা দেয় এবং তার মেজায দিন দিন রুক্ষ হয়ে উঠে, ফলে দাম্পত্য জীবনের সকল সুখ-শান্তি বিদায় নেয়। সন্তানই স্বামী-স্ত্রীকে চিরদিন একত্রে সংসার গঠনের ভূমিকা রাখে। এজন্য বলা যায়, সন্তানই পরিবার গঠনের সেঁতুবন্ধন।
ইউরোপ ও আমেরিকাতে দাম্পত্য জীবন অত্যন্ত দুর্বল হয়ে যাচ্ছে এবং জন্মনিরোধ আন্দোলন প্রসারের সঙ্গে তালাকের সংখ্যাও দিন দিন দ্রুত গতিতে বেড়ে চলেছে, সেখানে এখন দাম্পত্য জীবন ও পারিবারিক জীবন চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন। (ইসলামের দৃষ্টিতে জন্মনিয়ন্ত্রণ, পৃঃ ৬৮-৬৯)
সমস্ত ইউরোপের সামাজিক দৃশ্যপট বদলে যায় শিল্প বিপ্লবের অভিঘাতে। আমূল পরিবর্তন আসে গ্রামীন জীবনেও, ভেঙে যায় পারিবারিক জীবনের ভিত। নারীরা কল-কারখানায় নির্বিঘ্নে কাজ করতে শুরু করে। এছাড়া প্রথম বিশ্বযুদ্ধে লাখ লাখ ইউরোপিয়ান ও আমেরিকান তরুণ নিহত হল। ফলে বিধবা হল অগণিত নারী। যুদ্ধ বিড়ম্বিতা নারীরা বাধ্য হয়ে পুরুষের শূন্যস্থান পূরণ করতে গিয়ে কারখানা মালিকের নিকটে শ্রম বিক্রয়ের পাশাপাশি কমনীয় দেহটাও মনোরঞ্জনের জন্য দিতে হল। যৌবনের তাড়নায় ইন্দ্রিয় ক্ষুধা চরিতার্থ করার জন্য তাকে বেছে নিতে হল অবাধ বিচরণের পথ। আর নারীর মনের গভীরে পেটের ক্ষুধার সঙ্গে যুক্ত হল অতৃপ্ত যৌনতা এবং দামী পোশাক ও প্রসাধনীর প্রতি প্রচন্ড মোহ। (ভ্রান্তির বেড়াজালে ইসলাম, পৃঃ ৯৮-১০১)
জন্মনিয়ন্ত্রণের ফলে চরিত্রের ক্ষতি সাধিত হয়। এ ব্যবস্থা নারী-পুরুষের অবাধ ব্যভিচারের সনদ দিয়ে থাকে। কেননা এতে জারজ সন্তান গর্ভে ধারণ ও দুর্নাম রটনার ভয় থাকে না। এজন্য অবৈধ যৌন সম্পর্ক স্থাপনে অতি উৎসাহী হয়ে ওঠে।
জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে শিশুরাও তাদের মেধা বিকাশে বাধাগ্রস্ত হয়। যদি অন্য ছোট-বড় ভাই বোন খেলার সাথী হিসাবে থাকে, তবে তাদের সঙ্গে একত্রে থাকা ও মেলামেশা, সাহায্য-সহযোগিতা ইত্যাদি শিক্ষণীয় গুণাবলী তার মাঝেও প্রস্ফুটিত হয়।
মনস্তত্ব বিশেষজ্ঞদের মতে, একাকিত্বের ফলে শিশুদের মন-মগজের সুষ্ঠু বিকাশে বাধা সৃষ্টি হয়। এমনকি দু’টি শিশুর বয়সের পার্থক্য বেশি হলে নিকটস্থ ছোট শিশু না থাকার কারণে বড় শিশুটির মস্তিষ্কে (Neurosisi) অনেক ক্ষেত্রে রোগও সৃষ্টি হয়। (David M Levy, Maternal Over Protiction- (Newyork : 1943), P-35)

জন্মনিয়ন্ত্রণে অর্থনৈতিক ক্ষতি-

প্রসব বেদনা
প্রসব বেদনা
জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে নৈতিক ও সামাজিক ক্ষতির পাশাপাশি এ সমস্ত উপকরণ ব্যবহারের জন্য জাতীয় রাজস্বে বিরাট ক্ষতি সাধিত হয়। এটাকে এক ধরনের অপচয় বললেও ভুল হবে না।
মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা) অপব্যয় কর না, নিশ্চয়ই অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই।’ (সুরা বনী ইসরাইল, আয়াত : ২৭)
‘খাও ও পান কর, অপব্যয় কর না। নিশ্চয়ই তিনি (আল্লাহ) অপব্যয়কারীকে পসন্দ করে না।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ৩১)
বেকারত্ব বৃদ্ধির কারণ জনসংখ্যা হ্রাস জনিত যুক্তি দিন দিন অধিকতর জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এর কারণ হল- জন্মহার ধারাবাহিকভাবে (Topering) কমে যাওয়ার ফলে একদিকে পুঁজি বিনিয়োগের প্রয়োজন হ্রাস পায়। পক্ষান্তরে বাড়তি জনসংখ্যার কারণে পুঁজি বিনিয়োগ ব্যবস্থা উন্নত হয়। (ইসলামের দৃষ্টিতে জন্মনিয়ন্ত্রণ, পৃঃ ৭৩)
কেনসি হাসান বলেন, জনসংখ্যা দ্রুতগতিতে বাড়তে শুরু করলে সমাজের অর্থনৈতিক তৎপরতাও অনেক বেড়ে যায়। সে সময় সম্প্রসারণকারী শক্তিগুলি (Expansive) সংকোচনকারী শক্তিগুলির (Contractive) তুলনায় অধিকতর শক্তিশালী হয়। তখন অর্থনৈতিক তৎপরতা বিশেষভাবে বেড়ে যায়। অর্থাৎ জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে অর্থনৈতিক তৎপরতা বিশেষভাবে বৃদ্ধি পায়। আর জনসংখ্যা কমে যাওয়ার ফলে অর্থনৈতিক তৎপরতা হ্রাস পায়।
বাংলাদেশ অতি ছোট দেশ। এ দেশের সামান্য আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা অত্যন্ত বেশি। কিন্তু প্রতিবছর এদেশ শ্রমশক্তি বিদেশে রফতানি করে কোটি কোটি বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করছে। এই বিশাল জনসংখ্যা যদি শ্রমশক্তিতে রূপান্তরিত করা যায়, তাহলে এ জনসংখ্যা ক্ষতির কারণ না হয়ে আশীর্বাদের কারণ হবে। যে বৈদেশিক মুদ্রা দেশের রাজস্ব খাতে বিরাট ভূমিকা রাখছে, নিশ্চয়ই তা বেকারত্ব দূর করতেও বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।
অন্যথা ‘পরিবার পরিকল্পনার’নামে জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ফলে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। একদিকে, জনশক্তির অপমৃত্যু, অন্যদিকে অর্থনৈতিক অবক্ষয়। এই জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয় কনডম, ইনজেকশন, বড়ি ও খাবার পিল ইত্যাদি। সরকারের পক্ষ থেকে যে খাবার পিল বিতরণ করা হয়, তা অত্যন্ত নিম্নমানের। কিন্তু বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানি যে পিল বের করেছে তা উচ্চ মূল্যে (৫০-৮০ টাকা) ক্রয় করে জনগণ ব্যবহার করছে। এতে পুঁজিবাদীরা জনগণের পকেট ফাঁকা করে চলেছে জন্মনিয়ন্ত্রণের নামে।
গ্রামাঞ্চলে একটি শিশুর জন্ম দানের জন্য এত টাকা ব্যয় করতে হয় না, যত টাকা ব্যয় করতে হয় জন্মনিরোধ উপকরণাদি ক্রয়ের জন্য। (British Medical Journal, (London : 8 July, 1961), P-120)
জন্মনিয়ন্ত্রণের ফলে শ্রমজীবী লোক দিন দিন কমে যাচ্ছে। যার ফলে পুঁজিবাদীরা উচ্চমূল্যে বিদেশ থেকে শ্রমিক আমদানি করে মিল-কারখানায় উৎপাদন করছে। এতে দ্রব্যমূল্য দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে, জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়ার ফলে পণ্যের ব্যবহারও দিন দিন কমে যাচ্ছে। ফলে উৎপাদনও কমে আসছে। অতএব জন্মনিয়ন্ত্রণ আমাদের কোনো সুফল বয়ে আনেনি বরং অর্থনৈতিক ও নৈতিকতার মহা ক্ষতির কারণ হিসাবে পরিগণিত হয়েছে।

ইসলামে দৃষ্টিতে জন্মনিয়ন্ত্রণের বিধান

মহান আল্লাহ পৃথিবীতে প্রতিনিধি সৃষ্টি করার ইচ্ছা পোষণ করে আদি পিতা আদমকে (আ.) সৃষ্টি করেন। কিন্তু মাতা হাওয়াকে (আ.) সৃষ্টির কোন প্রয়োজন ছিল কি? যদি একটু চিন্তা করি, তবে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, মহান আল্লাহ আদম (আ.)-এর একাকীত্ব দূর করতে জীবন সঙ্গিনী হিসাবে হাওয়াকে (আ.)-কে শুধু সৃষ্টি করেননি। বরং আরও একটি বিশেষ কারণে তাকে সৃষ্টি করেছেন। তাহল মহান আল্লাহ তাদের ঔরশজাত সন্তান দ্বারা সমগ্র পৃথিবী কানায় কানায় পরিপূর্ণ করে দিতে চেয়েছেন। আর সমস্ত মানব তার (আল্লাহর) একত্ব ঘোষণা পূর্বক দাসত্ব করবে। এ হল আদম ও হাওয়া (আ.)-এর সৃষ্টির একান্ত উদ্দেশ্য। আমরা সেই অনাগত সন্তানদের নির্বিঘ্নে হত্যা করে চলেছি।
এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের হত্যা কর না দারিদ্রের কারণে, আমিই তোমাদের রিযিক দান করি এবং তাদেরও আমিই রিযিক দান করব।’ (সুরা আনআম, আয়াত : ১৫১)
আলোচ্য আয়াতে খাবারের অভাবের আশঙ্কা অনাগত সন্তানকে হত্যা করতে মহান আল্লাহ স্পষ্ট নিষেধ করেছেন। আবার বললেন, ‘আমি তোমাদের রিযিক দান করি এবং তাদেরও আমিই দিব’। ‘আমিই দিব’এই প্রতিশ্রুতির ব্যাখ্যা হল- অনাগত সন্তানদের রিযিকের মালিক আল্লাহ। তার খাদ্য ভাণ্ডারে খাবারের হিসাব অকল্পনীয়।
আবার তিনি বললেন, ‘নিশ্চয়ই তাদের হত্যা করা মারাত্মক ভুল।’ (সুরা বনী ইসরাইল, আয়াত : ৩১)
তিনি যথার্থই বলেছেন, অনাগত সন্তান হত্যা করা বিরাট ভুল। ভূপৃষ্ঠে একচতুর্থাংশ স্থল, বাকী সব সাগর, মহাসাগর। কিন্তু বর্তমানে মহাসাগরে হাওয়াইন দ্বীপপুঞ্জের মত ছোট-বড় দ্বীপ জেগে উঠেছে এবং নদী ভরাট হয়ে চর জেগে উঠেছে। এভাবে আমাদের আবাদী জমি ও বাসস্থান বাড়ছে এতে কোনো সন্দেহ নেই।
মহান আল্লাহ বলেন, ‘ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি দুনিয়ার জীবনের সৌন্দর্য ও সুখ-শান্তির উপাদান ও বাহন।’ (সুরা কাহাফ, আয়াত : ৪৬)
আল্লামা আলুসী এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, ধন-সম্পদ হচ্ছে প্রাণ বাঁচানোর উপায়। আর সন্তান হচ্ছে- বংশ তথা মানব প্রজাতি রক্ষার মাধ্যম। (পরিবার ও পারিবারিক জীবন, পৃঃ ৩৪০)
জনৈক রুশ লেখক তার Biological Tragedy of Woman গ্রন্থে বলেছেন, নারী জন্মের উদ্দেশ্যই হচ্ছে মানববংশ রক্ষা করা। (ইসলামের দৃষ্টিতে জন্ম নিয়ন্ত্রণ, পৃঃ ৫৮)
যৌন প্রেরণার অন্তর্নিহিত লক্ষ্য মানববংশ বৃদ্ধির সঙ্গে দেহের প্রতিটি অঙ্গ স্ব স্ব দায়িত্ব পালনে তৎপর। নারী দেহের বৃহত্তম অংশ গর্ভধারণ ও সন্তান জন্মানোর উদ্দেশ্যেই সৃষ্ট। (The Psychology of Sex, P-17)
মা হাওয়া (আ.) সহ পৃথিবীর সমস্ত নারী সৃষ্টির উদ্দেশ্য মানব বংশ রক্ষা ও সন্তান উৎপাদনের মাধ্যমে পারিবারিক কাঠামোতে সন্তানের সুষ্ঠু লালন-পালন।
আযল-এর বিধান
প্রাচীনকালে আরব সমাজে ‘আযল’করার যে প্রচলন ছিল। এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে কোনো আলোচনা খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে হাদীসে স্পষ্ট আলোচনা আছে। নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা করা হল-
হযরত জাবির (রা.) বলেন, ‘আমরা রাসুলের জীবদ্দশায় ‘আযল’করতাম অথচ তখনও কুরআন নাযিল হচ্ছিল।’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত, হাদিস নং : ৩১৮৪) অর্থাৎ পবিত্র কুরআনে ‘আযল’ সম্পর্কে কোনো নিষেধবাণী আসেনি। আর রাসুল (সা.) ও তা নিষেধ করেননি।
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তুমি কি সৃষ্টি কর? তুমি কি রিযিক দাও? তাকে তার আসল স্থানেই রাখ, সঠিকভাবে তাকে থাকতে দাও। কেননা এ ব্যাপারে আল্লাহর চূড়ান্ত ফায়ছালা রয়েছে।’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত, হাদিস নং: ৩১৮৬)
ইমাম কুরতুবী বলেছেন, ছাহাবীগণ রাসুল (সা.) এর উক্ত কথা থেকে নিষেধই বুঝেছিলেন। ফলে এর অর্থ দাঁড়ায় রাসুল (সা.) যেন বলেছেন, তোমরা ‘আযল’কর না, তা না করাই তোমাদের কর্তব্য।’ (সিলসিলা ছহীহাহ, হাদিস নং : ৫৭৫, ছহীহুল জামে, হাদিস নং : ৪০৩৮)
রাগিব ইসফাহানীর মতে, ‘আযল’করে শুক্র বিনষ্ট করা এবং তাকে তার আসল স্থানে নিক্ষেপ না করা সম্পর্কে স্পষ্ট নিষেধ। (পরিবার ও পারিবারিক জীবন, পৃঃ ৩৩৩)
মুয়াত্তা গ্রন্থ প্রণেতা ইমাম মালেক (রহ.) বলেন, ইবনে ওমর (রা.) ছিলেন তাদের অন্যতম যারা ‘আযল’পসন্দ করতেন না। (ইসলামের দৃষ্টিতে জন্মনিয়ন্ত্রণ, পৃঃ ১০১-১০২)
عزل অর্থ হল, পুরুষাঙ্গ স্ত্রী অঙ্গের ভেতর থেকে বের করে নেওয়া যেন শুক্র স্ত্রী অঙ্গের ভেতরে স্খলিত হওয়ার পরিবর্তে বাইরে স্খলিত হয়। (পরিবার ও পারিবারিক জীবন, পৃঃ ৩৩২)
আইয়ামে জাহেলিয়াতে যেসব কারণে সন্তান হত্যা করা হত, বর্তমান যামানায় জন্মনিয়ন্ত্রণও ঠিক একই কারণে গ্রহণ করা হচ্ছে। কিন্তু সোনালী যুগের ‘আযল’ এর উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন। সে যুগে তিনটি কারণে মুসলমানদের মধ্যে ‘আযল’এর প্রচলন ছিল।
(এক) দাসীর গর্ভে নিজের কোন সন্তান জন্মানো তাঁরা পসন্দ করতেন না, সামাজিক হীনতার কারণে। (দুই) দাসীর গর্ভে কারো সন্তান জন্মালে ওই সন্তানের মাকে হস্তান্তর করা যাবে না, অথচ স্থায়ীভাবে দাসীকে নিজের কাছে রেখে দিতেও তারা প্রস্ত্তত ছিল না। (তিন) দুগ্ধপায়ী শিশুর মা পুনরায় গর্ভ ধারণ করার ফলে প্রথম শিশুর স্বাস্থ্যহানীর আশঙ্কা অথবা পুনরায় সন্তান গর্ভে ধারণ করলে মায়ের স্বাস্থ্যের বিপর্যয়ের আশঙ্কা, কিংবা সন্তান প্রসবের কষ্ট সহ্য করার অনুপযুক্ত তা চিকিৎসকের পরামর্শে যথাযোগ্য বিবেচনায় এ ক্ষেত্রে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
উপরোক্ত তিনটি কারণের মধ্যে প্রথম দু’টি কারণ আধুনিক যুগে বিলুপ্ত হয়েছে। শেষের তিন নম্বর কারণ ব্যতিরেকে সম্পদ সাশ্রয়ের জন্য ও নিজের আমোদ-প্রমোদের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণ করা বৈধ নয়।
পরিশেষে বলব, জন্মনিয়ন্ত্রণ জনসংখ্যা বিস্ফোরণ সমস্যার প্রকৃত সমাধান নয়। বরং জনসংখ্যাকে দক্ষ শ্রমশক্তিতে রূপান্তর ও উৎপাদন বাড়ানো, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উপকরণাদির উন্নয়ণের মধ্যেই রয়েছে এ সমস্যার প্রকৃত সমাধান।

 সূত্র:হেল্থ বাংলা ডট কম

Labels:

পুরুষাঙ্গে ক্যান্সার কারণ

যুক্তরাজ্যের ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টার জানিয়েছে, ব্রিটেনে এখন প্রতিবছর পুরুষাঙ্গ ক্যান্সার আক্রান্তের ঘটনা ঘটছে প্রায় ৫০০। তবে প্রাথমিক অবস্থায় ধরতে পারলে এ রোগ সারিয়ে তোলার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। অর্কিড এবং ব্রিটেনের পুরুষাঙ্গ ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। তারা এর ঝুঁকি এড়াতে সুনির্দিষ্ট কিছু পরামর্শও দিয়েছে।
পুরুষাঙ্গে ক্যানসার

পুরুষাঙ্গে ক্যান্সার

সম্প্রতি পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা ২১ শতাংশ বেড়েছে। একারণে ব্রিটেনের পুরুষদের তারা নিয়মিত পরীক্ষা করানো এবং এর উপসর্গ সম্পর্কে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
প্রোস্টেট এবং অণ্ডকোষের ক্যান্সারের তুলনায় পুরুষাঙ্গের ক্যান্সারকে বিরলই বলা চলে। কিন্তু পুরুষদের ক্যান্সার নিয়ে কাজ করে এমন দাতব্য প্রতিষ্ঠান অর্কিড দাবি করেছে, এ রোগ আর বিরল নয়। এ ব্যাপারে অর্কিডের প্রধান নির্বাহী রেবেকা পোর্টা বলেন, ‘ভয়ঙ্কর এই ক্যান্সারটিকে খুব কমই গুরুত্ব দেয়া হতো। কিন্তু এই গবেষণা দেখিয়েছে যে, এই ক্যান্সারের হার বাড়ছে। অন্যান্য ক্যান্সারের মতো এটি সচরাচর হয় না। তাছাড়াও পুরুষেরা আক্রান্ত হলে এটা নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে খুব বিব্রত বোধ করে। ফলে এটা আক্রান্তকে বিচ্ছিন্ন ও বিষণ্ণ করে তুলতে পারে। এ কারণেই এ ব্যাপারে পুরুষদের সচেতন হওয়া জরুরি। এর লক্ষণ ও উপসর্গগুলো সম্পর্কে জানা উচিৎ। চিন্তিত না হয়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে আশঙ্কা অনেকখানি কেটে যায়।’
পুরুষাঙ্গে ক্যানসার
অর্কিড জানায়, প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসকরা এটিকে শনাক্ত করতে ব্যর্থ হতে পারেন অথবা যৌনরোগ বা ত্বকের সমস্যা বলে ভুল করতে পারেন। আর এই ভুলের কারণেই অনেক সময় সঠিক চিকিৎসা নিতে দেরি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
গবেষক দলের একজন আসিফ মুনির এ ব্যাপারে বলেন, ‘প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত করতে পারলে পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার সারিয়ে তোলা যায়। এর অপারেশন এখন সম্ভব। আর পুরুষাঙ্গ একদম অক্ষত রেখেই ক্যান্সার সারিয়ে তোলা সম্ভব।’
তবে এ ক্যান্সারের সঠিক কারণ এখনো শনাক্ত করা যায়নি। তারপরও সম্ভাব্য কয়েকটি কারণ নির্দেশ করেছেন গবেষকরা।

পুরুষাঙ্গে ক্যান্সারের সম্ভাব্য কয়েকটি কারণ

হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি): যৌনাঙ্গের আঁচিল/জড়ুলে এইচপিভি আক্রান্ত হলে পুরুষাঙ্গে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা ছয় গুন বাড়ে। ইংল্যান্ড এবং ওয়েলশের পুরুষদের মধ্যে ১৯৭০ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সময় এ ধরনের আঁচিল হওয়ার হার বাড়ছে। দেখা গেছে, ২০০০ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সময় এ ধরনের আঁচিল হওয়ার হার বেড়েছে ৩০ শতাংশ।
ধূমপান: ধূমপায়ী পুরুষদের এই ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
খৎনা না করা: দেখা গেছে, জন্মের পরপরই যেসব শিশুর খৎনা (ত্বকচ্ছেদ) করা হয় তাদের পুরুষাঙ্গ ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। খৎনা না করা থাকলে ভাঁজ হয়ে থাকা ত্বকে জীবাণু জমে ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
পুরুষাঙ্গে ক্যানসার

পুরুষাঙ্গে ক্যান্সারের উপসর্গ

  • পুরুষাঙ্গের গায়ে ব্যথাহীন পিণ্ড বা ঘা যা সারে না
  • পুরুষাঙ্গ দিয়ে রক্ত পড়া
  • সামনের ত্বকের ঠিক পেছনে লাল ফুসকুড়ি
  • পুরুষাঙ্গের রঙ ধূসর হয়ে যাওয়া
  • সামনের ত্বক টেনে পেছনে আনতে কষ্ট হওয়া
  • সামনে উন্মুক্ত অংশ থেকে অস্বাভাবিক গন্ধ বের হওয়া
  • ত্বকের রঙ অস্বাভাবিক হয়ে যাওয়া
  • কুঁচকিতে রক্তরসের মতো ফেনা জমা হওয় !


  • সূত্র:হেল্থ বাংলা ডট কম

Labels:

বয়ঃসন্ধিকালে কিশোরদের মনোশারীরিক নানা পরিবর্তন

বয়ঃসন্ধিকালে কিশোরদের মনোশারীরিক নানা পরিবর্তন ঘটে। বালকের শারীরিক পরিবর্তনসমূহ আরম্ভ হয় ১১ বছরের দিকে এবং তা ২০ বছর পর্যন্ত চলতে পারে। শরীর ঠিকমতো বা অন্যদের মতো বাড়ছে না, এরকম একটা চিন্তা অনেক বালকই করে। মনে রাখা দরকার যে,সময়ের ব্যাপারটা একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম। কারো বয়ঃসন্ধিকাল একটু আগে কারো বা একটু পরে শুরু হয়। আপনি আপনার নিজস্ব গতিতে বয়ঃসন্ধিকাল অতিক্রম করবেন।
 
মানসিক বা শারীরিক যে আমূল পরিবর্তন আসে তার মূল কারণ হচ্ছে পুরুষালি হরমোন যাকে আমরা বলি টেস্টোস্টেরন। এ হরমোন টেস্টিস বা শুক্রাশয়ের ভেতরে তৈরি হয়। এই শুক্রাশয়টি আবার ঝোলামতো অন্ডথলির অভ্যন্তরেই অবস্থান করে।
শুক্রাশয়
শুক্রাশয়
টেস্টোস্টেরন হরমোনের পরিমাণ যত বাড়ে স্ক্রুটাম বা অন্ডথলির বর্ণ ততো গাঢ় হয়। পেনিসশুক্রাশয় বাড়তে আরম্ভ করে। পরবর্তীতে বগলের নিচে চুল ও দাড়ি গোঁফ গজাতে শুরু করে। গলার স্বর একটু গম্ভীর ও কখনো কখনো একটু ভাঙ্গা থাকতে পারে। গলায় যে স্বরথলি বা ল্যারিংস বিদ্যমান তা বড় হতে থাকে। অনেক বালকের বুকে বোঁটার নিচে সামান্য চর্বি জমতে পারে পরবর্তীতে তা আপনা আপনিই দূর হয়ে যায়।
 
ইতিমধ্যে টেস্টিকল বা শুক্রশয়দ্বয় স্পার্ম বা শুক্রাণু উৎপন্ন করা শুরু করে। এটা পরবর্তী পুরো জীবনব্যাপী ঘটতে থাকে। শুক্রকীট বা শুক্রাণু মূলত অবস্থান করে বীর্য বা সিমেনে যা কিনা এক ধরনের সাদা তরল জাতীয় রস। অনেক সময় নিদ্রাকালীন অবস্থায় পেনিস উত্তেজিত হয়ে তা দিয়ে বীর্য বের হয়ে আসে। এটাকে বলা হয় ওয়েট ড্রিম বা ভেজা স্বপ্ন বা স্বপ্নদোষ। এটা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক শারীরবত্তীয় ব্যাপার।
 
স্বপ্নদোষ
স্বপ্নদোষ
 
দেহের শারীরিক অবস্থা যেমন উচ্চতা, রঙ বা জাতি ইত্যাদি বিষয় দিয়ে বিবেচনা করে কেউ কেউ পুরুষের পেনিসের সাইজ বা আকার বলে দেয়ার চেষ্টা করেন। এটি কিন্তু একদম ভ্রান্ত ধারণা। সমাজে প্রচলিত আরেকটা ধারণা হচ্ছে, পেনিসের আকার বড় হলেই বুঝি পার্টনারকে বা যৌনসঙ্গীকে বেশি যৌনতৃপ্তি দিতে পারবে এবং নিজেও বেশি যৌনতৃপ্তি পাবে।
 
পেনিসের উত্থান মাঝে মাঝে হঠাৎ করে অপ্রত্যাশিত সময়ে হতে পারে। এটা অস্বস্তিকর হলেও কিন্তু একেবারেই স্বাভাবিক একটা শারীরবৃত্তীয় ব্যাপার। তবে স্বাস্থ্যবান থাকার জন্য ও বীর্যস্খলন ঘটানোর জন্য যে কাম বা যৌন আচরণ করতেই হবে এমন কোনো কথা নেই।
 
মেচতা বা ফুসুকড়ি জাতীয় সমস্যাও বালকদের মাঝে কমন। সাবান দ্বারা পরিষকার পরিচ্ছন্ন থাকুন, অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার পরিহার করুন-কোনো ড্রাগ স্ট্রোর থেকে বেনজায়িল পারঅক্সাইড ক্রয় করুন অথবা কোনো ডাক্তারের পরামর্শ নিন। শরীরের দুর্গন্ধও মূলত ঘামজনিত সমস্যা থেকেই হয়। এসব ক্ষেত্রে নিয়মিত কয়েকবার গোসল এবং ডিওডরেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।
 
অধিকাংশ বালক ১২-১৫ বছরের মাঝে খুব দ্রুত বৃদ্ধি লাভ করে। ১৮ বছরের পরে সাধারণত বৃদ্ধি বন্ধ হলেও মাংসপেশি ঠিকই বিকশিত হওয়ার সুযোগ থাকে।
 
বয়ঃসন্ধিকাল বালকদের জন্য যৌন আনন্দ আর যৌন অনুভূতি ও কল্পনার বয়স। এই অনুভূতিগুলো সাময়িকভাবে দ্বিধান্বিত হতে পারে। কোনো কোনো বালকের নিকট এটা চিন্তার ব্যাপার আবার কেউ হয়ত এটাকেই খুব উপভোগ করে।
 
সূত্র:হেল্থ বাংলা ডট কম
 

Labels:

বীর্য পরীক্ষা

কোনো দম্পতি যদি এক বছর চেষ্টা করার পরও সন্তান লাভে ব্যর্থ হন তাহলে তাদের বন্ধ্যত্ব সমস্যা আছে বলে ধারণা করা হয়। কোনো দম্পতির বন্ধ্যত্ব সমস্যার কারণ চিহ্নিত করার জন্য স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই পরীক্ষা দরকার হয়। পুরুষের যে পরীক্ষাটি করা হয় তাকে সিমেন এনালাইসিস বা বীর্য পরীক্ষা বলা হয়।

বীর্য পরীক্ষা

বীর্য পরীক্ষা কিভাবে করতে হয়

তিন থেকে পাঁচ দিন মেলামেশা বন্ধ রাখা বীর্য পরীক্ষার পূর্বশর্ত। যত্নের সঙ্গে পরীক্ষার রিপোর্ট তৈরি করতে হয় বলে ভালো ও স্বীকৃত ল্যাবরেটরিতে গিয়ে পরীক্ষাটি করা উচিত।



বীর্য পরীক্ষা
বীর্য সংগ্রহের সময়

বীর্য পরীক্ষা রিপোর্টে কি কি দেখা হয়

শুক্রাণুর সংখ্যা : প্রতি মিলি বীর্যে কমপক্ষে ১৫ মিলিয়ন শুক্রাণু থাকতে হবে। এর কম হলে তাকে Azoospermia বলে। আর যদি কোনো পুরুষের বীর্যে কোনো শুক্রাণুই না থাকে তবে Azoospermia বলে।
শুক্রাণুর নড়াচড়ার গতি : কমপক্ষে শতকরা ৪০ ভাগ শুক্রাণুর নড়াচড়ার গতি থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে কমপক্ষে ৩২ ভাগ শুক্রাণুর অতি দ্রুতগতিতে নড়াচড়া প্রয়োজন। শুক্রাণুর নড়াচড়া কম হলে তাকে Asthenozoospermia বলে।
শুক্রাণুর গঠন : কমপক্ষে ৪০ ভাগ শুক্রাণু গঠনগত দিক দিয়ে ঠিক থাকতে হবে। অন্যদিকে শুক্রাণুর গঠনগত ত্রুটিকে Teratozoospermia বলে।এ ছাড়াও বীর্যের পরিমাণ, বীর্যে ইনফেকশন ইত্যাদি দেখা হয়। বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা, শুক্রাণুর নড়াচড়ার গতি বা গঠনগত ত্রুটি ইত্যাদির যে কোনোটির তারতম্য ঘটলে পুরুষের বন্ধ্যত্ব হতে পারে।
ডা. রেজাউল করিম কাজল সহযোগী অধ্যাপক,
বিএসএমএমইউ, ঢাকা।

 সূত্র:হেল্থ বাংলা ডট কম

Labels:

প্রসবজনিত ফিস্টুলা

প্রসবজনিত ফিস্টুলা একটি মারাত্মক ও যন্ত্রণাদায়ক রোগ। এর কারণে রোগী একাধারে শারীরিক, মানসিক, পারিবারিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর চিকিৎসা না করালে জ্বালাপোড়া, ক্ষত বাড়তেই থাকে। ফলে একসময় কিডনি রোগ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে কিডনি ফেইলিউরে মৃত্যুও ঘটতে পারে। অনবরত ও অনিয়ন্ত্রিতভাবে প্রস্রাব-পায়খানা পড়তে থাকা খুবই কষ্টকর, তাই বেশিরভাগ মহিলা এটি কমাতে খাওয়া-দাওয়া কমিয়ে দেয়। তাই শরীরে পানির অভাবে দেখা দেয় ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা। বাধাপ্রাপ্ত প্রসবের জন্য মূত্রনালি এবং মাসিকের রাস্তায় এক ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়ে দুটি রাস্তা এক হয়ে যায় এবং অনবরত ওই রাস্তা দিয়ে প্রস্রাব ঝরতে থাকে। এ ধরনের দুর্বিষহ শারীরিক সমস্যাকে প্রসবজনিত ফিস্টুলা বলা হয়।

প্রসবজনিত ফিস্টুলা

বাংলাদেশে প্রসবজনিত এই ফিস্টুলা রোগ সম্পর্কে সবাই না জানলেও এ রোগীর সংখ্যা ক্রমশই বেড়ে চলেছে। গ্রামাঞ্চলে অদক্ষ দাইয়ের হাতে সন্তান প্রসবের জটিলতার কারণে অসংখ্য মা আক্রান্ত হচ্ছেন যন্ত্রণাদায়ক এই ফিস্টুলা রোগে। আমাদের দেশের শতকরা ৪০ ভাগ অধিবাসী দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। এসব পরিবারের মেয়েদের ১৫ বছর বয়সের মধ্যেই বিয়ে দেয়া হয় এবং ১৮ বছর পার না হতেই এরা প্রথম সন্তান ধারণ করে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২৩ মে বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক প্রসবজনিত ফিস্টুলা দিবস টি পালিত হয়েছে। ওই দিন সরকারি ছুটি থাকার কারণে বাংলাদেশে গত সোমবার দিবসটি পালিত হয়।
মহিলা যৌনাঙ্গ
এদের বেশিরভাগই প্রসব পূর্ববর্তী, প্রসবকালীন ও প্রসব পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলতাগুলো সম্পর্কে জানে না। আবার এর শতকার ৯০ ভাগের প্রসব হয়ে থাকে নিজেদের ঘরে। এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই যে, বাংলাদেশে প্রসবজনিত ফিস্টুলা রোগীর সংখ্যা আনুমানিক ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ। ইউএনএফপিএ-এর অর্থায়নে এনজেন্ডারহেলথ, বাংলাদেশ ২০০৩ সালে প্রসবজনিত ফিস্টুলা পরিস্থিতির একটি জরিপ পরিচালনা করে। যাতে দেখা যায়, প্রতি ৩ হাজার বিবাহিত মহিলার মধ্যে ৫ জন প্রসবজনিত ফিস্টুলায় ভুগছেন। বাংলাদেশে ১৫-৩০ বছরের অশিক্ষিত, দরিদ্র, অজ্ঞ এবং অসচেতন মহিলারাই এই ফিস্টুলা রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। ২০০২ সালে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে সবচেয়ে বেশি ফিস্টুলা রোগী ভর্তি হয়, যার সংখ্যা ছিল ৬৩। সবচেয়ে কম ছিল রাজশাহী মেডিক্যাল হাসপাতালে—১৬ জন। জরিপে দেখা যায়, ঢাকা, কুমিল্লা, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা ও বরিশালে ৬টি মেডিক্যাল হাসপাতালে স্ত্রীরোগ বহির্বিভাগে আসেন ২৪০ জন প্রসবজনিত ফিস্টুলা রোগী। এর মধ্যে ১৯২ জন ভর্তি হন এবং অপারেশন করান ১২৩ জন রোগী। এনজেন্ডারহেলথ, বাংলাদেশের আরেকটি জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশে ১০০০ বিবাহিত মহিলার মধ্যে প্রসবজনিত ফিস্টুলা রোগীর সংখ্যা প্রায় ১.৬৯ জন।
প্রসব ফিস্টুলা
প্রসব ফিস্টুলা

প্রসবজনিত ফিস্টুলা রোগ : আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট

১৮ শতকে ইউরোপ-আমেরিকায় প্রথম ফিস্টুলা রোগ পাওয়া গেলেও উনিশ-বিশ শতকের মধ্যে এর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে শুধু গর্ভকালীন সতর্কতার কারণে। তারপরও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার জরিপমতে বিশ্বে আনুমানিক ২ মিলিয়নেরও বেশি মহিলা ফিস্টুলা রোগে আক্রান্ত এবং প্রতি বছর আনুমানিক ১ লাখেরও বেশি মহিলা নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এর মাত্রা বেশি।

ফিস্টুলা কি?

চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় ফিস্টুলা হচ্ছে দুইটি এপিথেলিয়াম প্রান্তের অঙ্গ বা ধমনী-শিরার মধ্যকার অস্বাভাবিক সংযোগপথ, যা সাধারণত যুক্ত থাকে না—এটি মূলত রোগের অবস্থা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আঘাতজনিত কিংবা অপারেশনের কারণে ফিস্টুলা হয়ে থাকে। গ্যাস্ট্রোইনটেসটিনাল, অ্যানাল, অবসটেট্রিক ইত্যাদি ধরনের ফিস্টুলা হয়ে থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হচ্ছে অবসটেট্রিক বা প্রসবজনিত ফিস্টুলা।
প্রসবজনিত ফিস্টুলার চিকিৎসা মানেই সার্জারি বা অপারেশন। এটি একটি রিকনস্ট্রাকটিভ সার্জারি। জটিল সার্জারির ক্ষেত্রে এর চিকিৎসা সাফল্য শতকরা ৬০ ভাগ এবং সাধারণ সার্জারিতে তা শতকরা ৯০ ভাগ। এই অপারেশন মূলত তিনটি ধাপে করা হয়।
সাধারণত ডেলিভারির ৭-১৪ দিনের মধ্যে ফিস্টুলা দেখা যায়। আমাদের দেশে ফিস্টুলাজনিত রোগীর সংখ্যা কমপক্ষে হলেও ৭০ হাজার। ফিস্টুলার জন্য একজন মেয়েকে অনেক কষ্ট সইতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে পরিবারের সবাই তাকে ত্যাগ করে।
প্রথমত, অপারেশনের আগে ফিস্টুলা, যোনিনালী, মলদ্বার ও প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন, ক্ষত, জ্বালাপোড়া সারাতে এ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দেয়া হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে ফিস্টুলা সারাতে ইন্ট্রাভেনাস এ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয়।
দ্বিতীয়ত, ফিস্টুলা ইনফেকশন ঠিক হয়ে গেলে অপারেশন করতে হবে। এতে প্রথমে ফিস্টুলাটুকু পর্যবেক্ষণ করে অপারেশনের মাধ্যমে বাদ দিয়ে পরে সেই স্থান জোড়া লাগিয়ে ঠিক করে দেয়া হয়।
প্রস্রাবের রাস্তা
প্রসবজনিত ফিস্টুলা
তৃতীয়ত, অপারেশনের পর কিছু মহিলার প্রস্রাব-পায়খানার জন্য ক্যাথেটার ব্যবহার করতে হয়। অপারেশনের কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত চিকিত্সকদের নির্ধারিত খাদ্যাভাস পদ্ধতি মেনে চলতে হবে। শক্ত ও আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার ব্যাপারে বিধিনিষেধ থাকবে। নিয়মিত যৌনাঙ্গ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, যাতে কোন জ্বালাপোড়া দেখা না দেয়।

প্রসবজনিত ফিস্টুলা যেভাবে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব

১. দেরিতে বাচ্চা নেওয়া। কমপক্ষে ২০ বছর বয়সে বাচ্চা নেওয়া।
২. যাদের উচ্চতা ৪ ফুট ১০ ইঞ্চি বা তার নিচে এবং যাদের প্রসবের রাস্তা চাপা থাকে তাদের অবশ্যই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ডেলিভারি করতে হবে।
একজন রোগী কাছাকাছি যে কোনো মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ রোগের চিকিৎসা পেতে পারেন ।মনে রাখবেন, ফিস্টুলা একটা মারাত্মক সমস্যা এবং প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।নিজে সচেতন হোন এবং অন্যকেও সচেতন করুন।

প্রসবজনিত ফিস্টুলা চিকিৎসা না করানোর পরিণতি

মাতৃমৃত্যু ও মাতৃ অসুস্থতা—এ দুইটি বিষয়েই সরকারকে অধিকতর নজর দিতে হবে। পাশাপাশি বাড়াতে হবে অর্থ বরাদ্দ ও জনমানুষের মধ্যে বৃদ্ধি করতে হবে ব্যাপক সচেতনতা। কারণ জনসচেতনা বৃদ্ধি শুধু এক-দুইটি বিজ্ঞাপন দিলেই শেষ হয়ে যায় না, এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। সরকারের উপলব্ধি আনতে হবে মাতৃমৃত্যু ও প্রসব পরবর্তী মহিলাদের দীর্ঘমেয়াদি ভয়াবহ স্বাস্থ্য সমস্যাকেও। আর তাই এ খাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থের যোগানও দিতে হবে। কেউ হয়তো বলতে পারেন, প্রসবজনিত রক্তক্ষরণ শুরু হলে এর চিকিৎসা করালেই তো হয়। হ্যাঁ, চিকিৎসা করানো যেতে পারে। তবে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে মধ্যরাতে যেখানে কোন দক্ষ সেবক নেই, সেখানে কিভাবে চিকিৎসা হবে? চিকিৎসার জন্য চাই ব্লাড ট্রান্সফিউশন, স্যালাইন, হাসপাতালে এনে নিবিড় পর্যবেক্ষণ, এ্যান্টিবায়োটিক শুরু করা। এ বিষয়গুলো সম্পর্কে মানুষ সচেতন হলে এর সমাধান সম্ভব। এ বিষয়ে শুধু চিকিত্সকদের প্রশিক্ষণ দিলেই এ সমস্যার সমাধান হবে না। কারণ প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ মা সন্তান প্রসব করছেন। কাজেই কিউরেটিভ দিক বিবেচনা করলে এটা প্রায় অসম্ভব। তাই ব্যাপকভিত্তিক সচেতনতাই পারে এ ধরনের সমস্যা থেকে আমাদের রক্ষা করতে।
   

সূত্র:হেল্থ বাংলা ডট কম

Labels: